শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের ৩৮৭তম সভা অনুষ্ঠিত অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে দ্রুত জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে -আমান শ্রীমঙ্গলে নারী চা শ্রমিক-কর্মজীবী নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য নিয়ে সংলাপ কালীগঞ্জে সরকারি মাহতাব উদ্দিন কলেজে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম : আতঙ্কে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বগুড়ার শেরপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত-নিহতদের স্মরণসভা দেশবিরোধী চক্রান্তকারীদের দাঁত ভাঙা জবাব দেওয়া হবে-রেজাউল করিম বাদশা দুর্গাপুরে আইনজীবীদের মানববন্ধন কয়রায় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণ সভা ও সাংস্কৃতিক ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মুন্সীগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধের প্রতিবাদে জলঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ দুর্গাপুরে শেষ হলো দুইদিন ব্যাপি কৃষিবিষয়ক প্রশিক্ষণ

প্রায় ১১ বছর পর চট্টগ্রামে বিএনপির গণসমাবেশ আজ

শাহ্জাহান সাজু:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর, ২০২২

# চট্টগ্রামের সমাবেশ বাংলাদেশের আন্দোলনের ইতিহাসে মাইলফলক হবে থাকবে- আমীর খসরু
# পলোগ্রাউন্ডের সমাবেশে ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি চট্টগ্রাম বিএনপির
# সমাবেশকে ঘিরে কোনো ধরনের ফাঁদে না পড়ার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান

বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ কাল বুধবার বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে আজ ১২ অক্টোবর শুরু হচ্ছে। দীর্ঘ ১০ বছর ৯ মাস পর নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে এ গণসমাবেশ করবে বিএনপি। জ্বালানি তেল, চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, নেতাকর্মীদের হত্যা ও মামলা দায়ের প্রতিবাদে এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এ গণসমাবেশ হচ্ছে।
চট্টগ্রামের পর পর্যায়ক্রমে আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে গণসমাবেশ শেষে ১০ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকায় মহাসমাবেশ করবে বিএনপি। ইতোমধ্যে শিডিউলও ঘোষণা করা হয়েছে। সমাবেশগুলোর উদ্দেশ্য সম্পর্কে ইতোমধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা জনগণকে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে চাই। প্রচণ্ড গণ-আন্দোলন সৃষ্টি করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চাই।’
চট্টগ্রামের সমাবেশে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের উপস্থিতির মাধ্যমে ব্যাপক শোডাউন করতে চায় বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) চট্টগ্রামে বিএনপি অফিসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তাদের এ সমাবেশ হবে চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় মাঠে পলোগ্রাউন্ডে। এ সমাবেশ বাংলাদেশের আন্দোলনের ইতিহাসে মাইলফলক হবে থাকবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আমীর খসরু বলেন, ‘এই সমাবেশ ঘিরে যে আনন্দ উচ্ছাস জনগণের মধ্যে আমরা দেখতে পাচ্ছি তা অভাবনীয়, অকল্পনীয়। এটাই প্রমাণ করে আজকে দেশ কোথায় দাঁড়িয়ে আছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য মানুষ সংগ্রামে এগিয়ে আসছে। সমাবেশই এর প্রমাণ হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এগুচ্ছি শান্তিপূর্ণভাবে। আনন্দঘন উৎসবমুখরভাবে আগামীকালের জনসভা লক্ষ লক্ষ মানুষের অংশগ্রহণে সমাপ্ত হবে ইনশাল্লাহ।’
এ কারণে গণসমাবেশ সফল করা নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বিএনপির চট্টগ্রামের তিনটি সাংগঠনিক জেলা। অর্থাৎ মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ চট্টগ্রাম। তিন সাংগঠনিক জেলার দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, পলোগ্রাউন্ড মাঠে লক্ষাধিক মানুষের জায়গা হয়। আশেপাশের জেলা থেকে এত সংখ্যক লোক আসা সম্ভব না। আবার মাঠ পূর্ণ না হলে প্রশ্ন উঠবে বিএনপির জনপ্রিয়তা নিয়ে। এ অবস্থায় চট্টগ্রাম মহানগর এবং আশেপাশের জেলা থেকেই লোকসমাগম বাড়াতে হবে।
অবশ্য উপস্থিতি বৃদ্ধি এবং সমাবেশ সফল করতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিটি থানায় প্রস্তুতি সভা করে যাচ্ছে চট্টগ্রাম মহানগর এবং উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি। গতকাল সোমবারও এলাকায় এলাকায় লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।
সর্বশেষ গতকাল সোমবার সমাবেশ সফল করতে বিভিন্ন নির্দেশনা দিতে পলোগ্রাউন্ড মাঠ পরিদর্শনে যান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এ সময় তিনি বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃবৃন্দদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন।
আমীর খসরুর সঙ্গে এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-গ্রাম বিষয়ক সম্পাদক মো. বেলাল হোসেন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ।
আমীর খসরু সংবাদ সম্মেলনে সমাবেশকে ঘিরে কোনো ধরনের ফাঁদে না পড়ার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি ক্ষমতাসীন দলের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘তাদের মধ্যে একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে যে, বিএনপির সভা-সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করা। আমরা কোনো ধরনের ফাঁদে পা দেব না। অনেকে চেষ্টা করবে এদিক-সেদিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবার জন্য,আমাদেরকে সেদিকে টেনে নেওয়ার জন্য কিংবা আমাদের শক্তি ক্ষয় করবার জন্য। তারা এদিক-সেদিক অনেক কিছু চেষ্টা করবে, অনেককিছু বলবে। রিউমার আপনারা শুনতে পাবেন। কিছুই কর্ণপাত করবেন না।’
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘পূর্ণভাবে ধৈর্য ধরতে হবে। ধৈর্যের অভাব থাকবে না এখানে। ধৈর্য ধরে আমাদের কাজ করব। কে কি করছে, কে কি বলছে, উসকানী দিচ্ছে- এগুলো নিয়ে কেউ মাথা ঘামাবেন না। ওরা চাচ্ছে আমাদেরকে সেদিকে নেওয়ার জন্য। আমাদের সেদিকে ডাইভার্ট হওয়ার প্রয়োজন নাই। জনগণের জয় যেখানে নামে কোনো শক্তিই সেখানে বাধা থাকতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘একটা কথা আমরা বলতে পারি, বিএনপির নেতাকর্মীরা জ্বলে-পুড়ে খাঁটি সোনায় পরিণত হয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা এটা বার বার প্রমাণও করেছে। কত ধরনের বাধাবিপত্তি আছে, কত ধরনের চাপ আছে। কিন্তু সবকিছু উপেক্ষা করে আগামীকালের সভাকে সফল করার জন্য এগিয়ে যাচ্ছে।’
এদিকে প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে গণসমাবেশ উপলক্ষে গঠিত কমিটির দলনেতা ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘একসময় বিরোধী দলের আন্দোলনের কৌশল ছিল হরতাল-অবরোধ এবং জ্বালাও-পোড়াও। এখন রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন এসেছে। নৈরাজ্য না করেও জনশক্তিও যে ফ্যাসিবাদ সরকারের ভীত কাঁপিয়ে দিতে পারে তার নজির স্থাপন করবে চট্টগ্রামের বিভাগীয় গণসমাবেশ। গণসমাবেশে যারা আসবেন তাদের মধ্যে কমিটমেন্ট থাকবে সরকারকে বিদায় দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিভাগের ১০ সাংগঠনিক জেলার মধ্যে চট্টগ্রামসহ আট জেলায় অনুষ্ঠিত প্রস্ততি সভায় আমি উপস্থিত ছিলাম। সবখানেই গণসমাবেশকে ঘিরে উৎসাহ লক্ষ্য করেছি। তাদের চোখে-মুখের অভিব্যক্তিটা এমন, তারা গণসমাবেশের জন্য অপেক্ষা করছে। তাদের সাহসিকতা, প্রত্যয় ও কমিটমেন্ট দেখে বলতে পারি জনস্রোতে পরিণত হবে সমাবেশ ‘
গণসমাবেশের সমন্বয়কারী ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘জনসমুদ্রে পরিণত হবে গণসমাবেশস্থল। বিভাগের প্রতিটি জেলা থেকে নেতাকর্মীর পাশাপাশি সাধারণ লোকজন অংশ নিবে।’
নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘পলোগ্রাউন্ড মাঠ এবং আশেপাশে পাঁচ-ছয় লাখ লোকের জায়গা হবে। পুরো মাঠ পূর্ণ করায় আমাদের টার্গেট। নগরের ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডের প্রতিটি থেকে ২০ হাজার করে লোক অংশ নিবে। বিভাগীয় জেলাগুলো থেকেও কয়েকশ গাড়িতে করে নেতাকর্মীরা আসবেন। সাধারণ মানুষও অংশ নিবেন।’
প্রসঙ্গত, পলোগ্রাউন্ড মাঠে সর্বশেষ ২০১২ সালের ৯ জানুয়ারি বিএনপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এতে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া উপস্থিত ছিলেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে এ মাঠে সমাবেশ করতে চাইলেও প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়ায় করতে পারেনি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমীগর গত ২৮ সেপ্টেম্বর দলের বিভাগীয় এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এ অনুযায়ী চট্টগ্রামের পর ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহ, ২২ অক্টোবর খুলনা, ২৯ অক্টোবর রংপুরে, ৫ নভেম্বর বরিশালে, ১২ নভেম্বর ফরিদপুর, ১৯ নভেম্বর সিলেট, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লা, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে। তারপর ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com