দিনাজপুরের বিরামপুরে প্রযুক্তি ব্যবহার করে এক ঝাংলায় তিনটি ফসল ফলাচ্ছেন কৃষক হামিদুল ইসলাম। একই খরচে উৎপাদন হচ্ছে তিন রকমের রবিশস্য। ২০১৯ সালে কৃষি মন্ত্রণালয়ে দেশের প্রথম জাতীয় পুরষ্কার পান এই কৃষক হামিদুল ইসলাম। বিরামপুর উপজেলার হাবিবপুর মাঠি গিয়ে দেখা যায়, এক বিঘা জমির উপর জাতীয় পুরষ্কার প্রাপ্ত কৃষক হামিদুল ইসলামের একটি ঝাংলা। বাঁশের খুঁটি তার আর কটসুতা দিয়ে তৈরি এই ঝাংলা। ঝাংলায় করলা, শষা আর মিষ্টি কুমরার গাছ। দেড় মাস হয়েছে এই তিন জাতের বীজ লাগানো। বর্তমান তিন ফসলে তার ঝাংলা ভরে গেছে। ঝাংলাটি থাকবে মোট ছয় মাস। পর্যায়ক্রমে ফসল তুলবেন তিনি। শষা বাজারজাত শুরু করেছেন, পাইকারি দিচ্ছেন ২২ টাকা কেজি দরে।১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে করলা তুলবেন তিনি। সর্বশেষে মিষ্টি কুমরা বাজারজাত করবেন। ঝাংলাটি তৈরি করতে প্রায় ৬০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে এই কৃষকের। তবে ঝাংলায় ভাল ফলন দেখে তিনি আশা করছেন ছয় মাসে তিনি প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকার ফসল বিক্রি করবেন। ৬ টলি গোবর, ২০ কেজি পটাস, পর্যায়ক্রমে ১০৫ কেজি ফসফেট, ২৫ কেজি ইউরিয়া আর ১০ কেজি জৈব সার দিয়ে ঝাংলার জমি তৈরি করেন তিনি। তৈরি জমিতে করলা বীজ ১ কেজি, মিষ্টি কুমরা বীজ ১০ গ্রাম আর শষা বীজ ১৫০ গ্রাম রোপন করেছেন। জাতীয় পুরষ্কার প্রাপ্ত হামিদুল ইসলাম বলেন, ২০১৯ সালে বাংলাদেশের মধ্যে রবিশস্য চাষাবাদে আমি প্রথম হয়েছিলাম। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে আমাকে জাতীয় পুরষ্কার দেওয়া হয়েছিলো। তারি ধারাবাহিক ভাবে সারাবছর রবিশস্য চাষাবাদ করে আসছি। কৃষি দপ্তরের পরামর্শে ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমি আমার এই ঝাংলায় একই খরচে তিনটি ফসল ফলাচ্ছি। আশা করছি এই ঝাংলায় আমি অনেক লাভবান হবো। বিরামপুর উপজেলা কৃষি অফিসার নিক্সোন চন্দ্র পাল বলেন, উপজেলার হাবিবপুর গ্রামের কৃষক হামিদুল ইসলাম আমাদের পরামর্শে এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি তিন ফসলী ঝাংলা তৈরি করেছেন। আমরা প্রতিনিয়ত তার ঝাংলা পরিদর্শন করছি। তাকে কৃষি অধিদপ্তরের সকল সুবিধা প্রদান করে আসছি। রবিশস্য ভাল চাষাবাদের জন্য ২০১৯ সালে দেশের শ্রেষ্ঠ কৃষক নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। তাকে কৃষি মন্ত্রণালয় জাতীয় পুরষ্কার দিয়েছিলো। তিনি আরও বলেন, উপজেলায় এবার ১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে রবিশস্য চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।