শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৭:৫০ অপরাহ্ন

রাসূল সা: আদর্শ নেতা

আসাদুজ্জামান আসাদ:
  • আপডেট সময় বুধবার, ১২ অক্টোবর, ২০২২

বিশ‍্ব নবী রাসূল সা: একজন আদর্শ নেতা। মহান আল্লাহ তায়ালা মানবজাতিকে মুক্তি এবং সঠিক পথে পরিচালনার জন্য তাঁর আগমন ঘটে। এরশাদ হচ্ছে, ‘হে নবী! আমি আপনাকে পাঠিয়েছি সাক্ষী সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনরূপে। আর আল্লাহ অনুমতি ক্রমে তার দিকে আহ্বানকারী ও আলোক দীপ্ত প্রদীপ হিসাবে’ (আহজাব : ৪৫-৪৬)। মহান আল্লাহ তায়ালা নশ্বর পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও পরকালে মুক্তির জন্য যে মহামানবকে পাঠালেন তিনি হলেন হজরত মোহাম্মদ সা:। তিনি সারা জীবন মানুষকে সত্য দ্বীনের পথে ডাকলেন। সত্য দ্বীন প্রচার করলেন। হিংসাবিদ্বেষ, চুরি-ডাকাতি, জিনা-ব্যভিচার দূর করেন। দল, বংশ গোত্র, সব শ্রেণী-বৈষম্য অতিক্রম করে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবার মাঝে সুন্দর এক ভ্রাতৃত্ব বোধ মনোভাব জাগ্রত করেন। তার বাস্তব নমুনা হলো- আকাবার শপথ, মদিনার সনদ এবং হুদায়বিয়ার সন্ধি। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূল সা:-এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ, যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রতাশা করে এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করে’ (আহজাব : ২১)।
বিশ‍্ব নবীর জীবন চরিত্র অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয় তার মহৎ কর্ম, আদর্শ ও কৃতিত্ব। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও ভালোবাসা পেতে হলে বিশ‍্বনবী রাসূল সা:-এর আনুগত্য ও অনুসরণ করতে হবে। এরশাদ হচ্ছে, ‘আপনি বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস আমাকে অনুসরণ করো। আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং ক্ষমা করে দিবেন’ (সূরা আল ইমরান-৩১)।
আমরা রাসূল সা:কে অনুসরণ কিভাবে করব? অনুসরণ করার আগে রাসূল সা:কে চিনতে হবে। জানতে হবে। চিনা এবং জানার উত্তম মাধ্যম হচ্ছে তার জীবনীগ্রন্থ ও সুন্নাহ ভালোভাবে অনুসরণ করা। শুধু নিজে জানলেই হবে না। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে তাঁর আদর্শের সুস্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। বিশ‍্ব নবী সা: কোন অবস্থায় কোন পরিবেশে, কখন কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। কখন ধৈর্য ধারণ করেছেন। কোন পরিবেশে মহা নবী সা: শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। একটু মনোযোগী হলেই অতি সহজে তা জানা সম্ভব। শুধু একটু পরিশ্রমের প্রয়োজন। ইসলাম ধর্ম শ্রেষ্ঠ ধর্ম। শান্তির ধর্ম। এ ধর্মে সবার সমান অধিকার। কোনো প্রকার বৈষম্য নেই। ইসলামের বিধিবিধান বাস্তবধর্মী। বিশ‍্ব নবী সা:-এর প্রয়োগিক চিত্র সবার জন্য সমান। তার জীবনী মোমিনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তাঁর আদর্শ ও জীবনী সম্পর্কে জানলেই আমাদের মাঝে সুস্পষ্ট ধারণা এসে যাবে। আমাদের জীবনে তাঁর আদর্শ হবে চলার সাথী বা পাথেয়।
বিশ‍্বনবী হলেন সবার জন্য শ্রেষ্ঠ আদর্শ। সে হিসাবে রাসূল সা:কে ভালোবাসা মোমিনের জন্য অন্যতম আদর্শ। বিশ^নবী সা:কে ছাড়া কোনো বান্দা মোমেন হতে পারবে না। বিশ‍্বনবী বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে কেউ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার কাছে তার পিতা, তার সন্তানাদি এবং সব মানুষ থেকে বেশি প্রিয় না হবো’ (বুখারি)। সারা জীবনে যত বই, উপন্যাস, কবিতা, জীবনীগ্রন্থ পাঠ করেছি। তা কিন্তু ক্ষণিক আনন্দই শেষ হয়ে যায়। কিন্তু বিশ‍্বনবী জীবনী যতই পাঠ করি ততই মধু মাখা রসে হৃদয় ভরে ওঠে। বারবার পাঠে মন বসে। সারা বিশ‍্ব মানবতার জন্য রাসূল সা: এক মহান আদর্শ নেতা। তিনি ছিলেন অতুলনীয়। তাঁর কোনো তুলনা নেই। তার তুলনা তিনি নিজেই। সাহাবিগণ মা আয়েশা রা:কে প্রশ্ন করেন, রাসূল সা:-এর চরিত্র কেমন ছিল? মা আয়েশা রা: বলেন, তোমরা কি কুরআন পড়নি? বিশ‍্ব নবীর চরিত্র পবিত্র আল কুরআন।
বিশ‍্বনবী আমাদের মহাআদর্শ। আল্লাহ বলেন, ‘আমি তোমাকে সারা বিশ‍্ববাসীর জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছি।’ তিনি ছিলেন, আদর্শ পিতা, আদর্শ নানা, আদর্শ স্বামী, আদর্শ সমর নায়ক, আদর্শ অর্থনীতিবিদ, আদর্শ সমাজপতি, আদর্শ রাষ্ট্রনায়ক। মোট কথা পৃথিবীর সব ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন মহা আদর্শবান মহামানব। আমরা যদি বিশ‍্বনবী সা:-এর আদর্শকে ধারণ করে চলতে পারি, তাহলে ইহকাল ও পরকালে সফলতা খুব সহজে আসবে। নিজের জীবনকে নবী সা:-এর আদর্শে গড়ে তোলার চেষ্টা করি। তাকে বেশি করে অনুসরণ করি। তবেই আমরা নবী সা: এর আদর্শ নিয়ে ব্যক্তি সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে আদর্শবান হতে পারব। লেখক : সহকারী অধ্যাপক (আরবি), প গড় নুরুন আলা নূর কামিল মাদ্রাসা




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com