করোনাভাইরাসের আতঙ্ক মানুষের মধ্যে। প্রতিদিনই বাড়ছে রোগী এবং লাশের মিছিল। এ করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে পোল্ট্রি, মাছ এবং ডিমের ওপর। এখন মাথায় হাত পড়েছে হ্যাচারী মালিক এবং প্রান্তিক চাষিদের। এভাবে চলতে থাকলে ৩০/৩৫ দিন পর থেকে পোল্ট্রি, মাছ এবং ডিমের সঙ্কট দেখা দিতে পারে সেই সাথে ঘাটতি পড়বে আমিষের। ২০১৯ এর ডিসেম্বরে চীনে করোনা নোভেল ভাইরাস দেখা দেয়। সেই থেকে কোনো মাধ্যমে এই ভাইরাস মানব দেহে প্রবেশ করতে পারে। এ বিষয়ে মানুষের মধ্যে বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলে বাকচা। গুজব রটনা। এমন অবস্থায় দেশে সরকার বিশেষ অবস্থা ঘোষণা করে। সকলকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য বলেছে। সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে। ফলে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে কিছু গুজবের কারণে অনেকেই মনে করছে, পোল্ট্রি এবং ডিমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন এ দু’টি কারণে ধস নেমেছে পোল্ট্রি এবং মাছের বাজারে। খুলনার এগ্রো ফার্মস প্রোজেক্ট এর স্বত্বাধিকারী মো. মামুনুর রহমান জানান, পোল্ট্রি মুরগি নিয়ে কিছু গুজব ওঠায় মানুষ কম খাচ্ছে। খামারীরা যে মুরগি আগে পাইকারী ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রয় করতেন। এখন সেই মুরগি বিক্রয় করতে হচ্ছে মাত্র ৪০/৪৫ টাকা কেজি দরে। তাও পাইকাররা কিনছে না। যানবাহন চলাচল করছে না। মুরগির খাবার কিনতে পারছে না। কোথাও মুরগি নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে আগামী মাসখানিক পর থেকে খুলনায় মুরগি পাওয়া যাবে না। কিছু পাওয়া গেলেও তার দাম থাকবে আকাশচুম্বি। খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবু ছাইদ জানান, কোনো ঘের মালিক মাছ বিক্রয় করতে পারছে না। মাছের খাবার কিনতে পারছে না। ক্রেতা পাচ্ছে না খাদ্য, বিক্রেতারা খরিদ্দার পাচ্ছে না। ঘেরে রেণু সরবরাহ হচ্ছে না। ঘের মালিকদের কোনো সমস্যা হলে আমরা কোনো পরামর্শ দিতে পারছি না।
ফলে একটি বড় ধরনের সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছে। এর প্রভাব এখন কম মনে হলেও কিছুদিন পর এ সমস্যা প্রকট হবে। সঙ্কট হবে মাছের। খুলনা জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা এসএম আউয়াল হক জানান, পোল্ট্রির দাম কমে গেছে। ডিমের দামও। খামারীরা প্রকৃত দাম পাচ্ছে না। সরবরাহ করতে পারছে না। তবে সরকার মুরগি বা প্রাণী এবং পচনশীল পণ্য সরবরাহের অনুমতি দিয়েছে। এধরনের (মুরগি সরবরাহ) কারও কোনো সমস্যা দেখা দিলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারবো। খুলনা জেলা পোল্ট্রি ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব এসএম সোহরাব হোসেন জানান, এমন অবস্থায় চাষিদের মধ্যে সরকারের প্রণোদনা প্রয়োজন। যাতে চাষি এবং খামারীরা এ সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পারে।