বাফুফের বার্ষিক সাধারণ সভা
এক সময় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কাউন্সিলরদের অসন্তুষ্টি ছিল সাধারণ সভা নিয়ে। বাফুফের বিপক্ষে তাদের ক্ষোভ ছিল নিয়মিত সাধারণ সভা না হওয়ায়। সেই আক্ষেপ এখন আর নেই। বাফুফে নিয়মিতই সাধারণ সভা করছে।
২০২০ সালের ৩ অক্টোবর বর্তমান কমিটি নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম বার্ষিক সাধারণ সভা করেছিল গত বছর ৩০ অক্টোবর। এ বছরও তারা সাধারণ সভা করলো শনিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে।
দুই একজন কাউন্সিলর বাফুফের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্নবোধক বক্তব্য দিলেও বেশিরভাগই প্রকাশ করেছে সন্তুষ্টি। সবচেয়ে বড় যে বিষয় তাহলো আর্থিক প্রতিবেদন। বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন সাধারণ সভার পর সংক্ষিপ্ত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘ এ নিয়ে কোন কথা হয়নি। এক মিনিটেই সবাই আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করেছেন।’ ব্রিফিংয়ে কাজী মো. সালাউদ্দিন বেশি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন জেলা লিগ নিয়ে। যে বিষয়টি সব সময়ই আলোচিত থাকে। বাফুফে সভাপতি জেলায় নিয়মি লিগ না হওয়াকে তার পরিষদের সবচয়ে বড় সমস্যা
হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কাজী সালাউদ্দিন বলেন,‘সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আমার জেলা নিয়ে। একটা জিনিস আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমরা যে লিগ করি, আমাকে ফিফা কিন্তু বাধ্য করে না। তবুও আমি লিগ আয়োজন করি। কারণ, এটা আমার কাজ। জেলাগুলোয় যে সমস্যা হয়েছে, ওনারা লিগ করেন না। আমাদের দিকে চেয়ে থাকেন, আমরা কিভাবে সাহায্য করবো। এই সমস্যাটা আমি এখন সমাধান করতে পারছি না। কারণ, আপনার কাজ আমি করে দিতে পারবো না, আমার কাজ আপনি করে দিতে পারবেন না। আপনারা কাজ করুন, আমরা সাপোর্ট দেবো। তারা শুধু টাকা চায়। টাকা থাকলে তো দেবো, না থাকলে কোত্থেকে দেবো?’
তবে জেলাগুলোর প্রতিনিধিদের লিগ নিয়ে আছে ভিন্ন মতামত। ময়মনসিংহের ডিএফএর সভাপতি দেলোয়ার হোসেন মুকুল বললেন, ‘দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ বডি হিসেবে একটা অনুদান সারা বছর বাফুফের দেওয়ার কথা। সেটা দিলে আমরা খুশি। তবে, একজন সভাপতি হিসেবে আমার দায়িত্ব স্থানীয় লিগ আয়োজন করা। এটি আমি করেও থাকি। নিজস্ব অর্থায়নে বা কিছু স্পনসর নিয়ে। প্রথম বিভাগে ১২টা ক্লাব, দ্বিতীয় বিভাগে ১৯টি ক্লাব। প্রতি বছর লিগ হয়। ৮ লাখ টাকা বাজেট প্রথম বিভাগে। দ্বিতীয় বিভাগে কম হয়।’
রাঙামাটি জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ভুট্টো বলেছেন, ‘রাঙামাটি জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আমরা বঙ্গবন্ধু ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। কিন্তু অর্থের অভাবে রাজশাহী যেতে পারিনি। এটা ২০২১ সালে। আমাদের কোনো মাঠ নেই। টাকা নেই। কোনো অ্যাকাউন্ট নেই। আজকে এসব বলেছি। কোনো রেসপন্স নাই।’
বরিশাল বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আসাদুজ্জামান খসরু বলেছেন, ‘খেলাধুলা চালানোর ক্ষেত্রে নিজেদেরও কিছু ব্যর্থতা আছে। বাফুফেরও কিছু ব্যর্থতা আছে। সদিচ্ছা ও সহযোগিতার অভাব আছে। খেলাধুলা চালানো ব্যয়বহুল। আগের মতো স্পনসর পাওয়া যাচ্ছে না। ১২ জন ফুটবলার ঢাকা থেকে আনতে গেলে অনেক টাকা লাগে। এ বিষয়ে কংগ্রেসে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। জেলাগুলো টাকা খাওয়ার জন্য চায় না, খেলা চালানোর জন্য চায়। সর্বশেষ লিগ আমরা চালিয়েছি ২০১৮ সালে।’
রাজশাহী জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের কে এম মোসাদ্দেকুল কুদ্দুস সিদ্দিকী বলেন, ‘বাংলাদেশের ফুটবলকে বাঁচাতে হলে ৬৪ জেলা ৮ বিভাগকে মাঠ নিশ্চিত করতে হবে। ৭২টি মাঠ আছে। সব এনএসসির অধীনে। ৬ মাসের জন্য ফুটবলের জন্য মাঠ নিশ্চিত করতে হবে। মাঠ যদি না থাকে বাফুফে ভবনে তো আর ফুটবল হবে না! যদিও আমরা নিয়মিত লিগ করছি। এ বছরও প্রথম বিভাগ করেছি। অন্য লিগও হচ্ছে আমাদের।