মাথাব্যথা অনুভব করলে অনেকেই অ্যাসপিরিন/প্যারাসিটামল সেবন করেন। কিন্তু ওষুধের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়াকে সেরা সমাধান নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে ব্লিডিং ডিসঅর্ডার, অ্যাজমা, আলসার, লিভার অথবা কিডনি রোগী হয়ে থাকলে।
তাই শারীরিক ক্ষতি এড়াতে পেইনকিলারের পরিবর্তে ঘরোয়া চিকিৎসা চেষ্টা করে দেখতে পারেন। এতে কাজ না হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। এ প্রতিবেদনে মাথাব্যথার কিছু কার্যকরী ঘরোয়া উপায় উল্লেখ করা হলো।
* ম্যাসাজ করুন: বৃদ্ধাঙ্গুল ও তর্জনির মাঝে যে মাংসল অংশ রয়েছে তাতে বৃত্তাকারে ভালোভাবে কয়েক মিনিট ম্যাসাজ করুন। এবার অন্য হাতেও ম্যাসাজ করুন। এই মাংসল অংশকে এলআইজি৪ ট্রিগার পয়েন্ট বলে। এর সঙ্গে মাথায় ব্যথার উৎপত্তিস্থলের সংযোগ রয়েছে। এলআইজি৪ ট্রিগার পয়েন্ট ম্যাসাজ করলে মাথাব্যথা কমে আসে।
* গরম পানিতে পা ডুবান: অবিশ্বাস্য লাগলেও এটা সত্য যে, গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখলে মাথাব্যথার উপশম হয়। কিভাবে? গরম পানিতে পা ডুবিয়ে রাখলে পায়ের দিকে রক্ত ছুটে আসে, যার ফলে মাথার রক্তনালীতে চাপ কমে। অসহনীয় মাথাব্যথার ক্ষেত্রে গরম পানিতে অল্প পরিমাণে সরিষা গুঁড়া মেশাতে পারেন।
* গরম সেঁক দিন: টেনশন হেডেকের ক্ষেত্রে কপাল বা ঘাড়ের ওপর গরম সেঁক দিতে পারেন।
* ঠান্ডা সেঁক দিন: গরম সেঁকের মতো ঠান্ডা সেঁকেও মাথাব্যথা কমে আসে। গরম সেঁকের পর অথবা এর পরিবর্তে কপালে ঠান্ডা সেঁক দিতে পারেন। এতেও মাথাব্যথা না কমলে এবার ঘাড়ে ঠান্ডা সেঁক দিয়ে দেখতে পারেন।
* বরফ পানিতে হাত ভেজান: কপাল বা ঘাড়ে ঠান্ডা সেঁকের বিকল্প হিসেবে বরফ পানিতে যতক্ষণ পারেন হাত ডুবিয়ে রাখুন। তারপর হাতকে মুষ্টিবদ্ধ করুন ও খুলুন- কিছু মিনিট এমনটা করতে থাকুন।
* কফি পান করুন: এককাপ কড়া কফি পান করতে পারেন। কফির ক্যাফেইন মাথাব্যথা উপশম করতে সহায়তা করে। একারণে কিছু শক্তিশালী পেইনকিলারে ক্যাফেইন সমন্বিত করা হয়। যারা কফি পানে আসক্ত তাদের জন্য এ পরামর্শ নয়।
* কপালে কাপড় বাঁধুন: কপালসহ মাথার চারপাশে ব্যান্ডানা, স্কার্ফ অথবা নেকটাই বেঁধে নিন। তারপর এমন একটা পয়েন্টে টাইট দিন যেন মাথার চারপাশে চাপ অনুভব করেন। এতে স্কাল্পে রক্তপ্রবাহ কমবে, যার ফলে রক্তনালীর ফোলা জনিত মাথাব্যথা প্রশমিত হবে।
* এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করুন: কিছু এসেনশিয়াল অয়েল (বিশেষত ল্যাভেন্ডার) মাথাব্যথার প্রশমন ঘটাতে পারে। কপাল ও কপালের উভয়পাশে ল্যাভেন্ডার দিয়ে হালকা ম্যাসাজ করুন। তারপর চিৎ হয়ে শুয়ে তেলটির ঘ্রাণ নিতে থাকুন। ভালো ফলাফল পেতে শীতল, অন্ধকার ও শান্ত রুমে চলে যান। ল্যাভেন্ডারের পরিবর্তে পিপারমিন্ট অয়েলও ব্যবহার করতে পারেন।
* আদা পানি পান করুন: আদা একটি প্রদাহনাশক মসলা। এটি হলো মাথাব্যথার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষেধক। হাফ চা-চামচ আদা বাটা এক গ্লাস পানিতে নেড়ে পান করুন। এই পানীয় মাইগ্রেনের জন্য বিশেষভাবে কার্যকর। এটি মাইগ্রেন সম্পৃক্ত বমিভাবও কমায়। তথ্যসূত্র: বেস্ট হেলথ