টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে বাণিজ্যিকভাবে তুলসী চাষ করে সফল হয়েছেন আবদুল্লাহ নামের এক কৃষক। তিনি বাড়ির পাশে দুই একর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে তুলসীর চাষ শুরু করেন। আব্দুল্লাহ উপজেলার লক্ষিন্দর ইউনিয়নের ফটিয়ামারি গ্রামের একজন আদর্শ কৃষক। বাণিজ্যিকভাবে তুলসী চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপন দেখছেন আব্দুলহ। চিকিৎসাশাস্ত্রে শরীরে নতুন রক্তকোষ তৈরিতে, নিয়মিত তুলসী রস সেবনে সর্দি-কাশি, জ্বর, ফ্লু থেকে দূরে থাকা যায়। কোলেস্টরল ও সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রয়েছে তুলসীর। শ্বাস যন্ত্রে সংক্রমণ কোষ্ঠকাঠিন্য, রক্ত শোধন পেটব্যথা, কিংবা গলার প্রদাহ কমাতে পারে তুলসী। এতে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। যা স্বাভাবিক নিয়মে শরীরকে রোগের বিরুদ্ধে লড়তে শক্তি সঞ্চয় করে। কৃষক আব্দুল্লাহ বলেন, আমি প্রতি বছর তুলসী চাষ করি। এবারও বাড়ির পাশে তিন খন্ড জমিতে মোট ৩ একর জমিতে তুলসী চাষ শুরু করি। ধানের চেয়ে অধিক লাভ পাওয়ায় ধিরে ধিরে সব জমিতে তুলসী, অশ্বগন্ধা ও কালোমেঘসহ বিভিন্ন ঔষুধি গাছ চাষ শুরু করি তুলসী গাছ বিক্রির টাকায় আমার সংসার চলে। অন্যান্য ফসলের চেয়ে তুলসী চাষের খরচ এবং বিক্রির ঝামেলা একদম কম হলেও লাভ অনেক বেশি। এ আবাদে রাসায়নিক সার, কিটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। জৈব সার দিয়েই চাষ উঠে আসে। জমিতে থাকে না কোন আগাছা। গবাদি পশু তুলশি না খাওয়ায় অনেক নিরাপদ চাষ এটি। তিনি আরও বলেন, দুই একর জমিতে তুলসী চাষ করতে খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। জ্যৈষ্ঠ মাসে বীজ রোপন করলে ৪ থেকে সাড়ে ৪ মাসের মধ্যে তুলশি গাছ ওঠানো যায়। উৎপাদিত তুলসী শুকিয়ে নির্ধারিত কালেকশন পয়েন্টে নিয়ে গেলেই বিক্রি হয়ে যায়। এক শতকে ১ মণ তুলসী পাতা উৎপাদন হয়। প্রতি মণ তুলসী ১৬শথ টাকায় বিক্রি করা হয়। এ বছর দুই একর জমিতে লাভ হবে প্রায় তিন লাখ টাকার মতো। উপজেলার অনেকেই এখন আব্দুল্লাহর সফলতা দেখে অনুপ্রানিত হয়ে তুলসী চাষে ঝুঁকছেন। আব্দুল্লা তুলসীর বীচ বিক্রি করেও ভালো টাকা আয় করেন। ১ কেজে তুলসীর বীচ বিক্রি করেন দুই হাজার টাকা। ঘাটাইল উপজেলা কৃষি অফিসার দিলশাদ জাহান বলেন, তুলসী একটি দারুণ ভেষজ। প্রচুর গুণাগুন রয়েছে এতে। যত রকমের ভেষজ গুণ সম্পন্ন গাছ রয়েছে, তার মধ্যে তুলসীকে রানি বলা হয়। বাজারে তুলসীর প্রচুর চাহিদা রয়েছে।