সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট নদী খ্যাত সেই খোনকারের জোলাটি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে গরুর খামার সহ কাঁচা পাকা স্থাপনা। কবিগুরু করতোয়া নদী হয়ে এই খোনকারের জোলা দিয়েই কাছারি বাড়িতে যেতেন। এই খোনকারের জোলা নিয়েই কবি লিখেছিলেন, ছোট নদী কবিতাটি। অথচ, এই ছোট নদী দখল করে গরুর খামার সহ কাঁচা পাকা স্থাপনা গড়ে তুলেছেন মনিরামপুর মহল্লার প্রভাবশালী খোকন সরকার সহ বেশ কয়েকজন। সরেজমিনে গিয়ে ও জোলার রামবাড়ী অংশের এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, এই জোলাটি বেশ কয়েক বছর পুর্ব থেকে মনিরামপুরের প্রভাবশালী খোকন আস্তে আস্তে মাটি ভরাট করতে করতে জোলার অর্ধেক অংশ দখল করে সেখানে গরুর খামার করেছে। খোকন সরকারের দেখাদেখি অনেকেই আস্তে আস্তে দখল করে কাঁচা ঘর, টিনের বেড়া ও কেউ বাথরুম তৈরী করেছে। মনিরামপুরের পাশে যেটুকু জোলা ছিলো সেটা খোকন সহ কয়েকজন দখল করে নেয়। গত কয়েকবছর পুর্বে তৎকালীন সহকারী কমিশনার ভুমি মোহাম্মদ হাসিব সরকার নকশা মোতাবেক জোলাটি নকশা অনুসারে উদ্ধার করেন। উদ্ধারের পর খোকন সরকার সহ কয়েকজন আবার জোলাটি আস্তে আস্তে বাঁশের পাইলিং দিয়ে কৌশলে দখল করা শুরু করে। খোকন সরকার নিজেকে প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্তা ব্যাক্তিদের কাছের লোক পরিচয় দিয়ে মানুষের মুখ বন্ধ রাখার চেস্টা করে যে কারনে কেউ মুখ খোলেনি। কেউ কেউ প্রতিবাদ করেও কোন কাজে আসেনি। এদিকে, জোলার উত্তরে দারিয়াপুর মৌজার রামবাড়ী অংশে এসএ, আরএস নকশা অনুযায়ী রেকর্ডিংও সম্পত্তিতে ব্যাক্তি মালিকানাধীন জায়গায় কাজ করতে গিয়েও বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছে মানুষ। দখলবাজ খোকনই উল্টো রামবাড়ী অংশের রেকর্ডিংও সম্পত্তির মালিকানাধীন জায়গার বিরুদ্ধে কথা বলছেন। খোকন নিজে জোলা দখল করে নিজেকে রক্ষা করার হীন উদ্দেশ্যে তিনিই অন্যের বিরুদ্ধে দোশ চাপাচ্ছেন। তিনি বলছেন, রামবাড়ী অংশে যারা বাড়ীর কাজ করছেন তারা জোলা দখল করে কাজ করছেন। এযেন, উদুর পিন্ড বুদুর ঘারে। এবিষয়ে, খোকন সরকার উল্টো সাংবাদিকদের বলেছেন, এই নদী প্রাচীনকাল থেকেই এখান দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আসছে। পুর্বের রেকর্ডে স্পষ্ট নদী উল্লেখ করা আছে। কিন্তু কালের বিবর্তনে এসব অঞ্চলের জায়গার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বার্থান্বেষী মহল নদী আস্তে আস্তে গিলতে শুরু করে। কেউ কেউ একধাপ এগিয়ে প্রভাব খাটিয়ে আরএস রেকর্ডে নিজের নামে করে নেয়। খোকন সরকারের এমন বক্তব্যকে হাসি তামাশা হিসেবে দেখছেন কেউ কেউ। আবার কেউ বলছেন নিজেই দখল করে অন্যের উপর দোশ চাপাচ্ছেন খোকন সরকার, এ যেন উদুর পিন্ড বুদুর ঘারে। এদিকে, রামবাড়ী গ্রাম সহ শাহজাদপুরের আপামর জনসাধারণ নকশা অনুযায়ী জোলাটি পুনরুদ্ধারের জোর দাবি জানিয়েছে। এবিষয়ে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন বলেন, খোনকারের জোলা সংক্রান্ত বিষয়ে এ্যাসিল্যান্ডকে বলা হয়েছে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য। তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।