সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববারের মতো দ্বিতীয় কার্যদিবস গতকাল সোমবারও দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। একই সঙ্গে উভয় বাজারেই দাম বাড়ার থেকে কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। কমেছে লেনদেনের পরিমাণও।
অবশ্য গত কয়েকদিনের মতো দুই বাজারেই দাম বাড়া বা কমার তুলনায় দাম অপরিবর্তিত থাকা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাই বেশি। দাম অপরিবর্তিত থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে (দাম কমার সর্বনিম্ন সীমা) আটকে রয়েছে। ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগকারীরা ক্রেতা সংকটে তাদের কাছে থাকা শেয়ার বিক্রি করতে পারছেন না।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, সোমবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। লেনদেন পাঁচ মিনিট না যেতেই ঋণাত্মক হয়ে পড়ে সূচক। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতা। একই সঙ্গে বড় হতে থাকে দরপতনের তালিকা। ফলে সবকটি সূচকের বড় পতন দিয়ে শেষ হয় দিনের লেনদেন। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে মাত্র ১৮ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৮টির। আর ২৫৬টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫১ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৫৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর মাধ্যমে দুদিনের পতনে ডিএসইর প্রধান সূচক ১০০ পয়েন্ট কমে গেছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৪ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৯৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৫৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমার দিনে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭১৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৭২৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।
বাজারটিতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৭৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ফার্মার ৭৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৬৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, বসুন্ধরা পেপার, নাভানা ফার্মা, আমরা নেটওয়ার্ক, সামিট এলায়েন্স পোর্ট, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন এবং জেমিনি সি ফুড।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১০৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৬ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ১৭৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫০টির এবং ১০৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।