শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার জয়নগর ডা. মোসলেম উদ্দিন খান ডিগ্রী কলেজের সভাপতি আবদুল আলিম বেপারী ও অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেনকে কলেজ থেকে দ্রুত অপসারণ ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন সচেতন অভিভাবক ও এলাকাবাসী। বুধবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ১১ টায় কলেজ সংলগ্ন জয়নগর বাজারে এই কর্মসূচির আয়োজন করে এলাকাবাসী। বিধিবহির্ভূত নিয়োগ, অনিয়ম-দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হয়। বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে এলাকার পাঁচ শতাধিক লোক অংশগ্রহণ করেন। তারা কলেজের সভাপতি আবদুল আলিম বেপারী ও অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেনকে দ্রুত অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকেন। উপস্থিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, জয়নগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন খান, আনোয়ার হোসেন খান, মাওলানা তাজুল ইসলাম সেলিম, বাজারের ব্যবসায়ী মোকসেদ খান, স্থানীয় ওয়াসিম খান, চান মিয়া মাদবর, আব্দুস সোবহান খান কলেজ ম্যানেজিং কমিটির সদস্য গোলাম মোস্তফা খান, অভিবাবক আনোয়ার হোসেন খান, হারুনুর রশিদ, জুলহাস খান, ফোরহাদ খান, আমেনা বেগম ছাত্রী খাদিজা আক্তার, মালা বেগম, অন্তরা খানম প্রমুখ। ডাঃ মোসলেম উদ্দিনখান ডিগ্রী কলেজের ও কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য গোলাম মোস্তফা খান, মাওলানা তাজুল ইসলাম সেলিম বলেন, ডাঃ মোসলেম উদ্দিন খান ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী সেচ্ছা সেবক লীগের সহ- সভাপতি আব্দুল আলিম বেপারী নিয়োগ বানিজ্য, দুনীর্তি, ঘুষ ও অনিয়মে জড়িত। তাই আমরা তাদের অপসারন দাবী করছি। অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন বাংলা প্রভাষক পদে নিয়োগ পান। পরবর্তীতে তিনি সুকৌশলে ও তৎকালীন গভর্নিংবডির কিছু সদস্যকে উৎকোচ দিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদটি দখল করেন। পরবর্তীতে কৌশলে অধ্যক্ষের পদটিও ভাগিয়ে নেন। এরপর থেকে তিনি সিনিয়র প্রভাষকদের কোনঠাসা করে রাখেন এবং কলেজ প্রতিষ্ঠাতাদের সাথে অমানবিক আচরণের কারণে তারা কলেজে আসা বন্ধ করে দেন। এই সুযোগে দূর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ দেলোয়ার আরও বেশি মাত্রায় দূর্নীতি ও অনিয়ম বাড়িয়ে দেয়। তিনি কলেজে দুটি গ্রুপ সৃষ্টি করে তাদের মামলা মোকদ্দমায় জড়িয়ে রাখেন। তার অপকর্ম ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তিনি বিগত ২৬ বছরে নির্বাচন দিয়ে বৈধ প্রক্রিয়ায় কোন কমিটি গঠন করেনি। তিনি প্রতিষ্ঠাতা পরিবার, ভূমিদাতা পরিবার ও গণ্যমান্য অভিভাবকদের বাদ দিয়ে নিজের ইচ্ছেমত কাগজে কলমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যায় হতে একটি পকেট কমিটি তৈরী করে। বর্তমানে অধ্যক্ষ দেলোয়ার ও গভর্নিংবডির সভাপতি আব্দুল আলীম বেপারী যোগসাজশ করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে গোপনে ঢাকায় বসে কিছু সংখ্যক শিক্ষক-কর্মচারী ও নিজেদের নিকটাত্মীদের নিয়োগ সম্পন্ন করেন যা খুবই লজ্জাজনক। মানববন্ধনে বক্তারা দাবি করেন, কলেজের বর্তমান গভর্নিংবডির সভাপতি আব্দুল আলীম বেপারীকে দ্রুত অপসারন করতে হবে এবং দূর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেনের বিচার করতে হবে। তার অবৈধ কমিটি ও নিয়োগ বানিজ্য বাতিল করতে হবে। এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের যোগ্য ব্যক্তিকে গভর্নিংবডির সভাপতি পদে মনোনয়ন দিতে হবে। অভিযুক্ত কলেজের অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন বলেন,কলেজের কোন নিয়োগ দেয়ার ক্ষমতা কলেজ রাখে না নিয়োগটা হয় জাতীয় বিশ্ব- বিদ্যালয়ের মাধ্যমে। এই কলেজের সাবেক উপধ্যক্ষ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ২০২০ সালে পদত্যাগ করে মাদারীপুরের শিবচরের বয়রাতলা কলেজের অধ্যক্ষ হয়ে সেই কলেজর বেতন উঠান। এখন সে আবার এই কলেজের বেতন উঠাইয়া দিতে বলে আমাকে। একজনতো আর দুই স্থান থেকে বেতন নিতে পারে না। আমি উঠাইয়া দেই নাই বলে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। ডাঃ মোসলেম উদ্দিনখান ডিগ্রী কলেজের উপধ্যাক্ষ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি কোন পদত্যাগ করিনি। ডাঃ মোসলেম উদ্দিন খান ডিগী কলেজে আমি এখন ও বৈধ উপাধক্ষ হিসাবে কর্মরত আছি। শিক্ষা মন্ত্রনালয় ছিঠির মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছেন। অথচ মন্ত্রালয় থেকে তিন বার ইনডেক্স নাম্বার পরিবর্তন করে অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন ১৯৯৭ সালে সু কৌসলে তার পদটি বাগিয়ে নেন। তার পর থেকে সে নানা অনিয়ম ও দুনিতীতে জড়িয়ে পড়েন। তার অপকর্মে সভাপতি সহায়তা করেন। অভিযুক্ত কলেজের সভাপতি আবদুল আলিম বেপারী বলেন, আমাকে রাজনৈতিক ভাবে হেয়- প্রতিপন্ন করার জন্য ও আমার ইমেজ বিনষ্ট করার জন্য এই মানববন্ধন করেছে তারা।