আদালত থেকে পুলিশের চোখে-মুখে স্প্রে করে ছিনিয়ে নেয়া প্রকাশক দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদ-প্রাপ্ত দুই আসামিকে ধরতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পালিয়ে যাওয়া দুই আসামি হলেন- মইনুল হাসান শামীম ও আবু সিদ্দিক সোহেল।
গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণ থেকে দুটি মোটরসাইকেলে করে চারজন লোক এসে পুলিশের চোখে স্প্রে করে তাদের ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া জঙ্গি শামীমের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতকের মাধবপুর গ্রামে। সোহেলের বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারীর ভেটোশ্বর গ্রামে। ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, পুলিশকে স্প্রে করে আগে থেকে প্রস্তুত একটি দুটি মোটরসাইকেলে চড়ে দ্রুত পালিয়ে যান দুই জঙ্গি। পালিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গি ও মোটরসাইকেল চালকদের ধরতে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এছাড়া আশপাশের একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হচ্ছে। ডিএমপির সিসিটিভি মনিটরিংয়ে লাইভ ফুটেজ দেখা হচ্ছে। ডিসি ফারুক হোসেন আরও বলেন, পালিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গিকে ধরতে পুলিশের একাধিক ইউনিট মাঠে কাজ করছে।
এদিকে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, আমরা বাড়তি সতর্কতা জারি করেছি। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। গতকাল রোববার ঢাকার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালে মোহাম্মদপুর থানার একটি মামলায় তাদের হাজিরা ছিল। হাজিরা শেষে তাদের হাজতখানায় নেয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের প্রধান মোহাম্মদ হারুন আর রশীদ বলেন, দুটি মোটরসাইকেলে করে চারজন লোক এসে পুলিশের চোখে স্প্রে করে আসামিদের ছিনিয়ে নিয়ে যান। তারা প্রকাশক দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি। তাদের গ্রেপ্তরের চেষ্টা চলছে।
গত বছর ১০ ফেব্রুয়ারি জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় বহিষ্কৃত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়াসহ আটজনের মৃত্যুদ-ের রায় দেন আদালত। এছাড়া প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। মৃত্যুদ-প্রাপ্তরা হলেন- বহিষ্কৃত মেজর জিয়া, আকরাম হোসেন, মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান, আবদুস সবুর সামাদ ওরফে সুজন ওরফে রাজু ওরফে সাদ, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল ওরফে জিসান, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার এবং শেখ আবদুল্লাহ ওরফে জুবায়ের ওরফে জায়েদ ওরফে জাবেদ ওরফে আবু ওমায়ের। আসামিদের মধ্যে জিয়া ও আকরাম পলাতক।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর রাজধানীর শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে জাগৃতি প্রকাশনীর কার্যালয়ে ফয়সল আরেফিন দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওইদিন তার স্ত্রী শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।