আগামী ডিসেম্বর থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে আবার পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে এক মাস বন্ধ থাকার পর ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন-ক্ষমতার এ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত ও শুক্রবার সকালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়।
পরীক্ষামূলক উৎপাদন প্রকিয়ায় ধাপে ধাপে ইউনিটটির ‘লোড টেস্ট’ ৬৬০ মেগাওয়াটে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হবে বলে জানান এ কেন্দ্রের বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) উপ-মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম।
তিনি জানান, ন্যাশনাল লোড ডেসপাচের অনুমতিতে প্রথম ইউনিট থেকে আবার বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়, যা সিত্রাংয়ের আঘাতের সময় বন্ধ রাখা হয়েছিল। এর আগে ১৫ অগাস্ট প্রথম ইউনিটে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে লোড বাড়িয়ে তা ২৪ অক্টোবর ৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত পৌঁছেছিল বলে জানান ওই কর্মকর্তা। এরপর ঘূর্নিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে সেসময় ন্যাশনাল লোড ডেসপাচের নির্দেশে উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ বিনিয়োগের এ কোম্পানির প্রথম ইউনিট থেকে অক্টোবরে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর কথা থাকলেও এখন সেই সময়সীমা ডিসেম্বর নির্ধারণ করে কাজ চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষামূলক উৎপাদন সফল হলে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হবে।
এর আগে এ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক সুভাস চন্দ্র পা-ে জানিয়েছিলেন, প্রথম ইউনিটে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হচ্ছে। এ বিদ্যুৎ এখন খুলনা অ লের সরবরাহ লাইনে যোগ হচ্ছে।
সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ না হওয়ায় প্রথম দিকে প্রথম ইউনিটের ৬৬০ মেগাওয়াট খুলনা অ লে সরবরাহ করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় গত ৬ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন কেন্দ্রটি উদ্বোধন করেন।
বিদ্যুৎকেন্দ্র সংশ্লিষ্টরা জানান, কয়েক ধাপে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জাতীয় কমিটি বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতার সনদ দেবে। সেই সনদ পেলেই বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। সমপরিমাণ ৬৬০ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিটের সার্বিক কাজের ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। মোংলা-খুলনা মহাসড়কের পাশে বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার সাপমারী-কাটাখালী ও কৈর্গদাশকাঠী এলাকায় কয়লাভিত্তিক রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের এপ্রিলে। বর্তমানে প্রকল্পটির অগ্রগতি প্রায় ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।