শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৮:২৫ পূর্বাহ্ন

বারমাসি তরমুজ চাষে সফলতা পাচ্ছেন বগুড়ার কৃষকরা

মোহাম্মদ আলী বগুড়া :
  • আপডেট সময় সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০

শস্য ভান্ডার খ্যাত হিসেবে পরিচিত বগুড়া জেলা। এ জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলা কৃষি সমৃদ্ধ এলাকা বলে পরিচিত। বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা হল এমন একটি উপজেলা যেখানে সব ধরনের সবচি চাষ হয়ে থাকে। বিশেষ করে এখানকার উল্লেখ যোগ্য উৎপাদিত ফসল হল আলু। আলুর পরপরই এখানে ধান, শাক-সবজি উৎপাদনে সফলতার পর নতুন করে যুক্ত হয়েছে তরমুজ চাষ। এখানে ব্যতিক্রমী হাইব্রিড জাতের বারমাসি তরমুজ চাষ করে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন উপজেলার আটমুল গ্রামের কাজী সুবিদ আলীর ছেলে সোহেল রানা। দেশের বর্তমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি ও ঝড়-বৃষ্টির মধ্যেও তরমুজের চাষ করে বেশ ভালো সাফল্য পেয়েছেন তিনি। এবার সফল কৃষক সোহেল রানার বাঁশের মাচায় বারমাসি তরমুজ আবাদ করে এলাকায় নতুক চমক সৃষ্টি করেছেন। তাকে অনুসরন করে এলাকার আরও দু-চারজন কৃষক শুরু করেছেন হাইব্রিড জাতের বারমাসি তরমুজ চাষ।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার আটমুল গ্রামের অল্পশিক্ষিত কৃষক সোহেল রানা। পেশায় তিনি একজন কৃষক। নিজের সামন্য জমি চাষ করে তার সাংসার ঠিকমতো চলছিল না। ঠিক তখন তিনি তার বন্ধুর পরামর্শে ৩৩ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষের পরিকল্পনা করেন। তার সাথে কলা হলে বলেন, ইতোমধ্যে আমি ওই জমিতে প্রায় ২মাস পূর্বে জয়পুহাটের নিচিন্তা এলাকা থেকে ১ হাজার ৪’শ চারা সংগ্রহ করে শুরু করেন তরমুজ চাষ। তার লাগানো চারাগুলো থেকে তিন রকমের তরমুজ উৎপাদন হচ্ছে। তরমুজের জাতের নাম গুলোও বেশ বাহারী। একটি জাতের নাম মধুমালা,অন্যটির নাম ডোরা বাংলালিংক এবং আরেকটার নাম ব্লাক বেবি। মধুমালার উপরের রং দেখতে অনেকটা মালটার মতো। মধুমালা কাটলে ভিতরে রক্তের মতো লাল এবং খেতেও বেশ সুস্বাদু। ডোরা বাংলালিংক দেখতে সবুজ উপরে ডোরা কাঁটা দাগ আছে। ডোরা বাংলালিংক কাঁটলে ভিতরের রংটা বেশ হলুদ মালটার মতো খেতেও মজাদার। অপরটির নাম ব্লাক বেবি উপরে দেখতে কালচে সবুজ। কাঁটলে ভিতরে টকটকে লাল খেতেও বেশ।তরমুজ লাগানোর ৫৭ দিন পর হতেই সোহেল রানা ফল তুলতে শুরু করেছেন। তিনি তরমুজ বিক্রি করছেন ৬০ টাকা থেকে ৮০ টাকা প্রতি কেজি। ৬৭ দিন পর্যন্ত তিনি ১লক্ষ ৪২ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। এখনো তার জমিতে যে পরিমান তরমুজ আছে তাতে আরও ১ লক্ষ টাকা বিক্রি করবেন। সোহেল রানা তার ৩৩ শতাংশ জমিতে তরমুজ লাগানোর সময় খরচ করেছেন ৪০ হাজার টাকা। তরমুজ চাষ করে তার সফলতা দেখে এলাকার ছলিম উদ্দিনের ছেলে জুকু মিয়া, করব উদ্দিনের ছেলে আব্দুল হামিদসহ অনেকেই তরমুজ চাষে আগ্রহ শুরু হয়েছে।সফল কৃষক সোহেল রানা জানান, এ ধরনের জাতের তরমুজ চাষে প্রচুর লাভ। তরমুজ মৌসুম শেষ হওয়ার পর মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাটির ঢিবি তৈরি করে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিয়ে এবং মাচা তৈরি করে এ তরমুজের চাষ করা যায়। মাত্র ৫৫-৬০ দিনেই এক একটি তরমুজ প্রায় আড়াই থেকে তিন কেজি ওজনের হয়। তাই এবার চিন্তা করলাম গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করবো। চিন্তা থেকেই আমার ৩৩ শতক জমিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজের চাষ করি। নানা প্রতিকূলতার মাঝেও তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। করোনার কারণে কিছুটা শঙ্কা থাকলেও পরিবহণ সঙ্কট কেটে যাওয়ায় ও বাজারে তরমুজের দাম ভালো থাকায় সেই শঙ্কা কেটে যায়। এই মৌসুমে তরমুজ বিক্রি করে বেশ লাভবান হব বলে আশা করছি। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মোজাহিদ সরকার বলেন, মাচায় তরমুজ চাষ হওয়ায় ফলনও ভালো হচ্ছে। আমাদের কাছে এলে কারিগরি ও প্রযুক্তিগত পরামর্শ ও সহযোগিতা দিতে পারবো। ফলন কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় সে ব্যাপার কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com