শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের ৩৮৭তম সভা অনুষ্ঠিত অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে দ্রুত জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে -আমান শ্রীমঙ্গলে নারী চা শ্রমিক-কর্মজীবী নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য নিয়ে সংলাপ কালীগঞ্জে সরকারি মাহতাব উদ্দিন কলেজে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম : আতঙ্কে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বগুড়ার শেরপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত-নিহতদের স্মরণসভা দেশবিরোধী চক্রান্তকারীদের দাঁত ভাঙা জবাব দেওয়া হবে-রেজাউল করিম বাদশা দুর্গাপুরে আইনজীবীদের মানববন্ধন কয়রায় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণ সভা ও সাংস্কৃতিক ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মুন্সীগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধের প্রতিবাদে জলঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ দুর্গাপুরে শেষ হলো দুইদিন ব্যাপি কৃষিবিষয়ক প্রশিক্ষণ

ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন অব্যাহত: প্রতিরোধে নেই উদ্যোগ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২২

ব্রহ্মপুত্রের অব্যাহত ভাঙনে আবারও বিলীনের হুমকিতে পড়েছে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী মোল্লারহাট বাজার। আবাদি জমি ও বসতভিটার সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী এই হাট গিলে খাচ্ছে ব্রহ্মপুত্রের আগ্রাসী স্রোত।
দীর্ঘদিন ধরে ভাঙন অব্যাহত থাকলেও প্রতিরোধে নেই উদ্যোগ। এ অবস্থায় অস্তিত্ব রক্ষায় নদে বাঁশের বেড়া দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছেন স্থানীয়রা। যেন দেখার কেউ নেই। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কাছে বারবার আকুতি জানালেও ভাঙন প্রতিরোধে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। এ অবস্থায় স্রোতের তীব্রতা কমাতে নদে বাঁশের বেড়া দিচ্ছেন স্থানীয়রা। কিন্তু তাতে কতটুকু রক্ষা পাওয়া যাবে তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী পদক্ষেপ না নিলে মোল্লারহাট বাজারসহ জনবসতি রক্ষা করা সম্ভব নয় বলে জানান স্থানীয়রা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বলেন, ‘পাউবো জিও ব্যাগ দিয়ে বাজারের ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করলেও তাতে কোনও কাজ হচ্ছে না। ভাঙনের তীব্রতায় বাজারের দক্ষিণে জিও ব্যাগ ধসে পড়ছে। কয়েকজন ব্যবসায়ী দোকান ঘর সরিয়ে নিয়েছেন। একের পর এক বসতভিটা আর আবাদি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে।’ সরেজমিনে বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে, বাজারের দক্ষিণ প্রান্তের বেশ কিছু অংশ পাউবোর জিও ব্যাগসহ নদে ধসে পড়েছে। আরও কিছুটা দক্ষিণ-পশ্চিমে নদে বিলীন হয়েছে স্থানীয়দের বসতভিটা ও আবাদি জমি। ভাঙনের হুমকিতে দাঁড়িয়ে আছে আরও কয়েকশ বসতভিটা। ভাঙন প্রতিরোধে মোল্লারহাট বাজারের উত্তর পূর্ব দিকে এক কিলোমিটার দূরত্বে ব্রহ্মপুত্র নদের মাঝে শত শত বাঁশ পুঁতে বেড়া তৈরি করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের চাঁদার টাকায় কেনা বাঁশ দিয়ে বেড়া তৈরির মিস্ত্রি নিয়োগ করা হয়েছে। নৌকায় রাখা শ্যালো ইঞ্জিনচালিত পাইলিং মেশিন দিয়ে নদের তলদেশ গর্ত করে একের পর এক বাঁশ গেঁথে বেড়া তৈরি করছেন মিস্ত্রিরা।
পাইলিং মিস্ত্রি নুর ইসলাম জানান, যেভাবে ভাঙন চলছে তাতে অন্তত এক হাজার ফুট দৈর্ঘ্যের বেড়া তৈরি করতে হবে। এতে অন্তত তিন হাজার টুকরো বাঁশ পাইলিং করতে হবে। এই কাজে দেড় হাজারের বেশি বাঁশ প্রয়োজন। প্রতিদিন দেড়শ বাঁশ পাইলিং করতে পারেন তারা।
বেড়া তৈরির কাজ এলাকাবাসীর পক্ষে সমন্বয় করছেন স্থানীয় সমাজকর্মী মিজানুর রহমান মন্ডল। তিনি জানান, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ধারাবাহিকভাবে ভাঙন চলছে। কয়েকশ পরিবার বসতভিটা হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। অনেকে নিঃস্ব হয়ে এলাকা ছেড়েছেন। এলাকায় নদীভাঙা মানুষের হাহাকার। কিন্তু তাদের হাহাকার কারও কানে পৌঁছায় না।
মিজান বলেন, ‘স্রোত আর ভাঙন ঠেকাতে না পারলে কারও নিস্তার নেই। নিরুপায় হয়ে এলাকার লোকজন চাঁদা তুলে বাঁশের বেড়া তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু এলাকার বেশিরভাগ মানুষ গরিব। সবাই টাকা দিতে পারেন না। বাঁশ আর মিস্ত্রি খরচের জন্য যে পরিমাণ টাকার প্রয়োজন সেটা জোগান দিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। বেড়া তৈরির কাজ শেষ করতে পারলে আপাতত ভাঙন কিছুটা কমবে। তবে আমরা চাই স্থায়ী প্রতিরোধ ব্যবস্থা।’
‘এক বছর আগে পাউবো জিও ব্যাগ ফেলে বাজারের ভাঙন ঠেকালেও এবার ওই জিও ব্যাগে কোনও কাজ হচ্ছে না। ভাঙনের তীব্রতায় সব ধসে যাচ্ছে। কিছুদিন আগে পাউবো থেকে তিন হাজার জিও ব্যাগ বরাদ্দ দিলেও সেই ব্যাগ কোথায় গেছে তার কোনও চিহ্ন নেই’ বলেন মিজান।
স্থানীয়দের উদ্যোগে বাঁশের বেড়া তৈরির উদ্যোগে নদীর গতিপথ কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে বলে মনে করেন পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন। এই প্রকৌশলী বলেন, ‘মোল্লারহাট বাজারসহ স্থানীয়দের বসতি রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে অন্তত এক কিলোমিটার এলাকায় প্রতিরোধ কাজ করা প্রয়োজন। অল্প অল্প করে কাজ করে ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। ভাঙন প্রতিরোধে আমরা সাত কোটির বেশি টাকা বরাদ্দ চেয়ে প্রকল্প পাঠিয়েছি। বরাদ্দ পাওয়া গেলে স্থায়ী প্রতিরোধমূলক কাজ করা সম্ভব হবে।’




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com