নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার নলছাপ্রা-বটতলা সড়কের দক্ষিণ তারানগর এলাকায় ধেনকী নদীর ওপর নির্মিত সেতুটির এক পাশের সংযোগ সড়ক দীর্ঘদিন ধরে ভেঙে পরে আছে। এই সংযোগ সড়ক ভাঙার ১০ বছর পার হলেও এখনো সড়ক তৈরীর কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এতে করে ১২টি গ্রামের অন্তত ১৫ হাজার পথচারী চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। সম্প্রতি স্থানীয় লোকজন ও বালুছড়া সেক্রেট হার্ট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ওই সংযোগ সড়কে একটি বাঁশের সাঁকো তৈরী করে তা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে কোন রকমে পারাপার হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার লেংগুরা ও নাজিরপুর ইউনিয়নের তারানগর, উদাপাড়া, বালুচড়া, গৌরীপুর, বটতলা, নলছাপ্রা, মন্তলা, শিবপুর কেবলপুরসহ বারোটি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছিল। তাদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে প্রায় ২০ বছর আগে ধেনকী নদীর ওপর ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ নামের একটি বেসরকারি সংস্থা একটি সেতু নির্মাণ করে দেয়। নির্মাণের দশ বছর পর পাহাড়ী নদীর পানির স্রোতে সেতুটির এক পাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে পড়ে। সেই থেকে শুরু হয় শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের চরম দুর্ভোগ। পরে প্রতি বছরই স্থানীয় লোকজন ভাঙা অংশে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে আসছে। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, ওই সেতুটির সংযোগ সড়কের জায়গায় বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। এর ওপর দিয়ে শিক্ষার্থীসহ ঝুকি নিয়ে চলাচল করছেন পথচারীরা। স্থানীয় বাসিন্দা হাস্য ঘাগ্রা বলেন, এই সেতু দিয়ে ১২টি গ্রামের মানুষ যাতায়াত ও যানবাহনে পণ্য পরিবহন করত। সেতুটির সংযোগ সড়ক ভেঙে যাওয়ায় গ্রাম থেকে শহরে ধান, চাল ও কৃষিপণ্য যানবাহনে পরিবহন করা যাচ্ছে না। অসুস্থ ব্যক্তি ও রোগীদের এই সাঁকো পার হয়ে হাসপাতালে যেতে কষ্ট হয়। বালুচড়া সেক্রেট হার্ট উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী লামিয়া জানায়, সেতুটির সংযোগ সড়ক ভেঙে যাওয়ায় আমাদেরকে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে খুব কষ্ট হয়। কিছু দিন আগে আমরা বিদ্যালয়ের ছাত্র/ছাত্রীরা এই ভাঙা জায়গায় বাঁশের সাঁকো তৈরী করি। বর্তমানে আমাদের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে। দ্রুত এই ভাঙা অংশটি নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি। বালুছড়া সেক্রেট হার্ট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চার্লস নকরেক বলেন, স্থানীয় লোকজন ও বিদ্যালয়ের উদ্যোগে এই ভাঙা অংশে সম্প্রতি একটি বাঁশের সাঁকো তৈরী করা হয়েছে। এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে সেতু পার হয়ে বিদ্যালয়ে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী পড়তে আসে। না হয় তাদেরকে আরো এক কিলোমিটার ঘুরে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। লেংগুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান ভূইয়া বলেন, সংযোগ সড়ক করে দেওয়ার জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। সংযোগ সড়ক তৈরি করা হলেই সেতু দিয়ে যাতায়াতে মানুষের ভোগান্তি কমবে। এব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের উপ-সহকারি প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান বলেন, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে সেতুর সংযোগ সড়কটি করে দেওয়া হবে।