বিএনপিকে পরবর্তী নির্বাচনে আসার আহবান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদের বলেছেন, মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর সরকারকে সেইফ এক্সিট নিতে বলেছে। আমি বলতে চাই, সেইফ এক্সিট বা নিরাপদ প্রস্থানের একমাত্র পথ হচ্ছে নির্বাচন। নির্বাচনেই প্রমাণ হবে, কারা বিজয়ী হবে আর কাদের পতন হবে। সরকার পতনের হাক-ডাক দিয়ে কোন লাভ নেই। বৃহস্পতিবার দুপুরে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে উদ্বোধকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। হাওয়া ভবনের আর এক নাম খাওয়া ভবন আখ্যা দিয়ে কাদের বলেন, তারেক রহমান ওয়ান ইলেভেনের জরুরী সরকারের কাছে মুসলেকা দিয়ে রাজনীতি থেকে বিদায় নেয়ার অঙ্গিকার করে লন্ডনে পাড়ি জমিয়েছে। অর্থ পাচার করে এফবিআইএ’র কাছে ধরা খেয়েছে। এফবিআই আদালতে স্বাক্ষ দিয়েছে। সিঙ্গাপুরে অনেক অর্থ পাওয়া গেছে। নগদ কিছু আমরা ফেরতও পেয়েছি। তারেক আর কোকো সেই অর্থপাচারকারী। সুইচ ব্যাংক ও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিলাশ বহুল মার্কেট যার নামে আছে। সেই লন্ডনে বসে বসে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তারেক রহমান আর হাওয়া ভবনের অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে খেলা হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তারা বাংলাদেশের কত টাকা পাচার করেছে সব শেখ হাসিনা খতিয়ে দেখছেন। এই টাকা উদ্ধার করা হবে। তারেক রহমানসহ টাকা পাচারকারী যারাই আছে প্রত্যেকের টাকা উদ্ধার করা হবে। ওবায়েদুল কাদের বলেন, ফকরুল এখন এক নাটক শুরু করেছে। কোথাও সমাবেশ দিয়ে, ৭ দিন আগে থেকে প্রচার আর মিথ্যাচার করে বলেন- বাধা দেওয়া হচ্ছে। সরকার বাধা দিচ্ছে আর কাথা বালিশ, হাড়ি-পাতিল, চালের বস্তা, টাকার বস্তা, মশার কয়েল নিয়ে সমাবেশস্থলে আছে। আর বলে আমাদের বাধা দিচ্ছে। কুমিল্লায় তো পরিবহন বন্ধ ছিলো না, ছাত্রলীগের সম্মেলন ৮ থেকে ৬ তারিখে এসেছে। শুধু বিএনপির সমাবেশ করার স্বার্থে, শেখ হাসিনা এটা করেছেন। আ’লীগ সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন- মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাস্থল, ৭ মার্চের ভাষণ, মুক্তিবাহিনীর-মিত্রবাহনীর কাছে পাক হানাদার বাহিনীর যেখানে আত্মসমর্পন, সেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ওনারা স্বাচ্ছন্দবোধ করছেন না। ফকরুল বলেছে- আমরা স্বাচ্ছন্দবোধ করি না। মুক্তিযুদ্ধকে আসলে তারা স্বাচ্ছন্দবোধ করে না। মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতার নাম শুনলে ভেতরে ভেতরে এদের বুকে আর অন্তরে জ¦ালা করে; মুখে বলে না। ফকরুলের মুখে মধু অন্তরে বিষ! ফকরুল সাহেব সমাবেশের অনুমতি চেয়েছে, অনুমতি দিয়েছে। কেউ আপনাদের মিটিং-এ ডিসটার্ব করবে না। আমরা রাজশাহীতেও বলে দিয়েছিলাম, পরিবহণ ধর্মঘট যেন না করে। ঢাকায়ও পরিবহন ধর্মঘট হবে না; নেত্রী বলে দিয়েছেন। এর পরেও যদি বাড়া-বাড়ি করেন, লাফালাফি করেন, এর পরেও যদি আগুন নিয়ে নামেন, লাঠির সঙ্গে বাংলাদেশের পতাকা লাগিয়ে মাঠে নামেন তাহলে খবর আছে। পাল্টা-পাল্টি আমরা আর করব না। আমরা শান্তি চাই, আমরা ক্ষমতায় আছি। ক্ষমতায় থেকে আমরা অশান্তি কেন সৃষ্টি করব। মানুষকে কেন আতঙ্কে রাখবে, আমরা তো মানুষকে শান্তিতে রাখতে চাই। কারণ আমরা ক্ষমতায় আছি। অশান্তি হলো তো আমাদের সেখানে মাথা ঘামাতে হবে। ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, বিশে^ কি অবস্থা! আজকে যুদ্ধের জন্য, নিষেধাজ্ঞার জন্য আমরা একটু বিপদে আছি, মানুষ কষ্টে আছে। অভাবি মানুষ, সাধারণ মানুষ, স্বল্প আয়ের মানুষ কষ্টে আছে। এটা শেখ হাসিনা নিজেই স্বীকার করেন। চেষ্টা করছেন তিনি। এখনও বাংলাদেশে সুমালিয়া-সুদানের মতো দুর্ভিক্ষ হয়নি। এখনও আমরা অনেক দেশের তুলনায় ভালো আছি। শেখ হাসিনা ভালো থাকলে বাংলাদেশ ভালো থাকবে। গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী এমদাদুল হকের সভাতিত্বে এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন, আওমামী লীগ সভাপতিমন্ডলীর অন্যতম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি। বিশেষ অতিথি হিছেনে, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ সভাপতি মন্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহম্মেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন ও উপ- দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান। সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি।