ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের চারটি স্থাপনা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্কের তিনটি স্থাপনা এবং বরিশালে নির্মিত শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার রয়েছে। গতকাল সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বস ২০২২-এর উদ্বোধনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থেকে তিনি এ চারটি স্থাপনার উদ্বোধন করেন। এসময় রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্কের প্রধান স্থাপনা জয় সিলিকন টাওয়ার, বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল মিউজিয়াম এবং সিনেপ্লেক্স এর উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি জানান, ২০১৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহীতে প্রায় ৩৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্ক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। এখানে প্রায় ১৪ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা রাজশাহী অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। এছাড়া বরিশালে ৬৬ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। দেশে আইটি খাতে কাঙ্ক্ষিত বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে হলে দক্ষ মানব-সম্পদ সৃষ্টির বিকল্প নেই। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেই লক্ষ্য পুরণ আরো সহজ হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ জানান, বিনিয়োগ অবকাঠামো হিসেবে সারাদেশে ১০৯টি (সরকারী-৯২টি ও বেসরকারী-১৭টি) হাই-টেক পার্ক স্থাপনের কাজ করছে। বর্তমানে ১০টি হাই-টেক পার্কে পূর্ণদ্দোমে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন পার্কে ইতোমধ্যে ২১৩টি (দুইশত তের) প্রতিষ্ঠানকে স্পেস ও প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং ১৫১টি স্থানীয় স্টার্টআপ কোম্পানিকে বিনামূল্যে স্পেস/কো-ওয়ার্কিং স্পেস বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এসব পার্কে বেসরকারি সেক্টর থেকে মোট ৫৭০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে ৭ হাজার ৯৭০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচির আওতায় ইতোমধ্যে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ’র উদ্যোগে আইওটি, রবোট্রিক্স, ডাটা-এনালাইটিক্সসহ বিভিন্ন বিষয়ে ৩৬ হাজারের অধিক জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়িত সরকারী ও বেসরকারি বিভিন্ন হাই-টেক/সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে ইতোমধ্যে ২২ হাজার জনের অধিক প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে। প্রকল্প পরিচালক এ, কে, এ, এম, ফজলুল হক জানান, রাজশাহীর দশতলা সিলিকন টাওয়ারে হাই-টেক পার্কের প্রশাসনিক ফ্লোরসহ রয়েছে একটি স্টার্ট-আপ ফ্লোর, ৬ টি উদ্যোক্তা ফ্লোর এবং ৪-তলা অডিটোরিয়াম ভবন। জয় সিলিকন টাওয়ারের ২য় তলায় স্থাপিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল মিউজিয়াম। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি এ মিউজিয়ামে থাকছে বঙ্গবন্ধুর জন্মলগ্ন থেকে শুরু করে তাঁর সংগ্রামী জীবনের অনেকগুলো তথ্য ও উপাত্ত। এছাড়া চারতলা অডিটোরিয়াম ভবনের ৩য় তলায় রয়েছে অত্যাধুনিক সিনেপ্লেক্স; ১৭২ আসন বিশিষ্ট এ সিনেপ্লেক্সে শিক্ষা, জ্ঞান ও আদর্শভিত্তিক চলচ্চিত্র ও ডকুমেন্টারি পরিবেশন করা হবে। অন্ষ্ঠুানে আইসিটি বিভাগ ও এর আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর সংস্থার কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া রাজশাহী ও বরিশাল প্রন্তে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাগণ এবং স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধিরা সংযুক্ত ছিলেন। রাজশাহীতে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিটি মেয়র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরুল্লাহ এনডিসি, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আবদুল বাতেন, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল প্রমুখ।