বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজে মনমাতানো ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ

পেনশনের টাকা নিয়ে সন্তানদের দ্বন্দ্ব: ৪০ ঘণ্টা পর বাবার লাশ দাফন

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২

মনির আহমদ (৬৫)। পদ্মা অয়েল কোম্পানির সাবেক কর্মকর্তা। ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় চট্টগ্রাম নগরীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এরপর তার মরদেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে এসে কর্ণফুলী উপজেলার বাড়ির সামনের সড়কে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুলেন্সে রাখা হয়। রাতে লাশ বাড়িতে আনার পরপর বাবার পেনশনের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে বিবাদে জড়ান তার সন্তানরা। লাশ সামনে রেখেই সালিশে বসেন ইউএনও এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। সালিশে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে যায়। সন্তানদের এমন কা-ে হতবাক হয়ে পড়েন উপস্থিত জনপ্রতিনিধিরা। পরে ইউএনও ও জনপ্রতিনিধিরা পেনশনের টাকা সমবণ্টনের আশ^াস দিলে লাশ দাফনের অনুমতি দেয় সন্তানরা। অবশেষে দীর্ঘ ৪০ ঘণ্টা পর মনির আহমদের লাশ দাফন করা হয়। গতকাল রোববার সকাল ১০টায় বৃদ্ধের নিজ বাড়িতে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সকাল ১১টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
বড় উঠান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল আলম জানান, অবসরের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বৃদ্ধ মনির আহমদের (৬৫) লাশ সড়কে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুলেন্সে ফেলে রেখে শনিবার রাত থেকে বিরোধে জড়ায় তার সন্তানরা। রোববার রাত পর্যন্ত লাশ সড়কেই পড়ে থাকে। পরে জনপ্রতিনিধিরা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ বৃদ্ধের লাশ দাফনের পর তার অবসরের টাকা ছেলে-মেয়েদের মধ্যে সমবণ্টনের আশ্বাস দিলে বৃদ্ধের ছেলেরা লাশ দাফনের অনুমতি দেন। এর আগে মৃত মনির আহমদের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪০) বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমার বাবা পদ্মা অয়েল কোম্পানিতে চাকরি করতেন। অবসরে এসে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হন। আমার মেজ বোন বেবি আকতার আমার বাবাকে চিকিৎসার জন্য মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার নাম করে এবি ব্যাংকে নিয়ে গিয়ে ৩০ লাখ টাকা তোলেন। আমার ছোট ভাই সৌদি প্রবাসী আলমগীর দেশে আসার জন্য রওনা হয়েছে। সে আসার পর টাকার সমঝোতার পর বাবার দাফন করা হবে।
স্থানীয়রা জানান, মনির আহমদের অবসরের টাকা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দুই ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে মেজ মেয়ে বেবি আকতারের সঙ্গে অন্য ভাইবোনদের বিরোধ চলছিল। শনিবার তাদের বাবা মারা যাওয়ার পর এ নিয়ে রোববার সকালে ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় ব্যক্তিদের নিয়ে সামাজিক বৈঠকও হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মারা যাওয়ার পর শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুলেন্সে এনে লাশ রেখে দেন বাড়ির পাশের সড়কে। সকাল থেকে অবসরে টাকা ভাগভাটোয়ারা নিয়ে ভাইবোনদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ চলে। ইউপি সদস্য মো. সাইফুদ্দিন বলেন, মনির আহমদের অবসরের টাকা ব্যাংক থেকে উঠিয়ে ফেলার অভিযোগ এনে ভাইবোনের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। লাশ এখন পর্যন্ত সড়কে রয়েছে। ভাইয়ের অভিযোগ অস্বীকার করে বেবি আকতার বলেন, আমার বাবার অবসরের কোনো টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করিনি। তাদের অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।
মনির আহমদের ছোট মেয়ে লিপি আকতার জানান, আমার বাবা ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে আমরা তিন বোন মিলে বাবার চিকিৎসা খরচ বহন করছি। এক ভাইও কোনো সহযোগিতা করেনি। অবসরের টাকার বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে অবসরের টাকার বিষয় তুলে বাবার লাশ দাফন করতে দিচ্ছে না।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com