পদ্মায় বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর শীতকালীন ফসল উৎপাদনের আগে মধ্যবর্তী সময়ে মাসকলাই চাষ করে থাকেন চাষিরা। নদী বিধৌত পদ্মার চরে মাসকলাই চাষ করে এবছরও ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের চাষিরা। ফলন ভালো হওয়ায় কাটা মাড়াই শেষে ডাল জাতীয় এ ফসল ঘরেও তুলেছেন তারা। কম খরচ ও অল্প পরিশ্রমে অর্থকরী এ ফসল চাষ করে আর্থিক স্বচ্ছলতায় ফিরেছে দরিদ্র চরবাসীদের। দুঃখ কষ্টের পরিবর্তে এখন তাদের মুখে হাসি।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে চলতি মৌসুমে ৩ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে মাসকলাই চাষ হয়েছিল। এরমধ্যে নদী বেষ্টিত পদ্মার চরা লে চাষ হয়েছে ২ হাজার ৪ শত হেক্টর জমিতে। মাসকলাই চাষে চাষিদের বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে গড়ে মাত্র ৪ হাজার টাকা। আর ফলন হয়েছে বিঘাপ্রতি ৩ মণ থেকে ৪ মণ পর্যন্ত। উৎপাদন খরচ বিহীন ও বিনা পরিশ্রমে মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে খরচ বাদ দিয়ে ৪ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রয় করে চাষিদের লাভ হচ্ছে ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত। উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চল্লিশপাড়া গ্রামের চাষি সোহেল আহমেদ জানান, এবছর সে ৩ বিঘা জমিতে মাস কলাই চাষ করেছিলেন। খরচ হয়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। ৪ মণ হারে ফলন হয়েছে তার। খরচ বাদ দিয়ে বেশ ভালো লাভ হয়েছে। তবে তিনি বেশী দামের আশায় প্রায় অর্ধেক কলাই সংরক্ষণও করেছেন বলে জানিয়েছেন। কৃষকের ক্ষেত থেকে পরিপক্ক মাসকলাই গরু বা মহিষের গাড়িতে করে কৃষকের খোলায় পৌঁছে দিয়েও বাড়তি আয় করছেন কৃষকরা। আবার চাষিদের কাছ থেকে মাসকলাই ক্রয় করে খুচরা বাজারে ৪ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রয় করছেন।
পাশাপাশি খুচরা ব্যবসায়ীরাও লাভবান হয়েছেন বা হচ্ছেন এমন কথা জানিয়েছেন বোরহান আলী নামে এক খুচরা ব্যবসায়ী। কৃষি বিভাগের পরামর্শের পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে আধুনিক ও উচ্চফলনশীল জাতের মাসকলাই বীজ সরবরাহ, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও প্রয়োজনীয় প্রণোদনা দেওয়ায় এবছরও মাসকলাইয়ের ভালো ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন দৌলতপুর কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নুরুল ইসলাম। অনাবাদি পদ্মার চরে অর্থকরী ফসল মাসকলাইসহ সব ধরণের ফসল চাষে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রণোদনা পেলে কৃষকদের ফসল উৎপাদনে আগ্রহ বাড়বে বলে জানিয়েছে চরবাসী।