অর্থই অনর্থের মুল। লোভে পড়ে মানুষ কিনা করতে পারে এমনি এক ঘটনা ঘটেছে দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলা শহরে। মোটা অংকের অর্থের লোভে পড়ে দিনাজপুর জেলার বিরামপুরে ভবন মালিক মোজাম্মেল হোসেন রাতের আধারে লাইট পল্লী ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সাইনবোর্ড সরিয়ে পপুলার ডায়াবেটিক এন্ড হেলথ কেয়ার সেন্টার নামে আরেক প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। সরেজমিনে জানা গেছে, গত ২০২১ সালে দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলা শহরের প্রানকেন্দ্রে মশরতুল্যা মন্ডলের পুত্র মোঃ মোজাম্মেল হোসেন তার নির্মাণকৃত ৪ তলা ভবনের ২য় তলার পুরো অংশ ও ৩য় তলার অর্ধেক অংশ মাসিক ভাড়া ৩৫ হাজার টাকা হিসেবে অগ্রিম ১লক্ষ টাকা জামানত দিয়ে ৩ বছরের জন্য লাইট পল্লী ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান মোঃ মেহেবুবুর রহমান রাজু সাথে গত ৩মার্চ’২১ তারিখে ৪টি ১’শ টাকার নন জুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্পে ভবন ভাড়ার চুক্তিপত্র দলিল সম্পাদন করেন। চুক্তিপত্র দলিল সম্পাদন করার পর নিজ অর্থায়নে ১২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে লাইট পল্লী ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বিদ্যুৎ সংযোগ, অফিসে থাইগ্লাস ও বাথরুম নির্মাণ করেন । অতঃপর লাইট পল্লী ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্যক্রম শুরু করতে গিয়ে করোনা ভাইরাসের কারণে প্রথম ৩মাস অপেক্ষামান ছিল। পরবর্তীতে বিরামপুরে এই ডায়াগনস্টিক সেন্টার বিরামপুরে নাম ও জস অর্জন করে। বকেয়া ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে বিলম্ব হওয়ায় গত ২৪ মে ২২ তারিখে পরিকল্পিত ভাবে ভবন মালিকের পুত্র রুহুল আমিন (সেলিম) সহ তার ক্যাডার বাহিনী লাইট পল্লী ডায়াগনস্টিক সেন্টারে স্টাফ মঞ্জুরুল হককে মারধর করে তাকে দিয়ে তালা মেরে চাবীটি নিজের জিম্মায় নেয়। পরদিন ভবন মালিক ও তার পুত্র কোম্পানির স্টাফদের জানায়, আপনাদের জামানতের ২২লক্ষ টাকা আত্মসাত করে পালিয়ে গেছে । এরপর ভবন মালিক ও তার পুত্র সেলিম কোম্পানির স্টাফদের নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে যায়। ৪০জন স্টাফের স্বাক্ষর নিয়ে তাদের পক্ষে রায়হান কবির জনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করেন। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা অফিস থেকে গত ১৪জুন’২২তারিখে ৭৫৩ নং স্মারকে মোঃ মেহেবুবুর রহমান রাজুসহ ৬,জনকে নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশে উভয় পক্ষকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হয়। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মোঃ মেহেবুবুর রহমান রাজু এ বিষয়ে প্রতিবেদককে জানান, ২০২২ সালের মে মাসে ঈদের ছুটি চলাকালীন সময়ে ভবন মালিকের ছেলে সেলিম সন্ত্রাসী কায়দায় আমার স্টাফ খন্দকার মঞ্জুরুল হককে মারধর করে তাকে দিয়েই লাইট পল্লী ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রধান ফটকে তালা বন্ধ করিয়ে চাবী নিয়ে নেয়। পরদিন ভবন মালিকের ছেলে সেলিম প্রতিষ্ঠানের মাঠ কর্মীসহ সকল স্টাফকে জানায়, অফিস ছেড়ে লোকজন পালিয়ে গেছে। যেহেতু মাঠ কর্মীরা প্রতিদিন ইনকাম করে আনত এবং তাদের কাছে প্রতিষ্ঠানের সদস্য কার্ডের টাকা থাকত। সে কারণে তাদের নিকট থেকে এক বছর ব্যবধানে জামানত হিসেবে প্রায় ২২ লক্ষ টাকা গ্রহণ করা হয়। তারা আমার স্টাফদের জানায়, আমরা নাকি এখান থেকে পালিয়ে গেছি। এরপর তাদেরকে নিয়ে ইউএনও অফিসে গিয়ে একই কথা বলে লিখিত অভিযোগ করে। উপজেলা অফিস থেকে নোটিশ পেয়ে ইন্টারনেট হোয়াটসপ -এর মাধ্যমে আমি ইউএনও মহোদয়ের সাথে এ বিষয়ে আমার বিস্তারিত আলোচনা হয়। তাদের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে ইউএনও এই সমস্যা সমাধানের জন্য উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মেসবাউল ইসলাম ও থানার সহযোগিতা নেওয়ার জন্য পাঠিয়ে দেন । থানার পুলিশ কর্মকর্তা সরেজমিনে ঘটনা তদন্ত করতে এসে জানতে পারে বিল্ডিং থেকে লাইট পল্লী ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামক প্রতিষ্ঠানটি পালিয়ে যায়নি। পুলিশ অভিযোগকারীদের জানায়, আপনারা মামলা করলে আমরা ব্যবস্থা নেব। কিন্তু তারা মামলা না করে ফিরে আসে। শুধু তাই নয়, ভবন মালিক ও তার ছেলে সেলিম গত ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে একই কৌশলে আমার স্টাফের কাছ থেকে চাবী নিয়ে বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এই ঘটনার দেয়ার ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। ঘটনা এখানেই শেষ নয়, ভবন মালিকের ছেলে সেলিম কোম্পানির চেয়ারম্যান ও স্টাফদের নানা রকম হুমকি দিয়ে বিল্ডিং এর ৫০ লক্ষ টাকার মালামাল, স্টাফ জামানত ২২ লক্ষ টাকা ও কোম্পানির মার্কেটে ইনভেষ্ট আনুমানিক ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিসাধন করে। এছাড়াও বিল্ডিং মালিকের ছেলে সেলিম যিনি কেন্টনমেন্টের একজন ইঞ্জিনিয়ারীং অফিসের কর্মচারী সে তার নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী নিয়ে সূ-পরিকল্পিতভাবে সকল মালামাল হাতিয়ে নেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এছাড়াও সেলিম তার এলাকার ছোট ভাই রায়হান কবির জনিকে দিয়ে কোম্পানীর সকল সিগনেচার করা ইমাজেন্সি ও প্রয়োজনীয় কাগজ চুরি করে। তারমধ্যে রুপালী ব্যাংকের একটি ব্লাং চেকে ৫০ লক্ষ টাকা লিখে ব্যাংকে সাবমিট করে। ঐ সময় প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানকে মোবাইলে হুমকি দিয়ে বলে আমাদের দাবীকৃত টাকা দেন। এইভাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে লাইট পল্লী ডায়াগনস্টিক সেন্টার।এব্যাপারে উপজেলা নিবার্হী অফিসার পরিমল কুমার সরকার বলেন, বিযয়টি আমার কাছে দুজনে আসলে সমাধান করা যেত। তাদেরকে নোটিশ করা হয়েছে তারা না আসায় ভুক্তভুগিদের আইনি সহযোগিতার নেয়ার জন্য বলি। এ ব্যাপারে কথা হয় পপুলার ডায়াবেটিক এন্ড হেলথ কেয়ার সেন্টার মালিক পক্ষের ওয়াজেদ আলী বলেন,আমরা বাড়ির মালিকের সাথে আলাপ করে ভাড়া নিয়েছি।তিনি আরো বলেন বাড়ির মালিক মোজাম্মে? হোসেন ভবনের সব মালামাল যন্ত্রপাতি নিজের দাবি করে পপুলার বডাযাবেটিক এন্ড হেলফ কেয়ার সেন্টারের কাছে ভাড়া দেয়। প্রকৃতপক্ষে ভবনের সম্পুন যন্ত্রপাতি মালামাল লাইট পল্লী ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বলে স্বিকার করেন উপজেলা পরিযদের ভাইস চেয়ারম্যান মেজবাউল ইসলাম মন্ডল। তিনি আরো বলেন, ভবনের মালিকের উচিৎ হযনি পুবের ঝামলা মিটমাট না করে অন্য প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দেয়া। ভবন মালিক মোজাম্মেল হকের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি বাহিরে আছি এখন কথা বলতে পারবো না।