সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:০০ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
তোফায়েল আহমেদ বিনা ভোটে এমপি হয়ে পারিবারিক ভাবে লুঠপাট করেছে-হাফিজ ইব্রাহিম শ্রেষ্ঠ গাইড হিসেবে পুরস্কার পেলেন মাইলস্টোন কলেজের ছাত্রী মেহজাদ আকবর এসবিএসি ব্যাংকের অডিট কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত দৌলতখানে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯ তম জন্মবার্ষিকী পালিত পুঁইশাক চাষে সফল সুফিয়া, আগ্রহী হচ্ছে অন্য কৃষকরাও অতিরিক্ত টোল আদায় করলেই ইজারা বাতিল-ভোলায় উপদেষ্টা সাখাওয়াত কৃতি ফিরোজীকে বাঁচাতে সাভারে চ্যারিটি কনসার্ট আওয়ামী লীগের সাথে দ্বন্দ্ব নাই, যারা অন্যায় করেছে তাদের বিচার চাই-আব্দুল আউয়াল মিন্টু জলঢাকায় গণঅধিকার পরিষদের গণসমাবেশ সোনারগাঁওয়ে মাসব্যাপি লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব শুরু

প্রতিটি পণ্যের দামই হু হু করে বাড়ছে

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২৩

বাজারে কোনো পণ্য কিনতে গিয়েই স্বস্তি পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। প্রতিটি পণ্যের দামই হু হু করে বাড়ছে। মধ্যবিত্তরাও এখন দামের চাপে ব্যাগের তলানিতে পণ্য নিয়ে ফিরছেন ঘরে। রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নিউমার্কেট, শান্তিনগর ও হাতিরপুল বাজার ঘুরে এবং নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে তাদের কষ্টের কথা। সাধ আর সাধ্যের ফারাকের কথা। কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সাধারণ মানের চালের দাম কেজিপ্রতি ৪-৫ টাকা বেড়েছে। কয়েকদিন আগে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, যেখানে প্রতি কেজি চালের দাম ৫০ পয়সা বাড়ার কথা, সেখানে ব্যবসায়ীরা ৪ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে, বাজারের চিত্র আরও ভিন্ন। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম ৩-৪ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আজ মোটা চালের মধ্যে আটাশ চাল মান ভেদে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫৮-৬০ টাকায়। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির আগে এ চাল বিক্রি হতো ৪৫-৪৬ টাকায়। প্রতি কেজি নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮২ টাকায়, যা আগে ছিল ৭৫-৭৮ টাকা। প্রতি কেজি মিনিকেট চালের দাম ৭২-৭৫ টাকা, আগে ছিল ৬৮-৭০ টাকা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দাভাব, বাজার মনিটরিংয়ের অভাব, ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটসহ নানাবিধ কারণে বাজারে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে, পণ্যের দাম কী পরিমাণে বাড়া উচিত এবং কী পরিমাণে বেড়েছে, এ খবর রাখতে কোনো সংস্থাকেই মাঠে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে না। ফলে, যে যার মতো পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। এতে সব শ্রেণির ক্রেতারা পড়ছেন ভোগান্তিতে।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. এম কে মুজেরি বলেছেন, মুক্তবাজার অর্থনীতি মানে এই নয় যে, ব্যবসায়ীরা যা খুশি তা-ই করার সুযোগ পাবে। বিশ্বের অনেক দেশে মুক্তবাজার অর্থনীতি থাকলেও তার নিয়ন্ত্রণ থাকে সরকারের হাতে। বাংলাদেশেও এ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সরকারের হাতে রাখতে হবে। এজন্য দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলোর মনিটরিং সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি।
কারওয়ান বাজারের নোয়াখালী রাইস এজেন্সির মালিক আব্দুল মতিন বলেন, মিলাররা জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে অনেক আগে থেকেই চালের দাম বাড়িয়েছে। সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ৪-৬ টাকা বাড়িয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর যেখানে কেজিপ্রতি ৫০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১ টাকা বাড়ার কথা, তখন এসব মিলার ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা মিলে সিন্ডিকেট করে প্রতি কেজি চালে আবারও ৫-৭টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে, খুচরা বাজারে চালের দামে প্রভাব পড়েছে।
এদিকে, খুচরা বাজারে আজ প্রতি কেজি মসুর ডাল ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহেও ছিল ১২০-১২৪ টাকা। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা ছিল ১৮৫-১৯০ টাকা। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৩৫-৪০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ ৪৫ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগেও ৪০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৩০-৩৫০ টাকায়, যার দাম ছিল ৩০০-৩২০ টাকা। তেলাপিয়া প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়, যা ছিল ১৬০-১৮০ টাকা। কই মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮০-২০০ টাকা।
গতকাল শুক্রবার বাজারে নতুন করে ডিমের দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে ১১৫ টাকা ডজন বিক্রি হওয়া ডিম এই সপ্তাহে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে মরিচের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। বাজারে এখন এক কেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে। যা সপ্তাহখানেক আগে ৮০ টাকা ছিল। এদিকে এখনো কাটেনি চিনির সংকট। আগের বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে পণ্যটি। তবে শীতকালীন সবজির দামে কিছুটা স্বস্তির খবর রয়েছে। অধিকাংশ সবজির দামই কমেছে। শুক্রবার সকালে সরেজমিনে রাজধানীর কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খোলা চিনির কেজি ১০২ এবং মোড়কজাত চিনির কেজি ১০৭ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। এরপরও বেশিরভাগ জায়গায় চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। কোথাও পাওয়া গেলেও ভোক্তাদের কিনতে হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা দরে। একই দরে বিক্রি হচ্ছে খোলা চিনিও। তবে এর চেয়ে অনেক বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে আখের লাল চিনি। মোড়কজাত এ ধরনের চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে।
বিক্রেতারা বলছেন, প্রায় দুই মাস ধরে বাজারে চিনির সংকট। পাইকারি বাজারে পাওয়া গেলেও কিনতে হচ্ছে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে।
অন্যদিকে গত সপ্তাহের ব্যবধানে মরিচের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩০-৪০ টাকা। বাজারে এখন এক কেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে। যা সপ্তাহখানেক আগে ৮০ টাকা ছিল। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মরিচ বিক্রেতা বাছেদ মোল্লা বলেন, পাইকারিতে ১০ থেক ১৫ দিন ধরে কাঁচা মরিচের দাম বাড়ছে। সরবরাহ কম সেজন্য দাম উঠছে। এ কারণে খুচরা পর্যায়েও দাম বাড়তি। তবে আমন ধান উঠায় মোটা চালের দাম আরও কেজিতে দুই-তিন টাকা করে কমেছে। গত দুই সপ্তাহ ধরেই চালের দাম নি¤œমুখী। এখন বাজারে গুটি স্বর্ণা জাতের চালের কেজি ৪৮ থেকে ৫২ টাকা। মাঝারি আকারের চালের দামও কমেছে এক থেকে দুই টাকা করে। পায়জাম ও বিআর-২৮ জাতের চাল মাঝারি আকারের চালের কেজি কেনা যাবে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা দরে। তবে চিকন বা মিনিকেট চালের দাম কমেনি। এ মানের চাল এখনও ৭২ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে শীত মৌসুমের বেশিরভাগ সবিজির দাম কমেছে। দু-তিনটি ছাড়া বেশিরভাগ সবজির দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে সিম, শালগম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, পেপে, মুলা ও নতুন আলু কেনা যাচ্ছে এ দামে। অন্যদিকে সরবরাহ বাড়ায় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা দরে।
ওদিকে বাজারে ফার্মের মুরগি লাল ডিমের হালিতে ২ টাকা বেড়েছে। এখন হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। তিন দিন আগে হালি ছিল ৩৮ টাকা। ফার্মের লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ২১০-২২০ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের ডজন ১৮০-১৯০ টাকা। ডিম বিক্রেতা মো. আশিক বলেন, ফার্মের মুরগির ডিমের দাম একটু বেড়েছে। হালিতে ২ টাকা বেড়েছে। অন্য ডিম আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে আগে দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগি। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগির দাম কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-২৬০ টাকা। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২১০-২৩০ টাকায়।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com