উত্তরাঞ্চলে বইছে শৈত্যপ্রবাহ। জবুথবু হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষেরা। রাতে হিম বাতাশের সাথে বৃষ্টির মতো পড়ছে কুয়াশা। গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টায় এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, গত কয়েক দিন ধরে ৮ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ওঠানাম করছে। হিমালয়ের শীতল বাতাসে এলাকার মানুষ জন শীতে কাবু হয়ে পড়েছে। সারা দিনের রোদের তাপমাত্রায় কোনো প্রকার তেজক্রিয়া নেই। তাপমাত্র কমে যাচ্ছে। শৈত্য প্রবাহে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া ছিন্নমূল মানুষ। তারা শীত বস্ত্রের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সকালে তীব্র শীত অনুভূত হওয়ায় তেমন কাউকে একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হতে দেখা যায়নি। অসহায় গরীব পরিবারের কেউ কেউ দু’বেলা খাবার ও কিস্তির তাগাদায় তীব্র শীতকে উপেক্ষা করেই কাজে যাচ্ছেন। অনেকে পুরাতন কাঁথা, চট গায়ে দিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। এলাকার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে কম্বল-লেপের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। দামও একটু বেশি। লেপ তোষকের দোকানে কারিগরেরা কাজের ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এলাকাবাসী বলছেন, প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে থেকে হিমেল বাতাস আর সকালে ঘন কুয়াশায় ঢেকে পড়ছে পরিবেশ। সন্ধ্যা নামার আগেই গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ বাড়িতে খড়কুটো, গাছের পাতা ও পুরানো কাঠে আগুন জ্বালিয়ে শীতের তীব্রতা নিবারণের চেষ্টা করছে। সরকারির পাশাপাশি বেসরকারিভাবে কিছু ব্যক্তি ও এনজিওয়ের উদ্যোগে শীত বস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো: জহুরুল ইসলাম বলেন, জেলায় ৪০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আরো কম্বলের জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: রাসেল শাহ জানান, উত্তরদিক থেকে হিমালেয়ের হিমেল হাওয়া প্রবাহিত হওয়ায় তাপমাত্র ধীরে ধীরে কমছে। সামনে আরো কয়েক দিন এমন অবহাওয়া বিরাজ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
হাঁড় কাঁপানো শীতে কাঁপছে দিনাজপুরের মানুষ: হাঁড় কাঁপানো ঠাণ্ডা বাতাস, ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে জুবুথবু দিনাজপুরবাসী। দুইদিন যাবৎ দেখা নেই সূর্যের আলোর। এ অবস্থায় আগুন জ্বালিয়ে শরীরে তাপ নিচ্ছেন অনেকেই। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে কেউ বের হচ্ছেন না। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। এদিকে সকাল ৬ টায় জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আদ্রতা ৯৫ শতাংশ। গতকাল শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দিনাজপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান। তিনি জানান, গতকাল শুক্রবার সকাল ৬ টায় দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা রেকর্ড হয়েছে ৯৫ শতাংশ।
তিনি আরও জানান, আগের দিন একই সময় তাপমাত্রা ছিলো ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ছিলো ৯৩ শতাংশ।