শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৩৯ অপরাহ্ন

সান্তাহারে পর্যটকদের মন কেড়েছে শখের পল্লী

জিআরএম শাহজাহান (আদমদীঘি) বগুড়া :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারী, ২০২৩

সান্তাহারের বিশিষ্ট প্রকৌশলী বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম জীবনের অন্যতম অনুসঙ্গ উপভোগ্য বিনোদনের জন্য গড়ে তুলেছেন এক দৃষ্টিনন্দন বিনোদন পার্ক। নিজের শখ থেকেই পার্কটির নাম দিয়েছেন ‘শখের পল্লী’। বগুড়ার জেলার সান্তাহার পৌরসভার বশিপুর মৌজার বাইপাস সড়কের পাশেই এই বিনোদন কেন্দ্রের অবস্থান। পার্কটি প্রায় ৪৫ বিঘা জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে। বগুড়া, রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, জয়পুরহাট ছাড়াও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিনিয়ত এখানে বিনোদনের জন্য আসছেন বিনোদনপ্রেমীরা। ২০১৬ সালের ২০ই ফেব্রুয়ারী থেকে পার্কের কার্যক্রম শুরু হয়। মনোরম পরিবেশে আনন্দ-বিনোদনের লক্ষ্যে পার্কটিতে গড়ে তোলা হয়েছে-মিনি চিরিয়াখানা। সেখানে দেখা মিলে বানোর, খরগোশ, অষ্ট্রেলিয়ান ঘুঘু, কাকাতুয়া, লাভবার্ড, বাজুরিকাসহ বিভিন্ন ধরনের পাখি। এছাড়া আরো রয়েছে সুইমিং পুল, কমিউনিটি সেন্টার, পিকনিক কর্নার ও ক্যাবল কার। বাচ্চাদের খেলার জন্য দোলনা, সুপার চেয়ার, পিচ্ছিল, মইসহ বিভিন্ন রাইডস। আছে কয়েকটি পুকুর, সেখানে ১টি পুকুরে স্পিড বোডে চড়ে ঘুরে বোড়ানো যায় আরেকটি পুকুরে রয়েছে প্যাডেল বোর্ড এবং তারপাশের পুকুরে রয়েছে জলপরির ভাস্কর্য ও পুকুরের চার পাশদিয়ে রয়েছে মিনি ট্রেনলাইন যা বাচ্চাদের কাছে অতি জনপ্রিয় সেখানে স্টেশনটির নাম দেয়া আছে ‘ষাটবাড়ী স্টেশন।’ ভাস্কর্যের মধ্যে বিশালাকারের ঈগল, জলপরি, মৎসকন্যা, পেঙ্গুঈন, হাতি, হরিণ, বাঘ, ক্যাঙ্গারু, ঘোড়া, জিরাফ, বকসহ ইত্যাদি। দেয়ালে লিখনের মাধ্যমে এখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৃশ্যের প্রতিচ্ছবি। এছাড়া রয়েছে ‘ধ্রুবতারা’ ও ‘শুকতারা’ নামের দু’টি কটেজ, যা গেষ্টহাউজ হিসেবে ব্যাবহার হয়ে থাকে। দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকরা এসে থাকতে সু-পরিবেষে অবকাশযাপন করতে পারেন। পার্শ্বেই রয়েছে ওয়াক্তিয়া মসজিদ নামাজের স্থান। সময় হলে পার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারি ও দর্শনার্থীরাও এখানে নামাজ আদায় করে থাকেন। খাবারের জন্য রয়েছে রেস্টুরেন্ট সহ কনফেকশনারী দোকানপাট। শখের পল্লীর প্রধান আকর্ষণ ‘সুইমিং পুল’। এখানে ছোটদের সাঁতার শেখানোর জন্য অভিভাবকরা নিয়ে আসেন। এছাড়া দূর-দূরান্ত থেকে এসে সব বয়সীরা জলকেলিতে মেতে ওঠেন। যে যার মতো করে সাঁতার কাটা ও লাফালাফি করে সেলফি তোলেন। বিশেষ করে শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সুইমিং পুলে প্রচুর লোকজনের সমাগম ঘটে। এছাড়া ঈদ, পূজা ও বিশেষ দিনগুলোতে প্রচুর লোকের আগমন ঘটে। প্রতিদিন গড়ে এখানে ৬’শ জন এবং শুক্রবার প্রায় ৩ হাজার জন মতো বিনোদন প্রেমী আসে। পার্কটিতে প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা, বিভিন্ন রাইডস ১০ টাকা ও সুইমিং পুল ৫০ টাকা। পার্কের কারণে এলাকার বেকার যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থান সৃৃষ্টি হয়েছে। কারণ পার্কের পাশেই কয়েকটি কনফেকশনারী দোকান গড়ে উঠেছে। শুক্রবারের ছুটিতে স্ব-পরিবরে পার্কে পার্কে বেড়াতে এসেছেন বেসরকারি কলেজের শিক্ষক তাসমিন আহমেদ। তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘মেয়ের ইচ্ছা পার্কে এসে সুইমিং পুলে সাঁতার শেখার। শহরে গোসলের জন্য ভালো পরিবেশের কোন পুকুর নেই। বাচ্চাকে সাঁতার শেখানোর চেষ্টা করছি। খুবই ভালো লাগছে এ পরিবেশ। তিনি আরো বলেন, পার্কটিতে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো উন্নত করা প্রয়োজন।’ ‘শখের পল্লী’র প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাণিজ্যিক ভাবে মুনাফা অর্জন করা আমার লক্ষ্য নয়। শিশুদের নির্মল আনন্দ দেয়ার জন্যই এই পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। আমি চেষ্টা করছি এই শখের পল্লী পার্ককে আন্তর্জাতিক মানের পার্ক করার। বিভিন্ন রকমের রাইডের ব্যবস্থার পাশাপাশি দর্শনার্থীর প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘোরঘুরির জন্য পার্কের পরিসর বৃদ্ধি করেছি। আমি আশা করি কোনো দর্শনার্থী এখানে এসে নিরাশ হবে না। আমি সাধ্য মত চেষ্টা করছি দর্শনার্থীরা এসে সকল কিছু যেন এক সাথে পায়। এ ব্যাপারে সংস্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com