শস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলায় তিন ফসলের আবাদযোগ্য উর্বর জমি কেটে পুকুর খনন দিনকে দিন আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। পুকুর খনন বন্ধের দাবিতে ভুক্তভোগী কৃষকসহ সচেতন মহলের নেতৃবৃন্দ সমাবেশ ও মানববন্ধন করে চলেছেন। বার বার স্মারকলিপি দিয়েছেন কর্তা ব্যক্তিদের। বিশেষ করে তারা সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। তারপরও থেমে নেই কৃষি জমি ধ্বংসের এই মহাযজ্ঞ। কৃষক বাঁচাও আন্দোলনের আহ্বায়ক মীর শহিদ বলেন, ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা লঙ্ঘন করে দিনভর জনসম্মূখে কৃষকের উর্বর জমি কেটে পকুর খনন করে দিচ্ছেন একটি স্বার্থান্বেশী চক্র। পুকুর খনন বন্ধের জন্য গত রবিবার কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত সোমবার মানববন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেজবাউল করিম বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। কয়েক বছর ধরে পুকুর খনন বন্ধের দাবিতে অনুরূপ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। পক্ষান্তরে পুকুর খনন আগের তুলনায় গণহারে বেড়েছে। তিনি আরো বলেন, পুকুর খনন চক্রের সঙ্গে জড়িত তাড়াশ গ্রামের রুহুল, জলিল, খলিল, বিনসাড়া গ্রামের মনিরুল, পেঙ্গুয়ারি গ্রামের রাজু, কহিত গ্রামের আলতাব, আলী, আরঙ্গাইল গ্রামের জালমাহমুদ, সোলাপাড়া গ্রামের মান্নান, মুর্শিদ, বানিয়াবহু গ্রামের আফজাল, খালকুলা গ্রামের শামিম, দিঘী সগুনা গ্রামের সেলিম, সেরাজ, শাস্তান গ্রামের খোকন পাচান গ্রামের সুমন, কাউরাইল গ্রামের ছাত্তার ও দিঘরিয়া গ্রামের আজগর কৃষকের জমি কেটে পুকুর খনন করে দিচ্ছেন। এদেরকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের আওতায় আনা হলে পুকুর খনন বন্ধ করা সম্ভব। তিনি জনস্বার্থে প্রশাসনের সু দৃষ্টি কামনা করেন ও দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানান। সর্বপরি দ্রুততম সময়ের মধ্যে পুকুর খনন বন্ধে জনসচেনতার লক্ষ্যে এলাকাভিত্তিক মাইকিং করার পরামর্শ দেন এই কৃষক বন্ধু। পুকুর খনন চক্রের সঙ্গে জড়িতরা বলেন, সবাইকে ম্যানেজ করেই তারা পুকুর খনন করছেন। সরজমিনে গত মঙ্গলবার দেখা যায়, তাড়াশ পৌর এলাকার কহিত গ্রামের পুর্ব মাঠে ১০ বিঘা আবাদযোগ্য জমি কেটে পুকুর খনন করা হচ্ছে। এ পুকুরের জমি কহিত গ্রামের আবু সাইদ নামে একজন কৃষকের। পুকুর খনন চক্রের আলতাব তাবু ফেলে ভেক্যু মেশিন দিয়ে খনন কাজ করছেন। সকাল ১০ টার দিকে প্রতিবেদক ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর আলতাব ও ভেক্যু চালক সটকে পড়েন। খোদ উপজেলা পরিষদের আধা কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে কমপক্ষে ১০টি পুকুর খনন করতে দেখা গেছে। তাড়াশ সদর গ্রামের পুর্ব মাঠে সব চেয়ে বেশি পুকুর খনন করা হচ্ছে। এছাড়া পুরো উপজেলা জুড়ে এলাকাভিত্তিক যত্রতত্র পুকুর খনন করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেজবাউল করিম বলেন, দেখছি কী করা যায়। সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, আবাদযোগ্য জমি নষ্ট করে পুকুর খনন করা যাবেনা। পুকুর খনন নিয়ে সাংবাদিকদের লেখালেখির ওপর গুরুতারোপ করে সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) এলাকার সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ দৈনিক খবরপত্রকে বলেন, আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি।