প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন সেই আশায় শরীরের রক্ত নিংড়ে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করে ৭ বছর যাবত অপেক্ষায় রয়েছেন রাজশাহীর আরিফ। শহীদদের প্রতি কতটা শ্রদ্ধা থাকলে একজন বেকার যুবক শহীদদের স্মৃতির উদ্যেশ্যে স্মৃতিস্তম্ভ প্রতিষ্ঠা করে তারই দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন আরিফ। তিনি মোহনপুর উপজেলার রায়ঘাটি ইউনিয়নের হাটরা গ্রামের শামসুদ্দিন মৃধার ছেলে। আরিফের নিজ গ্রাম হাটরা, ২০০০ সালে হাটরা নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও ওই স্কুলে কোনো শহীদ মিনার ছিল না। মোহনপুর উপজেলা সদর থেকে হাটরা নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুরত্ব ১১ কি.মি.। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় স্কুলের ভবন ঘেঁষে নির্মাণ করা হয়েছে শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভ শহীদ মিনার। শহীদ মিনার নির্মাণ হওয়ায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা আরিফের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এই প্রথমবারের মতো নিজেদের স্কুলেই শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পন করতে পারবে ভাষা শহীদদের স্মরণে সেই আনন্দে আনন্দিত গ্রামের সবাই। শহীদ মিনার নির্মাণ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে প্রধান শিক্ষক জানান, তরুন যুবক আরিফ বেশ কিছুদিন থেকে বলে আসছিলেন স্কুলে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার থাকলে ভালো হয়। সবাই ভাষা আন্দোলন ও মাতৃভাষার গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারবে। একদিন আরিফ স্কুল প্রাঙ্গণে শহীদ মিনার নির্মাণ করার অনুমতি ও জমি চাইলেন। তাঁর কথায় আশ^স্ত হয়ে শিক্ষক ও কমিটির পক্ষ থেকে জমি ও অনুমতি দেওয়া হলো। সেই সাথে সবাই জানতে চাইলেন, তিনি কীভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করবেন? তখন আরিফ জানালেন, কষ্ট করেই তিনি শহীদ মিনারটি নির্মাণ করে দিবেন এবং সেই প্রতিশ্রুতি মোতাবেক অনেক কষ্ট করে অর্থ যোগাড় করে স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করে দিয়েছেন। জানা গেছে এর আগেও তার পরিবার সামাজিক কল্যাণে গোরস্থান ও ঈদগাহ নির্মানের জন্য জমি দান করেছেন। আরিফ জেনেছেন, দেশরতœ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৯ জানুয়ারী’২৩ রাজশাহীতে আসবেন। তাঁর একমাত্র চাওয়া এবং স্বপ্ন শহীদ মিনারটি দূর থেকে হলেও রাজশাহীর জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী উক্ত শহীদ মিনারটির শুভ উদ্বোধন ঘোষনা করবেন।