সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের স্টোর থেকে আট লক্ষাধিক টাকার মন্টিলুকাস্ট গ্রুপের ৫২ হাজার ৫৮৪ পিস ওষুধ গায়েব হয়ে যায়। এ ঘটনার তদন্তের জন্য ২৯ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয় ডেপুটি সিভিল সার্জন মো. মোস্তফা মঈন উদ্দিনের নেতৃতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তারা ঐ দিনই তাড়াশ হাসপাতালে এসে তদন্ত কাজ শুরু করেন। এরই মধ্যে তদন্তের ২৭ দিন পেড়িয়ে গেছে। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারেননি তদন্ত কমিটি। এতদিনে ওষুধও উদ্ধার হয়নি। তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে হাসপাতালের স্টোর স্থানান্তরিত করা হয়। তারপর ওষুধের তথ্য হালনাগাদ করার সময় ওষুধ চুরির ঘটনা ধরা পড়ে। তাড়াশ বাজারের প্রবীর সরকার নামে একজন ওষুদের দোকানদার বলেন, প্রতিটি ট্রাইলক ওষুধের নির্ধারিত মূল্য ১৬ টাকা ও লুমনা ১৫ টাকা করে। অর্থাত ৫২ হাজার ৫৮৪টি ট্রাইলক ওষুধের দাম ৮ লাখ ৪১ হাজার ৩৪৪ টাকা। লুমনার দাম ট্রাইলকের চেয়ে ১ টাকা করে কম। এদিকে বিগত প্রায় ৬ মাস যাবৎ মন্টিলুকাস্ট গ্রুপের ট্রাইলক (১০) ও লুমনা (১০) ওষুধ হাসপাতাল থেকে রোগীদের দেওয়া হয়না। বিশেষ করে শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে শ্বাসকষ্টজনিত রোগী বেড়েছে। বাধ্য হয়ে ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খেতে হচ্ছে রোগীদের। আজমল হোসেন, রাহেলা খাতুন ও কোবাদ আলী নামের তিন জন শ্বাসকষ্টের রোগী বলেন, হাসপাতালের ডাক্তার ব্যবস্থাপত্রে ট্রাইলক ওষুধ লিখেছেন। কিন্তু হাসপাতালে মন্টিলুকাস্ট গ্রুপের ট্রাইলক (১০) বা লুমনা (১০) ওষুধ নাই। সাধারণত অধিকাংশ গরীব লোকজন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন। এত দামি ওষুধ কিনে খাওয়ার সামর্থ্য আমাদের অনেকের নেই। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে হাসপাতালের জন্য ওষুধ, সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি, গজ ব্যান্ডেজ তুলা ও আসবাবপত্র সরবরাহের জন্য ৪৩ লাখ টাকার কার্যাদেশ দেওয়া হয় ৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। তারপর এএ এন্টারপ্রাইজ ও আমেনা ট্রেডার্স মন্টিলুকাস্ট গ্রুপের ট্রাইলক (১০) ও লুমনা (১০) ওষুধ হাসপাতালে সরবরাহ করেন। ওষুধ গায়েবের বিষয়ে হাসপাতালের স্টোর কিপার শাহাদত হোসেনের বক্তব্য চাইলে স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার জন্য জানান। এরপর তিনি তড়িঘড়ি করে স্টোরের দড়জা লাগিয়ে আড়ালে চলে যান। ডেপুটি সিভিল সার্জন মো. মোস্তফা মঈন উদ্দিন বলেন, তদন্ত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার মো. রিয়াজুল ইসলাম ও সিরাজগঞ্জ বক্ষব্যাধি হাসপাতালের জুনিয়র কনসালট্যান্ট মো. ফারহান ইমতিয়াজ। ২৯ ডিসেম্বর তদন্ত কমিটি গঠনের পর ঐ দিনই তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। যা এখনও তদন্তাধীন। এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. রামপদ রায় দৈনিক খবরপত্রকে বলেন বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।