ই-কমার্স খাতের প্রতারণা রোধে সেন্ট্রাল কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিসিএমএস) প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষ এখন ডিজিটাল সুবিধা ভোগ করছে, ই-কমার্সের সুবিধা ভোগ করছে। ই-কমার্সের পরিধি অনেক বেড়ে গেছে, সঙ্গে সঙ্গে ডিজিটাল প্রতারণাও বৃদ্ধি পেয়েছে। ই-কমার্সে প্রতারণা রোধে আমাদের সকলকে সচেতন থাকতে হবে।’ গতকাল রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সেন্ট্রাল কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিসিএমএস) একটি কেন্দ্রীয় প্ল্যাটফর্ম যেখানে একজন ভোক্তা ই-কমার্স সংক্রান্ত যেকোনও যৌক্তিক অভিযোগ সহজে উপস্থাপন করে প্রতিকার গ্রহণ করতে পারবেন। প্ল্যাটফর্মটি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, ই-কমার্স স্টেকহোল্ডার, নথি সিস্টেম এবং বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি নিয়ন্ত্রক সংস্থার সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমন্বয় করার মাধ্যমে পরিচালিত হবে। সিসিএমএস বর্তমানে সবচেয়ে দ্রুত বিকাশমান ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির গ্রাহক সেবা নিশ্চিতকরণে এবং ভোক্তা অধিকার সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ই-কমার্স খাতের প্রতারণা রোধে সেন্ট্রাল কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিসিএমএস) প্ল্যাটফর্ম চালু করা হলো। আশা করা হচ্ছে, ই-কমার্সে এর সুফল পাওয়া যাবে। এ প্ল্যাটফর্মটি ভোক্তা, নিয়ন্ত্রক সমন্বয়ক এবং ই-কমার্স স্টেক হোল্ডারদের মাঝে সেতু হিসেবে কাজ করবে। করোনাকালে ই-কমার্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ ঘরে বসে নিজের প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পেরেছেন, এখনও পারছে। ই-কমার্সের পরিধি এখন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ই-কমার্সে মানুষের কেনা-কাটা যাতে নিরাপদ হয় এবং যে কোনও অনিয়মের প্রতিকার যাতে সহজেই পাওয়া যায়, সেজন্য সেন্ট্রাল কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম প্ল্যাটফর্ম চালু করা হলো। স্মার্ট বাংলাদেশে বিনির্মাণের আমাদের অনেক পথ পারি দিতে হবে। সততা ও দক্ষতার সাথে আমাদের নিজ নিজ অবস্থানে থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, ই-কমার্সের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। প্রয়োজন থেকেই আবিষ্কার হয়। করোনাকালীন আমাদের ই-কমার্সের খুবই প্রয়োজন ছিল। মানুষ ই-কমার্সের সেবা নিয়েছে, এর চাহিদাও অনেক বেড়েছে। ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম এখন মানুষের জীবন-যাত্রাকে সহজ করেছে এবং মান বদলে দিয়েছে। দেশের মানুষ বিভিন্ন সেক্টরে ডিজিটাল সুবিধা ভোগ করছে। ৯৯৯ নম্বর এর সুবিধা এখন সবাই ভোগ করছে। ডিজিটাল হাটে পশু ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪১ সালে স্মার্ট উন্নত বাংলাদেশ গড়তে আমরা সম্মিলিতভাবে কাজ করছি।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ই-কমার্স সেলের প্রধান সমন্বয়কারী মো. হাফিজুর রহমান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান, ই-কমার্স অ্যাসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার বক্তব্য রাখেন। এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী ভারতের বেঙ্গল চেম্বারের প্রেসিডেন্ট সুবির চক্রবর্তী’র নেতৃত্বে আগত ১০ সদস্যের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সাথে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ে মতবিনিময় করেন।