পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার আসামি দুবাইয়ের স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম আপনের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে ইন্টারপোল। বাংলাদেশ পুলিশ থেকে চিঠি দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই রেড অ্যালার্ট জারি হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। গতকাল সোমবার (২০ মার্চ) চট্টগ্রাম নগরের এনায়েত বাজার পুলিশ ফাঁড়ির নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইজিপি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, কিছুক্ষণ আগে জানতে পেরেছি, বনানীতে পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলায় যে নামে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে সে নামে তার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে দেওয়া চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ইন্টারপোল রেড অ্যালার্ট জারি করেছে।
তিনি আরও বলেন, আরাভ খানের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য ইন্টারপোলসহ বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ শুরু করেছি। তদন্তের স্বার্থে বিষয়টি নিয়ে সুস্পষ্টভাবে বলতে চাচ্ছি না। তারকারা কী কারণে সেখানে গিয়েছেন সে বিষয়টি আগামীতে স্পষ্ট হবে। অনেকেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যায়। এসব বিষয় আমরা অবজার্ভ করছি।
পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে আরাভের সম্পর্কের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ প্রধান সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা আমাদের নলেজে আসছে। আমরা খতিয়ে দেখছি। খতিয়ে দেখে উপযুক্ত সময়ে আমরা জানাবো। চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি সম্পর্কে আইপিজি বলেন, তিনি জামিন পেয়েছেন। আমি এটা বলতে পারি, কারও প্রতি কোনও অন্যায় করা হবে না। আইজিপি বলেন, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যারা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাচ্ছে তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে প্রতিটি ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। এ সময় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়সহ অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। ৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে এনায়েত বাজার পুলিশ ফাঁড়ির এই ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবনের মোট আয়তন ১০ হাজার ১৮০ বর্গফুট।
কে এই আরাভ খান : সম্প্রতি এ নিয়ে মুখ খুলেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অনেকেই। এই আরাভ খানই ২০১৮ সালে বনানী পুলিশের এসবি শাখার পরিদর্শক মামুনের হত্যাকারী। পরদিন তাঁর লাশ গাজীপুরের উলুখোলার একটি জঙ্গলে নিয়ে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই মামলার আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান সম্প্রতি আলোচনায় আসেন দুবাইয়ে ‘আরাভ জুয়েলার্স’ নামক একটি গয়নার দোকান উদ্বোধনে তারকাদের নিমন্ত্রণ জানিয়ে। ‘আরাভ জুয়েলার্স’ দোকানটির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ছিলেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, ইউটিউবার হিরো আলম, চলচ্চিত্র নির্মাতা দেবাশীষ বিশ্বাস, গায়ক ইসরাত জাহান জুঁই, আরফিন আকাশ, মাইনুল আহসান নোবেল, জাহেদ পারভেজ পাবেল, বেলাল খান ও রুবেল খন্দকার। আরাভ খানের পৈতৃক বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ ইউনিয়নের আশুতিয়া গ্রামে হলেও জন্ম বাগেরহাটের চিতলমারীতে। তার বাবা মতিয়ার রহমান মোল্লা চিতলমারীতে ফেরি করে অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়ি-পাতিল বিক্রি করতেন। আশুতিয়া গ্রামে রবিউলকে সবাই চেনে সোহাগ মোল্লা হিসেবে। আরাভ খানের সঙ্গে বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত কোনো কোনো পুলিশ কর্মকর্তার ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে। ওইসব অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মাঝে মাঝে দুবাই গিয়ে সময়ও কাটিয়ে আসেন। সোনার যে চালান বাংলাদেশে আসে সেইসব চালানে সাবেক ওই কর্মকর্তারা সহযোগিতা করে থাকে এমন অভিযোগের পর গোয়েন্দা পুলিশ তা তদন্ত করে দেখছে বলে জানা গেছে। রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের বিরুদ্ধে খুন, অস্ত্র, নারী ও শিশু নির্যাতন, প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাৎ, চোরাই মালসহ গ্রেপ্তারের মতো ১২টি মামলার তথ্য রয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে। মামলাগুলো রয়েছে ঢাকা, খুলনা ও চাঁদপুরের বিভিন্ন থানায়।
এত অল্প সময়ে এত ধন সম্পদ হলো কিভাবে: পুলিশ পরিদর্শক খুনের মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম এত অল্প সময়ে এত বিশাল ধন সম্পদের মালিক হলেন কিভাবে? তাকে নিয়ে রীতিমতো রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। দিনমজুরের ছেলে দুবাইয়ে কীভাবে হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক হলেন- সেই হিসাব মেলাতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন নিয়ে বিতর্কের পর থেকে দফায় দফায় নিজের পক্ষে সাফাই গেয়ে ফেসবুক লাইভে কথা বলেছেন আরাভ। কিন্তু কোথাও বিশাল সম্পদের উৎস নিয়ে কথা বলেননি। ফেসবুকে ঘুরছে তার কথোপকথন। দুবাইয়ে ‘আরাভ জুয়েলার্স’ উদ্বোধনের কিছুদিন আগে কোটালীপাড়া ছাড়েন আরাভের দুই বোন ও মা-বাবা। এলাকা ত্যাগের সময় স্থানীয়দের জানান, তারা দুবাই যাচ্ছেন। প্রশ্ন উঠেছে-স্বর্ণের দোকান উদ্বোধনের আগেই কি সম্ভাব্য বিতর্কের বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছিলেন আরাভ? তা নাহলে কেন তিনি পরিবারকে আগেভাগেই এলাকা থেকে সরিয়ে নিলেন? তা হলে কি দেশে বিদেশে তার আন্ডারওয়ার্ল্ডের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আগাম তার বিপদ আঁচ করতে পেরেছিলেন ?
ফেসবুক লাইভে এসে আরাভ বলেন, আমার অঢেল সম্পত্তি আছে ইন্ডিয়াতে, অঢেল। আমার দাদা যেহেতু ওই খানের নাগরিক ছিলেন এক সময়। তিনি ওখানেও বিয়ে করেছেন, এখানেও (বাংলাদেশ) করেছেন। সেই ক্ষেত্রে ইন্ডিয়াতে আমার যাতায়াত হয়। আমার কানাডিয়ান পাসপোর্ট আছে। শুধু কানাডিয়ান না, আমার আমেরিকার গ্রিন কার্ড আছে। এটা কোনো ইস্যু না। একটা মানুষের ১০টা পাসপোর্ট থাকতে পারে। কারণ আমার টাকা আছে আমি আমেরিকান পাসপোর্ট কিনব। তিনি বলেন, আমি আজকে থেকে বিজনেস করি না। যারা আমাকে চেনে তারা সবাই জানে, আমি আগে থেকে বিজনেস করি। কলকাতাতেও আমার বিজনেস আছে। সেখানে আমার রেস্টুরেন্ট আছে, হসপিটাল আছে। আমি বিজনেস করি, আর বিজনেস করলে অবশ্যই আমার কাছে টাকা থাকবে। আমি শুধু জীবনে একটা রিপোর্টই শুনেছি, যে আমি নাকি একটা মার্ডার করেছি। যেটা অনেক বড় একটা চক্রান্ত। আমি জানি চক্রান্তকারী কারা। আমি তাদের কিছু করতে পারব না! ওপরে আল্লাহ আছে তিনিই দেখবেন। আরাভ আরও বলেন, ২০১৮ সালে বনানীতে অফিস ছিল আমার। আপন বিল্ডার্স নামে রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা ছিল। ঘটনার দিন বাসায় ভাত খাচ্ছিলাম। আমার সহকারী ফোনে অফিসে খুনের বিষয়টি জানায়। যিনি খুন হয়েছেন তিনি একজন পুলিশ কর্মকর্তা। সেটি একটি দুর্ঘটনা ছিল। আর আমার অপরাধ ছিল আমি ওই অফিসের মালিক। সেখানে একটি জন্মদিনের অনুষ্ঠান ছিল। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ওই খুনের ঘটনা ঘটে।
আরাভ খানকে দেশে ফেরানোর সব চেষ্টা চলছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দুবাইয়ের সোনা ব্যবসায়ী আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলামকে দেশে ফিরিয়ে আনার সব চেষ্টা হচ্ছে। গত ১৮ মার্চ তেজগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠান যোগদান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এরই মধ্যে তাকে (আরাভ খান) ধরতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। তাকে দেশে ফেরাতে সব রকম চেষ্টা চলছে। তবে আরাভ যেহেতু ভারতীয় পাসপোর্টধারী সেক্ষেত্রে কোন আইনে ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে বাংলাদেশে ফেরত আনা হবে সে প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব দেননি মন্ত্রী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা অনেক কিছুই শুনেছি-জেনেছি। যেসব তথ্য আমাদের কাছে এসেছে, তা যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আলোচিত দুবাইয়ের সোনা ব্যবসায়ী আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলামকে চেনেন না বলে দাবি করেছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ দাবি করেন তিনি। সাবেক আইজিপি তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, সম্মানিত দেশবাসী, আমি আপনাদের সবাইকে আশ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভাবে নিশ্চিত করতে চাই যে, ‘আরাভ ওরফে রবিউল ওরফে হৃদয়’ নামে আমি কাউকে চিনি না। আমার সাথে তার এমনকি প্রাথমিক পরিচয়ও নেই। আমি আমার ল’ এনফোর্সমেন্ট ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় খুনি, সন্ত্রাসী, ড্রাগ ব্যবসায়ী, চোরাকারবারি, ভেজালকারী ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি কখনোই সখ্য নয়।
আরাভ খানকে বিদেশে পার করল কে: পুলিশ কর্মকর্তা মামুন এমরান খুনের আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানকে দুবাই থেকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পুলিশ এখন ইন্টারপোলের মাধ্যমে চেষ্টা করছে, রেড নোটিশ জারি করারও প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই সূত্রে কিছু জরুরি প্রশ্ন হচ্ছে; আসামি যখন দেশে ছিলেন, তখন পুলিশ কেন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারল না? কে বা কারা তাঁকে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন? সবচেয়ে গুরুতর প্রশ্ন হচ্ছে, দুবাই থেকে তিনি দুই দফা দেশে এসে ঘুরে গেলেও আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা তাদের গোয়েন্দারা কেন কিছুই জানতে পারলেন না?
২০১৮ সালের ৭ জুলাই ঢাকার বনানীর একটি ফ্ল্যাটে খুন হন পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুন এমরান। ওই মামলার অন্যতম আসামি রবিউল ইসলাম ভারতে পালিয়ে যান এবং সেখানে আরাভ খান নামে পাসপোর্ট করে দুবাই চলে যান। সেখানে গিয়ে যে তিনি নিজেকে লুকিয়ে রেখেছিলেন, এমন নয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তিনি সক্রিয় ছিলেন। কিন্তু পুলিশ খুনের একজন আসামি এরপরও কীভাবে পুলিশের জানার বাইরে থাকেন, সেটা সত্যিই বিস্ময়কর। সম্প্রতি দুবাইয়ে আরাভ খানের সোনার দোকানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ক্রীড়া ও চলচ্চিত্র অঙ্গনের কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানালে বিষয়টি অনেকের নজরে আসে এবং আলোচনা শুরু হয়।
মামুন হত্যা মামলায় ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ রহমত উল্লাহ, রবিউল ইসলামসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। রবিউল নিজে বাঁচতে চাঁদপুরের আবু ইউসুফ নামের এক যুবককে তাঁর পরিবর্তে আদালতে আত্মসমর্পণ করান। বিনিময়ে আবু ইউসুফকে নিয়মিত মাসোয়ারা দিতেন। প্রায় ৯ মাস জেল খেটে সত্য প্রকাশ করেন ইউসুফ। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে প্রথম আলো যেসব তথ্য দিয়েছে, তা ভয়ংকর। মামুন হত্যার ঘটনায় সে সময় ডিবি পুলিশ তাঁকে আটক করে। কিন্তু তিন দিন পর তাঁকে গ্রেপ্তার না দেখিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। ক্ষমতাসীন দলের তৎকালীন একজন প্রবীণ প্রভাবশালী নেতা এবং পুলিশের এক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শকের অনুরোধে ডিবি তাঁকে ছেড়ে দিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্মিলিত ব্যর্থতা ও স্বেচ্ছাচারিতাকে সামনে নিয়ে আসে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ করার কথা আইনের ভিত্তিতে। তারা কারও নির্দেশ বা অনুরোধে কোনো আসামিকে ছেড়ে দিতে পারে না। পুলিশ কর্মকর্তা মামুন হত্যার ক্ষেত্রে দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটাই ঘটেছে। যে প্রবীণ নেতা ও পুলিশ কর্মকর্তার অনুরোধে রবিউলকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করা এখন সরকারের দায়িত্ব। হত্যা মামলার আসামির দেশত্যাগের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। কিন্তু আরাভ খানের ঘটনা সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেছে। তিনি কার্যত দেশের আইনশৃৃঙ্খলা বাহিনীর শক্তি-সামর্থ্যকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষায় এখন আরাভ খান–সংক্রান্ত সবকিছুর রহস্যভেদ জরুরি। এটা স্পষ্ট যে শক্তিশালী কোনো মহলের আশীর্বাদ ছাড়া তাঁর পক্ষে এটা করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কাদের সহায়তা ও সমর্থনে পুলিশ খুনের আসামি রবিউল ইসলাম দেশ থেকে পালিয়ে আরাভ খানে পরিণত হয়েছেন, যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে তা খুঁজে বের করতে হবে। একই সঙ্গে আরাভ খানকে দুবাই থেকে দেশে ফেরত আনার প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে হবে। তাঁকে দেশে আনতে না পারলে তাঁর নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করা কঠিন হবে। আরাভ খান কীভাবে অঢেল সম্পদের মালিক হলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অবৈধভাবে অর্জিত বাংলাদেশি কারও টাকা রবিউলের মাধ্যমে দুবাইয়ে পাচার হয়েছে কি না, সেই তদন্ত সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করতে হবে।