শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩১ অপরাহ্ন

সর্বোচ্চ ১০ জনের অংশগ্রহণে জুমার নামাজ : ধর্ম মন্ত্রণালয়

খবরপত্র অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ৬ এপ্রিল, ২০২০

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বিস্তার রোধে সর্বসাধারণকে ইবাদত বা উপাসনা নিজ নিজ বাড়িতে পালনের নির্দেশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিচালনা কমিটিকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। কোনো প্রতিষ্ঠানে এই সরকারি নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে প্রশাসন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে মন্ত্রণালয়। সোমবার (৬ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এ-সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় ধর্ম মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ভয়াবহ মহামারি আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশে যথাযথভাবে সুরক্ষা নিশ্চিত করা না হলে ব্যাপক সংক্রমণ এবং বিপুল প্রাণহানির আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

‘করোনাভাইরাস মানুষের হাঁচি, কাশি, নিঃশ্বাস ও সংস্পর্শের মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যে সংক্রমিত হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সংক্রমিত ব্যক্তির দেহে রোগের উপসর্গ দেখা দেয়ার আগেই তার মাধ্যমে অন্যদের মধ্যে সংক্রমণ ঘটতে পারে। অনেকের মধ্যে ভাইরাসটি সুপ্ত অবস্থায় বিদ্যমান থাকে যার লক্ষণ দৃশ্যমান হয় না। পূর্ব থেকে সতর্কতা অবলম্বন না করলে এর বিস্তার রোধ অসম্ভব হয়ে পড়বে। এ রকম হতে থাকলে অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও ব্যাপক সংক্রমণ ও প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।’

ধর্ম মন্ত্রণালয় আরও বলছে, বিশ্বে এ পর্যন্ত এ রোগের কোনো প্রতিষেধক বা চিকিৎসা আবিষ্কৃত হয়নি। যে কারণে সরকার সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ করেছে এবং সামাজিক দূরত্ব বজার রাখার লক্ষ্যে দেশের সব নাগরিককে ঘরে থাকার কঠোর নির্দেশ প্রদান করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডাসহ ধর্মীয়প্রতিষ্ঠানে জনসমাগমের মাধ্যমে এ রোগের বিস্তার ঘটছে। আমাদের পাশ্ববর্তী দেশগুলোতেও এ ধরনের বিস্তার ও প্রাণহানির ঘটনার উদাহরণ বিদ্যমান।’

‘ইতোমধ্যে মুসলিম স্কলারদের অভিমতের ভিত্তিতে পবিত্র মক্কা মুকাররমা ও মদিনা মুনাওয়ারাসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশের মসজিদে মুসল্লিদের আগমন সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এ রোগের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রিত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডাসহ ধর্মীয়প্রতিষ্ঠানে সর্বসাধারণের আগমন বন্ধ রাখার জোর পরামর্শ দিয়েছেন’-বলেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিগত ২৯ মার্চ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আহ্বানে এ বিষয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমরা মিলিত হয়ে মসজিদে মুসল্লিদের উপস্থিতি সীমিত রাখার ব্যাপারে সর্বসম্মতভাবে আহ্বান জানিয়েছিলেন। তৎপরবর্তীতে পরিস্থিতি দ্রুত ভয়ঙ্কর অবনতির দিকে যাচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সকলের সঙ্গে পরামর্শক্রমে নিম্নোক্ত নির্দেশনা প্রদান করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়-

১. ভয়ানক করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধকল্পে মসজিদের ক্ষেত্রে খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমগণ ব্যতীত অন্য সকল মুসল্লিকে সরকারের পক্ষ থেকে নিজ নিজ বাসস্থানে নামায আদায় এবং জুমার জামাতে অংশগ্রহণের পরিবর্তে ঘরে জোহরের নামায আদায়ের নির্দেশ দেয়া যাচ্ছে।

২. মসজিদে জামাত চালু রাখার প্রয়োজনে সম্মানিত খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেম মিলে পাঁচ ওয়াক্তের নামাজে অনধিক ৫ জন এবং জুমার জামাতে অনধিক ১০ জন শরিক হতে পারবেন। জনস্বার্থে বাইরে মুসল্লি মসজিদের ভেতরে জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

৩. একইসঙ্গে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদেরকেও উপাসনালয়ে সমবেত না হয়ে নিজ নিজ বাসস্থানে উপাসনা করার জন্য নির্দেশ দেয়া যাচ্ছে।

৪. এ সময়ে সারাদেশে কোথাও ওয়াজ-মাহফিল, তাফসির মাহফিল, তাবলিগি তালিম বা মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা যাবে না। সবাই ব্যক্তিগতভাবে তেলাওয়াত, যিকির ও দুআর মাধ্যমে মহান আল্লাহর রহমত ও বিপদ মুক্তির প্রার্থনা করবেন।

৫. অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরাও এ সময়ে কোনো ধর্মীয় বা সামাজিক আচার অনুষ্ঠানের জন্য সমবেত হতে পারবেন না।

ধর্ম মন্ত্রণালয় বলেছে, সকল ধর্মের মূলনীতির আলোকে এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

এমআইপি/প্রিন্স/খবরপত্র




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com