চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ, সাবেক এমপি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট কবীর হোসেন।
গতকাল শুক্রবার (৫ মে) বেলা আড়াইটায় রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েণ্টে বড় রাস্তায় তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে হেতেমখাঁ গোরস্থানে দাফন করা হয়।
নামাজে জানাজায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল (অব:) শরীফ উদ্দিন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত ও ওবাইদুর রহমান চন্দন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা ও সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুন, রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারমান ও আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য মীর ইকবাল, মরহুম কবীর হোসেনের ছেলে নাসির হোসেন অস্থির, বিএনপির সাবেক এমপি নাদিম মোস্তফা, রাজশাহী মহানগর জাসদের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী, মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম স্বপন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম মার্শাল, জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী জেলা পূর্ব শাখার সেক্রেটারি নাজমুল হক, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়ালিউল হক রানা, আসলাম সরকার, জয়নাল আবেদিন শিবলী, শফিকুল ইসলাম শাফিক ও বজলুল হক মণ্টুসহ বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর বিভিন্ন স্তরের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মরহুমের জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু এবং বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এতে বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিনু ও রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপিকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে গেছেন অ্যাডভোকেট কবীর হোসেন। তিনি আমাদের অভিভাবক ছিলেন।
উল্লেখ্য, প্রবীণ রাজনীতিবিদ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট কবীর হোসেন গত বুধবার (৩ মে) দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
কবীর হোসেন স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি রাজশাহী নগরীর উপশহর এলাকার ৩ নম্বর সেক্টরের ১৭৩/৩ নম্বর বাড়িতে বসবাস করতেন। তার ইন্তেকালে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
কবীর হোসেনের ছেলে নাসির হোসেন অস্থির এর আগে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, দীর্ঘদিন থেকে তার বাবা বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। বাসায় রেখে চিকিৎসায় দেয়া হচ্ছিল। সোমবার (১ মে) পিত্তথলিতে জ্বালাপোড়া শুরু করলে তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়। কবীর হোসেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
কবীর হোসেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনবার এমপি নির্বাচিত হন। এর মধ্যে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে রাজশাহী-২ এবং ২০০১ সালে রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসন থেকে নির্বাচিত এমপি ছিলেন। প্রথমে ১৯৯১ সালে রাজশাহী সদর আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী এবং পরে তাকে ভূমি প্রতিমন্ত্রী করা হয়। পরে ২০০৮ সালের নির্বাচনে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসন থেকে মনোনয়ন পেয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মেরাজ উদ্দিন মোল্লার কাছে পরাজিত হন তিনি।