শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
খেলাধুলার মাধ্যমে মাদককে সমাজ থেকে বিতাড়িত করতে হবে-মাফরুজা সুলতানা মাইলস্টোন কলেজে নবম শ্রেণির বালিকাদের অংশগ্রহণে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত বিদেশি প্রভুদের নিয়ে বিতাড়িত স্বৈরাচার ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে: তারেক রহমান সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সুপারিশ  ‘বিবেচনায় রয়েছে’: বদিউল আলম ১৬ বছর বঞ্চিতদের এবার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বইমেলয় স্টল বরাদ্দের দাবি ইসির অগাধ ক্ষমতা থাকলেও প্রয়োগে সমস্যা ছিল: বদিউল আলম আমাদের শিক্ষা কর্মসংস্থান খোঁজার মানুষ তৈরি করছে, যা ত্রুটিপূর্ণ: প্রধান উপদেষ্টা সেন্টমার্টিন: ‘স্থানীয়দের জীবিকা বনাম পরিবেশ রক্ষা’ আ. লীগ-জাপা নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে কফিন মিছিল ১৫ বছরের জঞ্জাল সাফ করতে সময় লাগবে: মির্জা ফখরুল

বিজ্ঞানী মন্ত্রীর নেতৃত্বে বদলে গেছে কৃষি উৎপাদনে রেকর্ড

জহিরুল ইসলাম মিলন (ধনবাড়ী) টাঙ্গাইল :
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৪ মে, ২০২৩

খাদ্যশস্য উৎপাদনে রেকর্ড ৫০ বছরে উৎপাদন বেড়েছে চারগুণ সবচেয়ে বেশি সফলতা এসেছে শেষ এক দশকে খাদ্যের জন্য ধর্ণা দিতে হয় না শীর্ষ খাদ্য উৎপাদনকারী ১১ দেশের কাতারে বাংলাদেশ বিআর ২৮ ও ২৯ উদ্ভাবনই পাল্টে দিয়েছে কৃষির চেহারা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের কৃষিতেও ঘটেছে বিপ্লব। রেকর্ড হয়েছে অল্প জমিতে বেশি পরিমাণ খাদ্যশস্য উৎপাদনের। এই উৎপাদন বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে পরিবেশসহিষ্ণু উচ্চফলনশীল শস্যের জাত। বিশেষ করে, দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় ধানের জাত বিআর-২৮ ও বিআর-২৯ উদ্ভাবনই পাল্টে দিয়েছে কৃষির চেহারা। গত ৫০ বছরে দেশে খাদ্যশস্যের উৎপাদন বেড়েছে চারগুণ। ধান, গম ও ভুট্টার উৎপাদন বিশ্বের গড় উৎপাদনকে পেছনে ফেলে ক্রমেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশে। ফলে কৃষির অন্তত ৯টি ফসল উৎপাদনে শীর্ষ ১০ তালিকায় উঠে এসেছে দেশ। কৃষিতে বাংলাদেশের এই সাফল্যকে বিশ্বের জন্য উদাহরণ হিসেবে প্রচার করছে জাতিসংঘ। এই সংস্থাটি শীর্ষ খাদ্য উৎপাদনকারী ১১ দেশের কাতারে নিয়ে এসেছে বাংলাদেশকে। কৃষির সফল গবেষণার কারণেই এখন এক-ফসলি জমিতেও সারাদেশে আবাদ হচ্ছে গড়ে দুটি ফসল। এলাকাভেদে এ চাষাবাদ গড়িয়েছে তিন থেকে চার ফসলেও। এতে বিশ্বের গড় উৎপাদন হারকে পেছনে ফেলে জনসংখ্যার হিসেবে নবম স্থানে থাকা বাংলাদেশ খাদ্যে হয়ে উঠেছে স্বনির্ভর। ১৯৭১ সালে দেশে যেখানে দানাদার খাদ্যশস্য উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ১৮ লাখ টন, সেখানে ২০২১ সালে খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়েছে সোয়া ৪ কোটি টন। ফলে চাল উৎপাদনে বাংলাদেশ ভিয়েতনামকে পেছনে ফেলে উঠে এসেছে তৃতীয় স্থানে। সবজি ও মাছ উৎপাদনেও এই ৫০ বছরে ঘটে গেছে বিপ্লব। তাই তো জাতিসংঘের হিসাবেই মাছ ও সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান এখন তৃতীয়। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ এ্যান্ড এ্যাকুয়াকালচার ২০১৮-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বে অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ ৩য় স্থান এবং বদ্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে ৫ম স্থান অধিকার করেছে। ইলিশ উৎপাদনে প্রথম। খাদ্য উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ ১১ দেশের একটি বাংলাদেশ। আলু উৎপাদনে দেশ শুধু স্বনির্ভর নয়, বরং দেশের চাহিদা মিটিয়ে রফতানিরও চেষ্টা করা হচ্ছে। ফলে আলু উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে সপ্তম স্থানে উঠে এসেছে। প্রতি বছর এক শতাংশ হারে জমি কমলেও কৃষি পণ্যের উৎপাদন বেড়েছে গাণিতক হারে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও বৈরী প্রকৃতিতেও খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উদাহরণ। ধান, গম ও ভুট্টার উৎপাদন বিশ্বের গড় উৎপাদনকে পেছনে ফেলে ক্রমেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, বিশ্বজুড়ে প্রতি হেক্টরে শস্যের গড় উৎপাদন হার যেখানে প্রায় তিন টন, সেখানে বাংলাদেশে তা সোয়া চার টনে উন্নীত হয়েছে। ৫০ বছরে বাংলাদেশে ধানের উৎপাদন বেড়েছে তিন গুণেরও বেশি। গমের উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছে। সবজি উৎপাদন বেড়েছে পাঁচ গুণ। ভুট্টার উৎপাদন বেড়েছে ১০ গুণ। স্বাধীনতার আগে বেশি পরিমাণ জমি চাষাবাদে মিলত কম ফসল। ফলে তখনকার সাড়ে ৭ কোটি মানুষের বেশিরভাগেই তিন বেলা দু’মুঠো খাবার জোটানো কষ্টকর হতো। পূর্ববঙ্গের প্রতি বছর গড়ে খাদ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াত প্রায় ২০ লাখ টন। আর ওই ঘাটতি পূরণ করা হতো বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে খাদ্য আমদানির মাধ্যমে। সময় বদলে এখন কম জমিতে বেশি ফসল উৎপাদন করে দ্বিগুণেরও বেশি মানুষকে খাওয়ানোর সক্ষমতা অর্জন করেছে দেশ। ১৭ কোটি মানুষের খাদ্যের জোগানের পরও উদ্বৃত্ত থাকছে খাদ্যশস্য। বাংলাদেশকে এখন আর পৃথিবীর কোন রাষ্ট্রের কাছে খাদ্যের জন্য ধর্ণা দিতে হয় না। এদেশে খাদ্য সাহায্য নব্বইয়ের দশকেই বন্ধ হয়ে গেছে। কৃষিতে বাংলাদেশের এই সাফল্যকে বিশ্বের জন্য উদাহরণ হিসেবে প্রচার করছে জাতিসংঘ। কৃষিতে এই সাফল্যের বীজ বপন করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতা উত্তর খাদ্য ঘাটতির বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করার জন্য তিনি গ্রহণ করেন নানা উদ্যোগ। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য তিনি ডাক দেন সবুজ বিপ্লবের। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেন কৃষিতে। তার এই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় কৃষকন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক (এমপি) রাজ্জাক নিজে আমেরিকার পারডু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করা কৃষিবিজ্ঞানী। আমেরিকা ও জাপানের কৃষি প্রকৌশল নিয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা পরিষদের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে কৃষির যে বীজ বপন করেছিলেন তার ‘পূর্ণাঙ্গ সুফল’ পেতে দীর্ঘ ৩৫ বছর লেগে যায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগকে সাথী করে বাংলাদেশ ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে এসে খাদ্যে স্বয়ং-সম্পূর্ণ হওয়ার স্বাদ পায়। বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো পরিণত হয় খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে। এই অর্থবছরে দেশে অতিরিক্ত খাদ্যশস্য উৎপাদিত হয় এক লাখ ৪৬ হাজার টন। ওই বছর তিন কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার টন খাদ্যশস্যের চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন দাড়ায় তিন কোটি ২৮ লাখ ৯৬ হাজার টন। অর্থাৎ প্রায় এক লাখ টনের বেশি খাদ্যশস্য উদ্বৃত্ত হয়। এরপর বাংলাদেশকে খাদ্যশস্য উৎপাদনে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। খাদ্য উদ্বৃত্ত কেবল সুসংহতই হয়েছে। সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে খাদ্যশস্য উৎপাদিত হয় ৪ কোটি ৫৫ লাখ টন। এর মধ্যে বোরো চাল-ই উৎপাদিত হয়েছে ২ কোটি টনের বেশি, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com