শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:১৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ছাতকের বিভিন্ন কোয়ারি থেকে লিজ ছাড়াই বালু উত্তোলন ও বিক্রির অভিযোগ নড়াইলের কালিয়ার কৃষক কায়কোবাদ সিকদার শীতকালীন উচ্চ ফলনশীল টমেটো চাষে লাভের আশাবাদী কুনিয়া বড়বাড়ির হাজী আবুল হাসেম সরকার একাডেমীর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা তারাকান্দায় তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ ধনবাড়ীতে জনপ্রিয় হচ্ছে রঙিন ফুলকপি চাষ মৃৎশিল্পীদের জীবনসংগ্রাম: গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য বিলুপ্তির পথে গঙ্গাচড়ায় ধামুর পূর্বপাড়া বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ বিনা চাষে সরিষা আবাদ রিলে পদ্ধতিতে নতুন সম্ভাবনা, আগামীতে বাড়বে আরো উৎপাদন রায়গঞ্জে দেড়াগাঁতী রুদ্রপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫৪তম বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা দৌলতখান সরকারি আবু আব্দুল্লাহ কলেজে বার্ষিক ক্রীড়া, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ

আওয়ামী লীগপন্থী অন্তত ১০টি ধর্মভিত্তিক দলে অসন্তোষ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৬ মে, ২০২৩

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগপন্থী অন্তত ১০টি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের জোট গঠনের উদ্যোগের শুরুতেই ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। গত শনিবার ১৩ মে রাজধানীর ধানমন্ডির একটি রেস্টুরেন্টে ৯টি দলের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে ‘জোট গঠন প্রক্রিয়ার প্রাথমিক ধাপ’ সম্পন্ন করলেও এই জোট সহসাই কার্যকর হচ্ছে না। এরইমধ্যে জোটের একমাত্র নিবন্ধিত দল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদীর নেতৃত্বাধীন ‘ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ’ প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকটি দল নিজেদের সমর্থন সরিয়ে নিতে পারে।
জোট গঠনের সঙ্গে যুক্ত একাধিক দলের মহাসচিব সঙ্গে আলাপকালে জানিয়েছেন, গত শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডির ২৭ নম্বরের একটি রেস্টুরেন্টে বৈঠকে রাত ৮টা থেকে প্রায় ১২টা পর্যন্ত জোট-প্রক্রিয়ায় যুক্ত ৯টি দলের শীর্ষ নেতারা অংশগ্রহণ করেন। ওই বৈঠকে জোটের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান, নির্বাহী চেয়ারম্যান, সমন্বয়ক ও মুখপাত্র নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এসব পদে কে বা কারা বসবেন এ নিয়ে এরইমধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
জোট গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত নেতারা জানান, অন্তত তিন মাস ধরে সাবেক সংসদ সদস্য এম এ আউয়াল, মাওলানা বাহাদুর শাহ, মিছবাহুর রহমান চৌধুরী, সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ আল হাসানী সম্মিলিতভাবে একটি সরকারপন্থি জোট গঠনের চেষ্টা করছেন। যদিও শেষ দিকে এসে জোটের নেতৃত্ব নির্ধারণ নিয়ে বিরোধে সটকে পড়েন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মাওলানা বাহাদুর শাহ। গত রবিবার (১৪ মে) এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ বাহাদুর শাহ বলেন, ‘যাদের সঙ্গে জোট করবো, তাদের বেশিরভাগ দলের সাংগঠনিক ভিত্তি নেই। সম্ভাব্য জোটের একমাত্র নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ। এরপরও জোটের নেতৃত্বে তারা নিবন্ধিত দলের মূল্যায়ন করতে পারছে না। তাদের সঙ্গে মিলবে না, তাই জোটে নেই আমি।’
জোট গঠনের সঙ্গে যুক্ত একাধিক সিনিয়র নেতা দাবি করেন, মূলত মিছবাহুর রহমান চৌধুরী চেয়ারম্যান হওয়ার পাশাপাশি জোটের মুখপাত্র বা সমন্বয়কের পদ চাইছেন। এ বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি বাহাদুর শাহ। পাশাপাশি জোট গঠনের শুরু থেকেই প্রক্রিয়ায় অগ্রণী ভূমিকা রাখা ইসলামি গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এম এ আউয়ালকে গুরুত্বপূর্ণ কোনও পদে রাখার কথা থাকলেও রহস্যজনক কারণে তাকে কো-চেয়ারম্যান করা হচ্ছে, এ বিষয়টিও জোটের অনেকে মেনে নিতে পারছেন না।
এম এ আউয়াল প্রায় ১৮ মাস কারাগারে ছিলেন একটি হত্যা মামলার আসামি হিসেবে। এর আগে বিগত ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও আওয়ামী লীগ সমর্থিত একটি জোট করেছিলেন তিনি। সেই জোটের চেয়ারম্যান ছিলেন মিছবাহুর রহমান চৌধুরী। কো-চেয়ারম্যান ছিলেন এম এ আউয়াল। বর্তমানে সেই জোট বিলুপ্ত। ওই জোটের ১১টি দলের সমন্বয়ে পরে ইসলামিক গণতান্ত্রিক পার্টি গঠন করেন এম এ আউয়াল। সম্ভাব্য নতুন জোট গঠনের আগেই ভাঙনের বিষয়ে জানতে চাইলে রবিবার সন্ধ্যায় এম এ আউয়াল বলেন, ‘আমরা ধর্মীয় মূল্যবোধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ইসলামি সমমনা রাজনৈতিক দলের ঐক্যের সূচনা করেছি। দীর্ঘদিন ধরে আমরা কাজ করছি। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে এই জোট গঠনের কার্যক্রম অনেকটাই গুছিয়ে এনেছি আমরা।’
মাওলানা বাহাদুর শাহের প্রস্থান প্রসঙ্গে সাবেক সংসদ সদস্য এম এ আউয়াল বলেন, ‘কেউ কেউ নানা কারণে দ্বিমত প্রকাশ করলেও আমি চাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসিক্ত ইসলামি দলগুলো সমন্বিত ভূমিকা রাখবে। সে ক্ষেত্রে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকলেও আমরা তা অতিক্রম করতে পারবো বলে আশা করি।’
প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত একাধিক নেতা মনে করেন, মূলত মিছবাহুর রহমান চৌধুরী, বাহাদুর শাহ, এম এ আউয়াল ও সৈয়দ সাইফুদ্দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান কে হবেনÍএ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। তবে তারা এ প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে মন্তব্য থেকে বিরত রয়েছেন।
আরেকজন নেতা জানান, মূলত মিছবাহুর রহমানকে নেতৃত্ব দেওয়া নিয়ে বাহাদুর শাহের চরম আপত্তি রয়েছে। জোটের আরেকটি সূত্র দাবি করেছে, মাইজভান্ডার দরবার শরিফের পীর সৈয়দ সাইফুদ্দিন আল হাসানীকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে। তবে জোটের অন্যান্য পদ পূরণ না হওয়ায় বিষয়টি ঘোষণা করা হয়নি।
জোট গঠনের প্রক্রিয়ার সঙ্গে যে ১০টি দল রয়েছে সেগুলো হলোÍ বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট (মিছবাহুর রহমান চৌধুরী), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (সৈয়দ সাইফুদ্দিন মাইজভান্ডারী), ইসলামিক গণতান্ত্রিক পার্টি (এম এ আউয়াল), কৃষক শ্রমিক জনতা পার্টি (ফারহানাজ হক), আশেকানে আওলিয়া পরিষদ (আলম নুরী সুরেশ্বরী), গণ আজাদী লীগ (সৈয়দ শামসুল আলম হাসু তর্কবাগীশ-আতাউল্লাহ খান), জনদল (মাহবুবুর রহমান), তরিকত ফ্রন্ট (মুফতি মেহেদী হাসান), নেজামে ইসলাম পার্টি (মাওলানা হারিসুল হক)। আর বেরিয়ে গেছে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ (বাহাদুর শাহ)।
এই দলগুলোর বেশ কয়েকজন নেতা জানান, সোমবার (১৫ মে) সন্ধ্যার পর আবারও জোট গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে।
জানতে চাইলে জোটের শরিক সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমেদ আল হাসানী বলেন, ‘মাওলানা বাহাদুর শাহ কালকের (শনিবারের) বৈঠকে আসেননি। তিনি কন্ডিশন দিয়েছেন তাকে চেয়ারম্যান করতে হবে। তো আমাদের মধ্য থেকে মিছবাহুর রহমান চৌধুরী বিষয়টিতে রাজি হননি। তিনি মনে করেন, আমাদের জোটে সব দলের মতামতের ভিত্তিতে চেয়ারম্যান হবে। পরে জোটের সবার মতামতের ভিত্তিতে আমাকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে।’ সাইফুদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘আগামীকাল সোমবার জোটের পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের বৈঠক রয়েছে। সেই বৈঠকে বাকি সবকিছু চূড়ান্ত করা হবে।’ এ বিষয়ে জানতে চেয়ে ফোন করা হলেও মিছবাহুর রহমান চৌধুরীকে পাওয়া যায়নি। প্রসঙ্গত, সম্ভাব্য জোটের নাম, ঘোষণাপত্র, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য কিছুই প্রস্তুত করা হয়নি বলে ৯টি দলের একাধিক নেতা জানান।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com