নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অব.) বলেছেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের (হাতপাখা) মেয়র প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের গায়ে যে হাত তুলেছে তাকে শাস্তি পেতেই হবে। কোনো ছাড় দেয়া হবে না। প্রথমে তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে বলেছি। এরপর তাদেরকে কঠিন শাস্তি দেয়া হবে। গতকাল সোমবার দুপুরে নির্বাচন ভবনে সিসি ক্যামেরায় বরিশাল সিটি নির্বাচনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের সময় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
বরিশাল নগরের চৌমাথা এলাকায় হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। ফয়জুল করীমের বরাত দিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মিডিয়া উপ-কমিটির সদস্য কে এম শরীয়াতউল্লাহ জানান, ছাবেরা খাতুন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার পর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথার কাছে ৩০ থেকে ৪০ জন নৌকা সমর্থক তার ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এ সময় তারা লাঠিসোটা ও পাথর ব্যবহার করেন। তার সঙ্গে থাকা বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী এ সময় আহত হন। চরমোনাই পীর সৈয়দ রেজাউল করীমের ছোট ভাই হচ্ছেন সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম।
বিষয়টি নিয়ে ইসির ভূমিকা জানতে চাইলে মো. আহসান হাবিব খান বলেন, আকস্মিক ঘটনা ছাড়া সবকিছু সুন্দর। সাংবাদিকরাই লাইভে এমন বললো।
দেখে ভালো লাগল। আমরা আশ্বস্ত হলাম, যে এভরিথিং ইজ ফাইন। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কখনোই কাঙ্ক্ষিত ছিল না। কিন্তু একটা সিচ্যুয়েশনের মধ্যে হঠাৎ করে একজন প্রার্থীর গায়ে হাত তুলেছে বলে আমরা জেনেছি। যারা যারা এটার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদেরকে প্রথমে গ্রেপ্তার, তারপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পুলিশ কমিশনার, রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসকসহ সবাইকে বলেছি। বর্তমানে বরিশালের পরিস্থিতি শান্ত এবং স্বাভাবিক। প্রত্যেকটা কেন্দ্রে সুন্দরভাবে সবাই নিজেদের ভোট নিজেরো প্রয়োগ করছে। আমাদের প্রত্যেকটা স্টেপস আর কাউন্টেড। আমরা সুন্দরভাবে এটাকে ম্যানেজ করতে সক্ষম হয়েছি।
চরমোনাই পীরের সমর্থকরা ওই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বরিশাল সিটিতে ঢোকার চেষ্টা করছে, বিষয়টি নজরে আনলে তিনি বলেন, এই ঘটনা ম্যানেজ করে প্রতিহত করা হয়েছে। এখন এমন কোনো ঘটনা ওখানে নেই।
বাড়তি নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, ওখানে র্যাব, বিজিবি, পুলিশ সবাইকে নিয়োজিত করে বিশেষ করে নদীর ওপাশ থেকে যারা আসছিল, নৌ-পুলিশ (কোস্টগার্ড) দিয়ে তাদেরকে প্রতিহত করা হয়েছে, তারা যেন এখানে ঢুকে বিশৃঙ্খলা না সৃষ্টি করতে পারে। যেই ব্যক্তি এই অন্যায় করেছে, তাকে উচিত শাস্তি পেতেই হবে। এতে আমাদের তরফ থেকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এভাবেই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এখন পর্যন্ত ৩০ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ৪০ শতাংশের মতো ভোট কাস্ট হতে পারে। যদিও এই কমিশনার সকালে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ভোটার উপস্থিতি অনেক বেশি হবে। কোনো কোনো কেন্দ্রে এটা ৫০ শতাংশ হতে পারে।
সিসি ক্যামেরা কাজ করছে না অনেকে কেন্দ্রে, বিষয়টির কারণ জানতে চাইলে এই কমিশনার আরো বলেন, ইন্টারনেটের ব্যান্ডউইথের কারণে লাইভ করা বিঘিœত হলেও ক্যামেরায় সব রেকর্ড হচ্ছে। সিসি ক্যামেরায় থাকায়-ই দুষ্কৃতিকারীদের জন্য হুমকি।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মো. আহসান হাবিব খান বলেন, ভোটের এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। বরিশালের টোটাল ভোটকেন্দ্রগুলো, বরিশাল শহর পুরোটাই প্রকেক্টেড।