বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) বহরে প্রায় ১৬০০ বাস আছে। এরমধ্যে বর্তমানে সচল রয়েছে এক হাজারের মতো। আর বাকি ৬০০ বাস পড়ে রয়েছে বিভিন্ন ডিপোতে, যার অধিকাংশই অকেজো। সচল বাসের মধ্যে প্রায় ৪৫০টি ভাড়ায় ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন অফিসের স্টাফ এবং বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষার্থীদের আনা-নেওয়ার কাজে। সিটি সার্ভিসের পাশাপাশি দেশের ১৬৩টি রুটে ৪২০টি বিআরটিসি বাস চলাচল করছে।
বিআরটিসি বলছে, সচিবালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের অফিসে যাতায়াতের সুবিধার্থে ১৬৪টি রুটে তাদের ২০২টি স্টাফ বাস হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ১৮১টি বাস নিয়মিত চলাচল করছে।
এদিকে রাজধানীর উত্তরা মতিঝিল ও মোহাম্মদপুরে চক্রাকার বাস সার্ভিসের আওতায় চলছে সাতটি বাস। বাংলাদেশ ও ভারত সরাসরি বাস সার্ভিসের আওতায় পাঁচটি বাস চলাচল করছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামে নারীদের জন্য বিআরটিসির ৯টি বিশেষ বাস সার্ভিস চালু রয়েছে। এছাড়া ছাত্রছাত্রীদের স্বল্প ভাড়ায় ও নিরাপদে যাতায়াতের সুবিধার্থে ঢাকায় শহীদ রমিজ উদ্দিন স্কুল রুটে একটি বাস ও চট্টগ্রাম শহরের শিক্ষার্থীদের জন্য কম ভাড়ায় ও নিরাপদে যাতায়াতের জন্য ১০টি বিআরটিসি বাস স্টুডেন্ট সার্ভিস হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।
বিআরটিসি আরও জানায়, সারা দেশে ২২টি বাস ডিপো, দুটি ট্রাক ডিপো, দুটি যানবাহন মেরামত কারখানা, চারটি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ও ১৯টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে বিআরটিসির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সড়কে দুর্ঘটনা কমাতে চালক ও কন্ডাকটরদের নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হচ্ছে। ডিপোতে কর্মরত কর্মচারীদের নীতি-নৈতিকতা এবং মানোন্নয়ন বাড়াতে বিভিন্ন সময় শুদ্ধাচার বিষয়ক অনুষ্ঠান, কর্মসূচি ও সভার আয়োজন করা হচ্ছে। দৈনন্দিন হালকা মেরামতসহ ভারী মেরামতের অপেক্ষায় থাকা বাস মেরামত করে অনরুট করা হয়েছে। তথ্য বলছে, মতিঝিল বাস ডিপোতে ২০৪টি বাসের মধ্যে সচল ১২৭টি। কল্যাণপুর বাস ডিপোতে গাড়ির সংখ্যা ২১৪টি, তার মধ্যে সচল বাস ১৪১টি। বড় ধরনের মেরামতে আছে তিনটি। বি অন ইকোনমিক্যাল রিপেয়ার বা বিইআর-এর আওতায় অকেজো বাস আছে ৫০টি।
বিটিআরসি বিভিন্ন মেয়াদে গাড়ি লিজ দেয়। যে কেউ তাদের কাছ থেকে লিজ নিতে পারেন। পাঁচ বছর থেকে ১০ বছর মেয়াদি লিজ দেয়। সংস্থাটি জানায়, লং লিজে পরিচালিত ২০টি বাসের মধ্যে তিনটি বাস ব্যক্তিমালিকানায় চলাচল করছে। বাকি ১৭টি বাস ডিপোর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এদিকে গাবতলী বাস ডিপোতে মোট গাড়ির সংখ্যা ৬৪টি, এরমধ্যে সচল বাস ৬৩টি। মিরপুর বাস ডিপোতে গাড়ির সংখ্যা ১৪২টি। তার মধ্যে সচল ১২২টি। মোহাম্মদপুর বাস ডিপোতে ৩৩টি গাড়ি রয়েছে। সবগুলোই সচল অবস্থায় আছে।
বিআরটিসির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, বিআরটিসিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠান করার পাশাপাশি সেবার মান সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে দিতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তার ফলে আয় বেড়েছে, ব্যয় কমানো সম্ভব হয়েছে। গাজীপুরের সমন্বিত কেন্দ্রীয় মেরামত কারখানাটি আবার চালু করাসহ তেজগাঁও কেন্দ্রীয় মেরামত কারখানাটিকে যুগোপযোগী ও আধুনিকায়নের লক্ষ্যে কাজ চলছে।-বাংলাট্রিবিউন