রুপিতে লেনদেন করলে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশই উপকৃত হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা।
গতকাল মঙ্গলবার (১১ জুলাই) রুপিতে লেনদেন কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যের নতুন অধ্যায় চালু উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ভারতীয় হাইকমিশনের যৌথ আয়োজনে ঢাকার লা মেরিডিয়ান হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, ডেপুটি গভর্নর, বিভিন্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), ভারতীয় হাইকমিশনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশ নেন। এছাড়া, ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য রয়েছে এমন ব্যবসায়ীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়।
ভারতীয় হাইকমিশনার আরও বলেন, রুপিতে লেনদেন চালু হলে অন্য মুদ্রায় দায়-দেনা মেটানোর জটিলতা দূর হবে। এটি ব্যবসায়ীদের জন্য আরও সহায়ক হবে। এর ফলে দুই দেশের বাণিজ্য আরও বাড়বে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, রুপিতে লেনদেনের ফলে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের খরচ কমবে। ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি আরও সহজ হবে।
এদিন বাংলাদেশ ও ভারতের ব্যবসায়ীদের রুপিতে লেনদেন কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এর মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় লেনদেনে নতুন মাত্রা যুক্ত হলো। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যক্ষেত্রে এখন থেকে ব্যবহার হবে ভারতীয় মুদ্রা রুপি। এর ফলে কোনো ব্যাংক বা ব্যবসায়ী ডলার কিংবা অন্য কোনো বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে রুপি কিনে আমদানি দায় নিষ্পত্তি করতে পারবে না। বাংলাদেশ অংশে সোনালী, ইস্টার্ন ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে এ বাণিজ্য হবে। ভারতের অংশে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং আইসিআইসিআই ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন হবে।
রুপিতে যেভাবে লেনদেন: রুপিতে লেনদেন করতে ভারতের ব্যাংকের সঙ্গে নস্ট্রো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করবে বাংলাদেশের ব্যাংক। যেসব পণ্য ভারতে রপ্তানি করা হয়, সেসব বিল নস্ট্রো অ্যাকাউন্টে জমা থাকবে। পণ্য আমদানির পর ওই অ্যাকাউন্টে যে রুপি জমা থাকবে, সেখান থেকে রুপির মাধ্যমে আমদানি ব্যয় পরিশোধ করা হবে। দুই দেশের চারটি ব্যাংকের মাধ্যমে এই লেনদেন চালু হতে যাচ্ছে। সেগুলো হচ্ছে বাংলাদেশের সোনালী ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক এবং ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও আইসিআইসিআই।
প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের সোনালী, ইস্টার্ন ও ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে রুপিতে লেনদেন করতে পারবেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। ভারত অংশে এ-সম্পর্কিত বিষয়ের দায়িত্বে থাকবে দেশটির আইসিআইসি ব্যাংক ও স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া। রুপিতে লেনদেনের চাহিদা বাড়লে পর্যায়ক্রমে অন্য ব্যাংককেও অনুমতি দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ইতোমধ্যে ব্যাংকগুলোকে ঋণপত্র নিষ্পত্তির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।