রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫২ অপরাহ্ন

সরকার পতনের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে : রিজভী

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৫ জুলাই, ২০২৩

সরকার পতনের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আমাদের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দেশ রক্ষার আন্দোলন শেষ পর্যায়ে রয়েছে। শেখ হাসিনার পতনের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে। সামনে যেসব কর্মসূচি আসবে, সেখানে প্রত্যেকটি দেশপ্রেমিক ও গণতন্ত্রকামী মানুষ অংশগ্রহণ করবেন। আমি মনে করি, রাজপথ আর কয়দিন দখলে রাখলে শেখ হাসিনার পতন অনিবার্য। আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি। গতকাল শুক্রবার দুপুরে খুলনা মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ) আয়োজিত খুলনা বিভাগে বিএনপির গুম, খুন, নির্যাতিত অসহায় ও অসচ্ছল নেতাকর্মীদের সন্তানদের শিক্ষা-উপবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, আজ শেখ হাসিনার শিক্ষা ব্যবস্থা হলো খাতায় কিছু না লিখেও পাস করিয়ে দেয়া। দুই কলম লিখলেই এ প্লাস দেয়া হচ্ছে। গোটা দেশকে মিথ্যার মডেল তৈরি করেছেন শেখ হাসিনা।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সফরে আসা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের আন্ডার সেক্রেটারির কাছে শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি নাকি ১৪ বছর ধরে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করছেন। আসলে কাউকে যদি মিথ্যা শিখতে হয়, কোথাও যাওয়ার দরকার নেই। প্রতিদিন শেখ হাসিনাকে অনুসরণ করলেই হবে। দিনের ভোট রাতে করে ভোটের যে পরিণতি করেছেন সেটা কী? এটা হলো শেখ হাসিনার মিথ্যার মডেল।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে গুম খুন করার জন্য সাজিয়েছেন। সমাজে তিনি আতঙ্ক তৈরি করেছেন। কিন্তু এসব বলে তিনি যে তামাশার চরিত্র হয়ে উঠছেন, সেটা বুঝতে পারছেন না। জেডআরএফ-এর শিক্ষাবৃত্তি প্রকল্প উপ-কমিটির আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে ও কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেডআরএফ-এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, বিএনপির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, কেন্দ্রীয় শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, ছাত্রবিষক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, সহ-প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক ও জেডআরএফ-এর কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, জেডআরএফ-এর রিহ্যাবিলিটেশন কমিটির আহ্বায়ক ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা, খুলনা জেলা বিএনপির সভাপতি আমীর এজাজ খান প্রমুখ।
গত বুধবার ঢাকার সমাবেশ প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, মাত্র তিন দিনের প্রস্তুতিতে তারেক রহমানের আহ্বানে নয়া পল্টনে জনগণের স্রোত আপনারা দেখেছেন। সেখানে নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ ছুটে এসেছিলেন। শত বাধা দিয়ে তাদেরকে আটকানো যায়নি। তিনি আরো বলেন, অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শান্তি সমাবেশ করেছে। সেখানে হয়েছে চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ি। আবার নাম দিয়েছে শান্তি সমাবেশ। এ যেন ৭১-এর সেই পিস কমিটির কথাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। আর ঢাকা দক্ষিণের মেয়র তাপস বলছেন, তারা আগামী নির্বাচনে ঢাকা দখলে রাখবেন। মানে শেখ হাসিনার নির্বাচনের রোডম্যাপ তিনি বলে দিয়েছেন। তারা ঢাকা দখল করে সুষ্ঠু ভোট করবেন! এই হলো শেখ হাসিনার সুষ্ঠু নির্বাচনের নমুনা। বিএনপির এই নেতা বলেন, এরা (আওয়ামী লীগ) দেশকে চরম সঙ্কট ও বিপদে ফেলে দিয়েছে। দেশে গণতন্ত্র নেই। তলে তলে অর্থনীতি শেষ। ব্যাংকে এলসি খোলারও টাকা নেই।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে স্বৈরাচার বারবার আসন গেড়ে বসেছে। দুঃশাসনের মধ্যে জনগণকে বন্দি করে রাখা হয়। তাই তো গণতন্ত্রকামী মানুষকে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে হয়। আজ দেশে গণতন্ত্রের সুবাতাস ও জনগণের মালিকানা থাকলে রাজনীতি হতো মানবকল্যাণের জন্য। সেই পরিস্থিতি রাখেনি এরশাদরা, শেখ হাসিনারা।
জেডআরএফের শিক্ষাবৃত্তির প্রশংসা করে রিজভী বলেন, এটি অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আমরা এখন ঘোর দুর্দিন অতিক্রম করছি। নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হচ্ছি। জেলে যাচ্ছি-ফিরে আসছি। উৎপীড়ন ও জুলুমের মধ্যে আছি। নেতাকর্মীরা অনেকেই এখনো কারাগারে বন্দী। আমরা যেন বন্দীশালায় আছি। সন্ত্রাসীদের আঘাতে আমাদের নেতাকর্মীদের এখনো কারো হাত যাচ্ছে, পা যাচ্ছে, গুলিতে বুক ঝাঁঝরা হয়ে গেছে। পুলিশে ছোঁড়া গুলিতে অনেকের চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। এসব নির্যাতিত নেতাকর্মীদের জন্য জেডআরএফ যে ধরনের মানবসেবার ব্রত নিয়ে কাজ করছে এটা অতুলনীয়। এ ধরনের কাজের মধ্য দিয়েই জিয়াউর রহমান জনগণের হৃদয়ে স্থান নিয়েছেন। এর সাথে জড়িত যারা অবদান রেখে চলেছেন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। জেডআরএফের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার বলেন, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আমরা নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছি। বন্যা, শীতসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে শুরু করে মানবিক বিপর্যয়ে জেডআরএফ ছুটে গেছে মানুষের পাশে। যার প্রমাণ মহামারী করোনা ভাইরাসের সময় দেশবাসী জেডআরএফকে পাশে পেয়েছে। এসবের পেছনে যিনি মূল ভূমিকা পালন করছেন তিনি হলেন- জেডআরএফ-এর প্রেসিডেন্ট ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আমরা বিএনপির নির্যাতিত নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের পাশে দাঁড়িয়েছি। এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সহ-সম্পাদক ডা. পারভেজ রেজা কাকন, জেডআরএফ-এর নেতা ডা. এ এস হায়দার পারভেজ, ডা. মাসুদ আকতার জীতু, ডা. মো: মেহেদী হাসান, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মো: শামীম, অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, অধ্যাপক নাজমুস সাদাত শুভ, অধ্যাপক ড. মামুন অর রশিদ, অধ্যাপক তোজাম্মেল হোসেন, অধ্যাপক ড. আবু জাফর খান, অধ্যাপক ইদ্রিস, খুলনা জেলা বিএনপির সেক্রেটারি মনিরুল হাসান বাপ্পিসহ স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com