আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভোট চুরি করতেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ ও ডিসির পোস্টিং দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘আজকে পুলিশের পোস্টিং হচ্ছে, ডিসির পোস্টিং হচ্ছে, ইউএনওর পোস্টিং হচ্ছে। কেন হচ্ছে? আবার ভোট চুরি করতে, জনগণের ভোটের অধিকার হনন করতে। যাদের পোস্টিং করা হচ্ছে, তারা তাদের দলীয় মানুষ। ভুলে যান, বাংলাদেশের জনগণ আপনাদের আর ভোট চুরি করতে দিবে না।’
গতকাল বুধবার (১৯ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রামের কাজির দেউরি নুর আহম্মেদ সড়কে সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যোগে কেন্দ্র ঘোষিত পদযাত্রা কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
পদযাত্রাটি কাজির দেউরি নুর আহম্মেদ সড়ক থেকে শুরু করে লাভলেইন, জুবলী রোড়, তিনপুলের মাথা, নিউমার্কেট, স্টেশন রোড়, বিআরটিসি, কদমতলী হয়ে দেওয়ানহাট মোড়ে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় পদযাত্রা পূর্ব সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, এস এম ফজলুল হক, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি হারুনুর রশীদ। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, হুম্মাম কাদের চৌধুরী, সুশীল বড়ুয়া, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম, উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ হালিম।
আওয়ামী লীগের হৃদয়ে কম্পন শুরু হয়েছে মন্তব্য করে আমীর খসরু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও দলের ভোট সহযোগীদের হৃদয়ে কম্পন শুরু হয়েছে। এমন কম্পন শুরু হয়েছে যে তারা আওয়ামী পুলিশ, সন্ত্রাসী, তাদের দলীয় সন্ত্রাসী দিয়ে আমাদের মিছিল মিটিংয়ে হামলা চালাচ্ছে। লক্ষ্মীপুরে আমাদের এক ভাইকে গুলি করে হত্যা করেছে। কিশোরগঞ্জে আক্রমণ করেছে, অনেক নেতাকর্মী হতাহত হয়েছে। ফেনীতে আক্রমণ হয়েছে। খাগড়াছড়িতে আক্রমণ করেছে। কোনো লাভ হয়েছে? খাগড়াছড়িতে তারা পালিয়েছে। গতকাল মিরপুরে পদযাত্রায় আমি ছিলাম। সেখানে আক্রমণ করেছে। কিন্তু কিছু করতে পারেনি। তারা পালিয়েছে।’
সহিংসতা যারা করে তাদের সাথে জনগণ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন সুশৃঙ্খল আন্দোলন। দেশের মানুষ আমাদের সাথে আছে। কারা সহিংস হবে? যারা সুশৃঙ্খল না। সহিংসতা যারা করে তাদের সাথে জনগণ নেই। আমরা সুশৃঙ্খল। তাই আমাদের সহিংস হওয়ার দরকার নেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশের জনগণ নয়, সারাদেশের ফ্যাসিস্ট বিরোধী গণতন্ত্রকামী মানুষ, বিশ্বের বিভিন্ন সরকার ও ব্যক্তি গনতন্ত্র রক্ষা করার এই আন্দোলনকে সমর্থন দিয়েছে। তারা বাংলাদেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়, বাকস্বাধীনতা চায়, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চায়, বাংলাদেশের মানুষের জীবনের নিরাপত্তা চায়। এখানে সব পরিষ্কার, বার্তা পরিষ্কার। বার্তা যদি তাদের কাছে পরিষ্কার না হয়, তাহলে আরো দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে তাদের পতন ঘটাতে হবে।’
আমীর খসরু বলেন, ‘আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই যে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে হবে। না হলে, আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন করতে হবে। দরকার হলে সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে বাংলাদেশের জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। তারা জনগণের কাছে জবাবদিহি করবে। তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে।’ সরকার বিপদে আছে মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, ‘চট্টগ্রামের লাখ লাখ জনতা এই পদযাত্রায় যোগ দিয়ে সরকারের পতনের ঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকারকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দিয়ে পতন করতে হবে। বিএনপি এখানে দাঁড়িয়েছে, কারণ আমরা সুশৃঙ্খল ছিলাম। উশৃঙ্খল আন্দোলন দিয়ে দাবি আদায় করা যায় না। একদফার দাবি, সরকারের বিদায়ের ডাক এসেছে।