রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৭ অপরাহ্ন

গোপালগঞ্জে উদ্ভাবিত ব্রি ধান-১০৫ ডায়াবেটিস রোগীরোগীদের জন্য নিরাপদ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

গোপালগঞ্জে গবেষণা মাঠে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিরাপদ নতুন উদ্ভাবিত ব্রি ধান-১০৫ আবাদে সাফল্য মিলেছে।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি), গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের গবেষণা মাঠে ব্রি ধান ১০৫ ডায়াবেটিস রাইস ১ বিঘা জমিতে বীজ উৎপাদনের আবাদ করা হয়। চলাতি বছরের মার্চে চাষের অনুমোদন পায় নতুন উদ্ভাবিত ব্রি ধান-১০৫। তারপর ব্রি গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের গবেষণা মাঠে ধানটি চাষ করা হয়। এটি বোরো মৌসুমের ধান হলেও আমন মৌসুমে বীজ হিসেবে চাষাবাদ করা হয়েছে। এতে আশানুরূপ ফলন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ব্রি গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের সিনিয়র সইন্টিফিক অফিসার ও প্রধান ড. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও বাগেরহাট জেলার ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে কাজ করি। আমাদের গবেষণা মাঠে উৎপাদিত ব্রি ধান-১০৫ এর বীজ দিয়ে আসন্ন বোরো মৌসুমে তিন জেলায় এ ধানের চাষাবাদ কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেব।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ব্রি’র সর্বশেষ জাত হলো ব্রি ধান-১০৫। একটি কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) সম্পন্ন ডায়াবেটিক ধান। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এ ধানের চালের ভাত খাওয়া নিরাপদ। ভাত আমাদের প্রধান খাদ্য। কিন্তু দেশে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডায়াবেটিস রোগীরা রক্তে সুগারের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকায় সাধারণত এক বেলা ভাত খান। তাদের কথা চিন্তা করে ব্রি’র বিজ্ঞানীরা এ জাতটি উদ্ভাবন করেছন। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা এ ধানের চালের ভাত নিরাপদ মনে করে খেতে পারবেন। লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) সম্পন্ন এ ধানের চালের ভাত খেলে ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে শর্করা খুব কম যাবে। ব্রি’র প্রধান কার্যালয়ে পুষ্টি গবেষণা বিভাগের পরীক্ষায় ব্রি ধান-১০৫ এর পুষ্টিমান নির্ণয় করা হয়েছে। এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবড়ির উপ-পরিচালক আ. কাদের সরদার বলেন, ব্রি ধান-১০৫ ডায়াবেটিস রাইসের পর্যাপ্ত বীজ পেলে গোপালগঞ্জ জেলায় সম্প্রসারণ করা হবে। এতে ডায়বেটিস রোগীরা উপকৃত হবেন। তারা একটু বেশি ভাত খেতে পারবেন। এ জাতের ধানের গাছ আকারে বড়। তাই খড় গো- খাদ্যের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে।
ব্রি গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের সাইন্টিফিক অফিসার সৃজন চন্দ্র দাস জানান, নতুন উদ্ভাবিত জাতের মধ্যে ব্রি-১০৫ বোরো মৌসুমের একটি কম জিআই সম্পন্ন ডায়াবেটিক ধান। এর শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য হলো সবুজ পাতা, খাড়া ডিগ পাতা, মাঝারি লম্বা ও চিকন দানা, যার জিআই মান ৫৫। কম জিআই হওয়ার কারণে এটি ডায়াবেটিক চাল হিসেবে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা লাভ করবে। ধান পাকার পরও গাছ সবুজ থাকে। এ জাতের পূর্ণ বয়স্ক গাছের গড় উচ্চতা ১০১ সেন্টিমিটার। গড় ফলন হেক্টরে ৭ দশমিক ৬ টন। তবে উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে অনুকূল পরিবেশে হেক্টর প্রতি ৮ দশমিক ৫ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম।
তিনি জানান, এ জাতের দানার আকার ও আকৃতি মাঝারি সরু ও রঙ সোনালী। এর জীবনকাল ১৪৮ দিন। এ জাতের ১০০০টি দানার ওজন ১৯ দশমিক ৪ গ্রাম। এতে অ্যামাইলোজের পরিমাণ ২৭ শতাংশ এবং প্রোটিনের পরিমাণ ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। রান্না করা ভাত ঝরঝরে এবং সুস্বাদু। তাই এ ধানের আবাদ করে কৃষক লাভবান হবেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com