সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন

স্বপন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

মীর মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন ভোলা
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

ভোলায় অসহায় জেলেদের পূনর্বাসনের বরাদ্দ, লঞ্চঘাট দখল, চরদখল, মেঘনা ও তেতুলীয়া নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু বিক্রি, চাঁদাবাজি ও মৎস্য কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তাদের এবং দলীয় নেতাকর্মীদের হুমকী ধামকীর প্রতিবাদে সাধারন মানুষের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২৩/০৯/২৩ শনিবার বিকালে ভোলা প্রেসক্লাবের সামনে ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ভোলার প্রভাবশালী নেতা সাবেক বানিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের ভাতিজা ইফতারুল হাসান স্বপনের বিরুদ্ধে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। কয়েক হাজার নারী পুরুষের উপস্থিতিতে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, নির্যাতনের শিকার জেলা আওয়ামীলীগের ১নং যুগ্ম সম্পাদক জহিরুল ইসলাম নকীব। এসময় তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে ওই দূর্নীতিবাজ চেয়ারম্যানের নানা অপকর্মের ফিরিস্তি তুলে ধরে বলেন, তার অত্যাচারে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তারা আজ অতিষ্ট। আমরা ওই চেয়ারম্যানের অপকর্মের হাত থেকে পরিত্রাণ চাই এবং বিচার চাই। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, চেয়ারম্যান স্বপন, তার ইউনিয়নের বাঘমারা ও চন্দ্রপ্রসাদ চরের প্রায় ৩ হাজার একর জমি দখল করে জমির মালিকদের তারিয়ে দিয়ে নিজে ভোগ করছেন। ভোলার খেয়াঘাট ও ভেদুরিয়া লঞ্চ ঘাট দিয়ে বিভিন্ন এলাকার জেলেদের মাছ পরিবহনে বাঁধা দিয়ে নিজের লোক দিয়ে চাঁদা আদায় করে ভিন্ন পথে যেতে বাধ্য করে। তাতে ঘাট ইজারাদার ক্ষতিগ্রস্তের পাশাপাশি সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ভোলার বাংলাবাজার উপ শহর এলাকায় প্রত্যেকটি বোরাক থেকে এবং পল্লী বিদ্যুতের পাঠানো প্রতিটি খাম্বা থেকে চাঁদা আদায় করা হয়। মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে ড্রেজারা বসিয়ে টেন্ডার বিহীন বালু উত্তোলন করে তা বিক্রি করে। তার প্রভাবের কারনে বালু উত্তোলনের প্রকৃত ঠিকাদাররা বালু বিক্রি করতে পারছেনা।
এ ছাড়া ভোলায় হত দরিদ্র জেলেদের পূনর্বাসনে বকনা বাছুর বিতরনের তালিকা তদন্ত করায় মোবাইল ফোনে দৌলাতখান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে গালমন্দ করে দেখে নেয়ার হুমকী দিয়েছেন চেয়ারম্যান স্বপন। বিষয়টি এতদিন মিডিয়ার আড়ালে রেখে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হলেও শেষ রক্ষা পায়নি ওই চেয়ারম্যানের অডিও কথোপকথন। যা ২২ সেপ্টেম্বরে সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। শুধু এখানেই শেষ নয়, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা মোঃ এমদাদুল্লাহ চেয়ারম্যানের অনুমতি ছাড়া ওই ইউনিয়নে সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করার অপরাধে ক্ষমতার দাপটে ২০ সেপ্টেম্বর রাত ১২টার পরে ভোলা থেকে তাকে ইনষ্টেন্ট বদলী করা হয়েছে অন্য জেলায়। একজন সরকারি কর্মকর্তাকে গালমন্দ করা এবং বদলী করার বিষয়টি ভালো চোখে দেখেনি সচেতন নাগরিক সমাজ। এদিকে চেয়ারম্যান স্বপন তার মুঠোফোনে মৎস্য কর্মকর্তাকে গালমন্দের কথোপকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তের মধ্যে পুরো জেলায় তোলপার শুরু হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান দ্বারা নির্যাতিত সাধারণ মানুষ দূর্নীতিবাজ চেয়ারম্যানের বিচার দাবীতে এই মানববন্ধন করা হয়। বিষয়টি নিয়ে চরমভাবে দুঃখ প্রকাশ করে দৌলতখান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহফুজ হাসনাইন বলেন, আমি তো এখানে চাকরি করি মাত্র। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমাকে যে হুকুম দেবেন আমাকেতো সেই মোতাবেকই চলতে হবে। এখানে তো আমার কোন অপরাধ নেই, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমাকে দক্ষিণ দীঘলদী ইউনিয়নে তার সাথে করে নিয়ে যাওয়াই আমি সেখানে যেতে বাধ্য হয়েছি। চেয়ারম্যান মহোদয় শুধু শুধু আমার ওপর রেগে গিয়ে অহেতুক আমাকে গালমন্দ করেছেন। এ ব্যাপারে চরম দুঃখ ও হতাশা প্রকাশ করে মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা মোঃ এমদাদুল্লাহ বলেন, আমাদের চাকরিটাই হচ্ছে বদলির চাকরি। সরকার চাইলে আমাদেরকে আজ এই জেলায় কাল আরেক জেলায় বদলি করতে পারে এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু চেয়ারম্যান স্বপনের অনৈতিক কর্মকা-ে আমি খুবই দুঃখিত ও হতাশাগ্রস্থ হয়েছি বলে জানান তিনি। তবে বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইফতারুল হাসান স্বপনের সাথে কথা বলতেই তিনি এই বিষয়টি নিয়ে কোন ধরনের মন্তব্য করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়ে তার মুঠোফোনটি কেটে দেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com