বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৪১ জন। এ নিয়ে দেশে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬৪ জনে। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ জনে।
মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইনে বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ এবং রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ৪১ জন করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়েছেন বলে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০-এর মধ্যে। এছাড়া ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী রয়েছেন ৯ জন। অন্যদিকে ঢাকা জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ২০ জন।
বুলেটিনে আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা নতুন আক্রান্তদের সংখ্যাসহ তাদের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, নতুন করে যে ৪১ জন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০-এর মধ্যে। এছাড়া ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী রয়েছেন ৯ জন। বাকিদের মধ্যে ১০ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সী রয়েছে একটি শিশু, ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী রয়েছেন চার জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী রয়েছেন পাঁচ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী রয়েছেন সাত জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন পাঁচ জন।
নতুন আক্রান্ত ৪১ জনের তথ্য তুলে ধরে আইইডিসিআর পরিচালক আরও বলেন, ৪১ জনের মধ্যে পুরুষ ২৮ জন, নারী ১৩ জন। ৪১ জনের মধ্যে ২০ জন ঢাকার, ১৫ জন নারায়ণগঞ্জের। বাকিদের মধ্যে একজন চট্টগ্রাম, একজন কুমিল্লা ও একজন কেরানীগঞ্জের।
ডা. ফ্লোরা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় যে পাঁচ জন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে দুই জন ঢাকার, বাকি তিন জন ঢাকার বাইরের। চার জন পুরুষ, একজন নারী।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৯২টি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ১ হাজার ৫৫০টি আইসোলেশন বেড রয়েছে। এর বাইরে সারাদেশে আইসোলেশন বেড রয়েছে ৬ হাজার ১৪৩টি। মোট ৭৬৯৩টি আইসোলেশন বেড রয়েছে। এর মধ্যে আইসিইউ বেডের সংখ্যা ১১২টি। আর ডায়ালাইসিস সুবিধা রয়েছে ৪০টি বেডে। আইসিইউ ও ডায়ালাইসিস সুবিধা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ। মারা গেছেন প্রায় পৌনে এক লাখ মানুষ। তবে দুই লাখ ৮৬ হাজারের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর থেকে প্রায় নিয়মিত কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর দিচ্ছিল আইইডিসিআর। এরমধ্যে ৫ এপ্রিল একবারে ১৮ জন আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হওয়ার কথা জানানো হয়। আর তার পরদিন ৬ এপ্রিল নতুন করে ৩৫ জন শনাক্ত বলে জানানো হয়। সবশেষ হিসাবে দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৬৪। মারা গেছেন ১৭ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩৩ জন।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে; যার মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। সে বিষয়টি মাথায় রেখে গৃহীত পদক্ষেপগুলোর মধ্যে সর্বশেষ মুসল্লিদের ঘরে নামাজ পড়তে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আহ্বানও রয়েছে। এছাড়া, মানুষকে ঘরে রাখতে রাজপথের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী, র্যাব ও পুলিশ।
এমআইপি/প্রিন্স/খবরপত্র