গত ৭৩ দিন ধরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। হাসপাতালে থাকাকালীন দীর্ঘ এই সময়ে তার শারীরিক অবস্থার একাধিকবার অবনতি হয়েছে। এর ফলে, কয়েকবার তাকে কেবিন থেকে সিসিইউতে নিতে হয়েছে। যদিও স্ট্যাবল হওয়ার পর কয়েক ঘণ্টা পর তাকে আবারও কেবিনে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। বর্তমানেও তার স্বাস্থ্যের অবস্থা কখনও অবনতি, কখনও স্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে বলে তার চিকিৎসক ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা বলছেন, গত ১৯ অক্টোবর রাতে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা হঠাৎ করে অবনতি হলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে কেবিন থেকে সিসিইউতে স্থানান্তর করতে হয়েছে। কয়েক ঘণ্টা পর কিছুটা স্থিতিশীল হলে তাকে আবার কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। তবে গত ২ দিন তার শারীরিক অবস্থার অবনতি কিংবা উন্নতি কোনটাই হয়নি। বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, গত ২ দিন তার স্বাস্থ্যের অবস্থা উন্নতি কিংবা অবনতি না হলেও ২ দিন আগে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা কিছুটা অবনতি হয়েছিল। এটা তো সবাই জানেন, দেশে বর্তমানে তাকে আর কোনো চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়। এখানকার তার চিকিৎসক টিম তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। তারা বেগম খালেদা জিয়ার রোগগুলো কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, সেই চেষ্টা করছেন। বেগম খালেদা জিয়াকে কবে নাগাদ বাসায় নেওয়া যেতে পারবে-জানতে চাইলে ডা. রফিক বলেন, এটা তো বলা সম্ভব না। কারণ তার যে স্বাস্থ্যের অবস্থা, সেখানে তাকে তো হাসপাতালে রেখেই কোনোরকম চিকিৎসা চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এই অবস্থা তাকে বাসা নিয়ে আসা সম্ভব বলে আমার মনে হয় না। তারপরও এ ব্যাপারে ভালো বলতে পারবেন চিকিৎসক দলের সদস্যরা।
বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে জানান, ম্যাডাম বর্তমানে কেবিনে আছেন। তবে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা বর্তমানে উন্নতি ও অবনতি কোনটাই নাই। এই ভালো তো এই মন্দ অবস্থা। চিকিৎসকরা তাদের সাধ্য মতো চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ম্যাডামকে ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা করছেন তারা।
প্রসঙ্গত, সবশেষ গত ৯ আগস্ট বেগম খালেদা জিয়ার শরীর খারাপ হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। লিভার সিরোসিস, আথ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, দাঁত, চোখের প্রদাহ, হৃদরোগসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন খালেদা জিয়া। এছাড়া, তার হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়লে একটিতে রিং পরানো হয়।