গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার হরিনাথপুর পশ্চিম পাড়া ডক্টর টি আই এম ফজলে রাব্বি চৌধুরী দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষাব্যবস্থার মুখ থুবড়ে পড়েছে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় দেখেও যেন দেখার কেউ নেই। উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লী এলাকায় গড়ে ওঠা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি চলে শুধুমাত্র কাগজে-কলমে। এলাকাবাসীর মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত বুধবার কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী সরেজমিনে তথ্য অনুসন্ধানে গেলে মাদ্রাসাটির সুপারসহ পাঁচজন শিক্ষক এবং তিনজন কর্মচারীকে উপস্থিত পাওয়া যায়। দেখা যায়, লাইব্রেরি কক্ষে শিক্ষক স্মরণিকা বা কোন শিক্ষার্থীর তালিকা নেই।
শিক্ষার্থীদের হাজিরা খাতা অনুযায়ী ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৫৭ জনের মধ্যে উপস্থিত পাওয়া যায় মাত্র ১০ জন, সপ্তম শ্রেণীর ৬৬ জনের মধ্যে পাওয়া যায় মাত্র ৫ জন শিক্ষার্থী, অষ্টম শ্রেণীর ২৯ জনের মাঝে পাওয়া যায় ৭ জন, নবম শ্রেণীর ২৪ জনের মাঝে উপস্থিত পাওয়া যায় ১১ জন, দশম শ্রেণীর ২৫ জন শিক্ষার্থীর মাঝে উপস্থিত পাওয়া যায় মাত্র ৪ জন, এ নিয়ে সর্বসাকুল্লে শিক্ষার্থী উপস্থিত পাওয়া যায় ৩৭ জন। মাদ্রাসার সুপার খাইরুল ইসলাম জানান, আমার মাদ্রাসার ইবতেদায়ী শাখাসহ মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ২শত ৮৯ জন। ইবতেদায়ী শাখায় ২জন শিক্ষক থাকলেও শিক্ষার্থী ১ জনও নেই। ইবতেদায়ী শাখার বই উত্তোলন সম্পর্কে সুপার খায়রুল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, উপজেলা থেকে বই উত্তোলন করে ২টি হাফিজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বইগুলি বিতরণ করি । শিক্ষার্থীরা হাফিজিয়া মাদ্রাসায় পাশ করলে আমরা তাদেরকে আমাদের মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী হিসেবে গণ্য করে ফলাফল দিয়ে থাকি। ওই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আহাম্মদ আলী, আক্ষেপ করে বলেন, শুধুমাত্র কয়েকটি মেয়ে ছাত্রী ছাড়া এই মাদ্রাসায় কোন ছাত্র-ছাত্রী আসেনা।
কারণ জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, এই মাদ্রাসায় আগের মত লেখাপড়া না হওয়ায় এখানে শিক্ষার্থী থাকে না। আরো কয়েকজন এলাকাবাসী জানায়, বর্তমানে মাদ্রাসাটির শিক্ষকদের দায়িত্ব-কর্তব্য অবহেলার কারণে এখানে শিক্ষার্থী ভর্তি হয় না। বিষয়টি তাৎক্ষণিক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কে মোবাইল ফোনে জানালে তিনি বলেন আমি ব্যস্ত আছি এবং ওই মাদ্রাসা সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই। পরদিন বৃহস্পতিবার গণমাধ্যম কর্মীরা পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল ইসলামকে অবগত করলে তিনি সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসদেন। তাই এ অবস্থার নিরসনকল্পে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসকসহ মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তার জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।