বর্তমান সরকারকে গণতন্ত্রের ঘাতক আখ্যা দিয়ে ১২ দলীয় জোটের নেতারা বলছেন, সরকার বিরোধীদলের উপর বেপরোয়া দমন পীড়ন চালিয়ে নিজেদের পতনকেই তরান্বিত করছে। আজ সোমবার সকালে রাজধানীর বিজয়নগরে এক বিক্ষোভ মিছিল শেষে নেতারা এসব বলেন। বিএনপি ঘোষিত দেশব্যাপী দ্বিতীয় দফা ৪৮ ঘন্টার সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি সফলের লক্ষ্যে ১২ দলীয় জোটের উদ্যোগে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির পাশে অবস্থিত টেপা কমপ্লেক্সের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ অবরোধ সফল করে একদফার আন্দোলনকে সচল রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অংশগ্রহণ করে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ১২দলীয় জোটের সমন্বয়ক এডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাতীয় পার্টির (জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য নওয়াব আলী খান আব্বাস, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, ন্যাপ ভাসনীর চেয়ারম্যান এডভোকেট আজহারুল ইসলাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন প্রধান, বাংলাদেশ এলডিপির অতিরিক্ত মহাসচিব তমিজউদ্দিন টিটু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আবুল বাশার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব নুরুল কবির পিন্টু, আব্দুল্লাহ আল হাসান সাকিব, আবু হানিফ, জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব কাজী নজরুল, হান্নান আহমেদ খান বাবলু, বাংলাদেশ জাতীয় দলের ভাইস চেয়ারম্যান সারোয়ার আলম, শামসুল আহাদ, আবুল মনসুর, লেবার পার্টির যুগ্ম মহাসচিব শরিফুল ইসলাম, ইসলামী ঐক্য জোটের যুগ্ম মহাসচিব ইলিয়াস রেজা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি জাকির হোসেন, আতাউর রহমান, যুব জাগপার সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় ছাত্রসমাজের সভাপতি ফয়েজ আহমেদ, ছাত্র জমিয়তের সভাপতি আদনান আহমেদ প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সারাদেশে হারিকেন দিয়ে খুঁজে খুঁজে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। গণতন্ত্রের ঘাতক বর্তমান সরকার বিরোধীদলের উপর বেপরোয়া দমন পীড়ন চালিয়ে নিজেদের পতনকেই ত্বরান্বিত করছে। নিজেরাই নিজেদের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা সংকট তৈরি করছে। বিরোধী দলের উপর নিষ্ঠুর আচরণ বুমেরাং হয়ে তাদের জীবনেই ফিরে আসবে।
তারা বলেন, ১৯৭৪ সাথে আওয়ামী সরকার বিরোধী দলের উপর নিপীড়ন মূলক “বিশেষ ক্ষমতা আইন” প্রনয়ন করেছিল। ইতিহাস সাক্ষী ১৯৭৫ সালে ক্ষমতা হারানোর পরে ২১ বছর পর্যন্ত ক্ষমতার বাইরে থাকাকালে নিজেদের প্রণীত বিশেষ ক্ষমতা আইনে সবচেয়ে বেশি নিগৃহীত ও হয়রানির শিকার হয়েছে আওয়ামী লীগ।
স্বৈরাচার সরকার ১৮কোটি মানুষকে কারাগারে আটকে রাখতে পারবে না। জনগণই ভোটারবিহীন পাতানো ভোটের আয়োজন পন্ড করে দেবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় ও তৃণমূল পর্যায়ে প্রায় সকল নেতাকে গ্রেফতার করে আন্দোলনের দায়িত্ব জনগণের হাতে তুলে দিয়েছে। সরকারের বিএনপি দমন ও বাড়াবাড়ি দেশের মানুষকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। নেতা বিহীন আন্দোলন বিনা পিকেটিং ও নেতৃত্ব ছাড়াই দেশের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে নিচ্ছে। জনগণ ২৯ তারিখের হরতাল স্বপ্রণোদিত হয়ে পালন করেছে। তারপর ৩দিনের অবরোধ এবং সবশেষে ২দিনের অবরোধ সারাদেশকে অচল করে দিয়েছে। এভাবে একের পর এক কর্মসূচি আসতে থাকবে, জনগণ নিজ দায়িত্বে কর্মসূচি পালন করে সরকারের উপরে অনাস্থা প্রকাশ করতে থাকবে। সময়ে ইতিহাসের নতুন কোনো ঘটনার জন্ম দিয়ে সরকারের বিদায় ঘন্টা বাজাবে। তারা বলেন, হাসিনা সরকার বিরোধী দলকে কারাগারে ভরে ফাঁকা মাঠে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রলাপ বকছে! কতটা মাথা নষ্ট হলে দুনিয়ার সবাইকে বেকুব ভেবে এমন কর্মকান্ড করতে পারার কথা তারা ভাবতে পারে! বক্তারা সরকারকে ইতিহাসের নির্মম শিক্ষা থেকে পাঠ নেওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান একদলীয় বাকশাল করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন শেখ হাসিনাও একদলীয় শাসনের চিন্তা ও চেষ্টা করতে গিয়ে নিশ্চিত ব্যর্থ হবেন। গায়ের জোরে আর রাষ্ট্র ক্ষমতা অপব্যবহার করে জনগণকে খুববেশি সময় দাবিয়ে রাখতে পারবে না। বঙ্গোপসাগরে ভেসে যেতে হবে। দেশের মানুষ এবং পুরো দুনিয়া সরকারের বাড়াবাড়ি এবং অবিবেচক কর্মকান্ডের দিকে দৃষ্টি রাখছে। আরেকটি বিনাভোটের ২০১৪ সালের স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন বয়ে আনছে। আওয়ামী লীগ বুঝতে পারছে না যখন বুঝতে পারবে তখন বুঝে কোনো লাভ হবে না!!