দেশের বর্তমান প্রচলিত ওয়াজ মাহফিলে বিশেষ কিছু বক্তাদের ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশের বিশিষ্ট আলেম ও জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার (বারিধারা মাদরাসা) শায়খুল হাদিস আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক কাসেমী। মাহফিল আয়োজকদের উদ্দেশ করে তিনি বলেছেন, ‘ফালতু ওয়ায়েজকে (ব্ক্তা) দাওয়াত দিয়ে যে টাকা দেবেন- ওটাও হারাম, আর যে মজলিস করলেন, এটাতেও আল্লাহর লা’নত ও গজব পড়বে, এখানে আল্লাহর কোনো রহমত আসবে না।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে অত্যন্ত দুঃখ ও ভারাক্রান্ত মনে দেশের বরেণ্য এই আলেমকে এসব কথা বলতে শোনা যায়। ভাইরাল ওই ভিডিওতে তার পাশে দেশের আরো একাধিক আলেমকেও বসে থাকতে দেখা গেছে।
এ সময় মাহফিল আয়োজকদের প্রতি অনুরোধ করে আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক আরো বলেন, মাস্তান টাইপের বক্তাকে কোনোদিন ওয়াজমাহফিলে দাওয়াত দেবেন না। একইসাথে যারা মানুষের তৃপ্তি মেটায় এবং জলসাকে (মাহফিল) বিনোদন বানায়, এদেরকেও দাওয়াত দেবেন না। তিনি সতর্ক করে বলেন, আর যদি এরকম বক্তাদের দাওয়াত দিয়ে ওয়াজ করান, তাহলে যতক্ষণ তার ওয়াজ চলবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহর লা’নত বর্ষণ হবে।
খুব আফসোসের সাথে অসংখ্য আলেমের ওস্তাদ বর্ষীয়াণ এ আলেম বলেন, অনেক বক্তা আছেন, রাতে ওয়াজ করেন কিন্তু ইশার নামাজও পড়েন না, ফজরও পড়েন না। অথচ এদেরকে আপনারা ‘আল্লাহর বড় ওলী’ হিসেবে দাওয়াত দিয়ে আনছেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এসব বক্তাদের মধ্যে যে যত বড় জাহিল, তার বাজেট তত বেশি। যত জাহিল, তাদের প্রতি আয়োজকদের খাহেশ তত বেশি। মাহফিলের পবিত্র এ ময়দান রক্ষায় তিনি এমন সব বক্তাকে দাওয়াত দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, যারা প্রকৃতপক্ষেই দ্বীনের আলোচনা করেন। সেক্ষেত্রে অনেক মানুষের উপস্থিতির দরকার নেই বলেও মত দেন আল্লামা ওবায়দুল্লাহ ফারুক।
তিনি বলেন, (এরকম বক্তা দাওয়াত দিলে) মাহফিলে যদি মাত্র ৫০০ মানুষও আসে আলহামদুলিল্লাহ। ৫ লাখ মানুষের কোনো প্রয়োজন নেই। সর্বশেষ আশাবাদ ব্যক্ত করে সর্বজনশ্রদ্ধেয় এ আলেম বলেন, যদি আমরা এই লাইনে মেহনত করতে পারি, তাহলে এই জাতি গঠনে খুবই ফলপ্রসু কাজ হবে ইনশাআল্লাহ।