বাংলাদেশে মাতৃ ও নবজাতকের মৃত্যুহার কমাতে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম ২০১০ সালে বাংলাদেশে মিডওয়াইফারি কার্যক্রমের সূচনা করেন। একই সময়ে বাংলাদেশ মিডওয়াইফারি সোসাইটি (বিএমএস) মহিলা বিষয়ক অভিদপ্তর অনুমোদিত বাংলাদেশের সকল মিডওয়াইফদের নিয়ে একটি পেশাদার প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। বাংলাদেশ মিডওয়াইফারি সোসাইটি (বিএমএস) ২৫শে নভেম্বর ২০২৩ গত শনিবার বিকাল ৩ টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটের নসরুল হামিদ অডিটোরিয়ামে সরকারী ও বেসরকারী স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে একটি আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। মিডওয়াইফদের কাজের স্বীকৃতি, মাতৃত্ব, নবজাতক এবং কিশোরীদের স্বাস্থ্য বিষয়ে মিডওয়াইফারি পরিষেবাগুলির শক্তিশালীকরণ এবং মানসম্পন্ন মিডওয়াইফারি শিক্ষা নিশ্চিতকরণ বিষয়ে আলোচনা হয়। বর্তমানে, বাংলাদেশে ৭২৩০ জন লাইসেন্সপ্রাপ্ত মিডওয়াইফ (বিএনএমসি রিপোর্ট ৩১-জুলাই-২০২৩ অনুযায়ী) রয়েছেন, যাদের মধ্যে ২,৫৫৭ জন মিডওয়াইফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ইউনিয়ন সাব সেন্টারে কর্মরত, আনুমানিক প্রায় ৫০০ জন মিডওয়াইফ রোহিঙ্গা রিফুজি ক্যাম্পগুলোতে এবং বাকিরা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। মোট ১৭০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫,৭০৫টি আসন রয়েছে; ৬২টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে ১,৮২৫টি এবং ১০৮টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে রয়েছে ৩,৮৮০ টি আসন রয়েছে ।
বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সংগঠিত মোট স্বাভাবিক প্রসবের ৭৪% মিডওয়াইফরা সম্পন্ন করছেন। মিডওয়াইফরা নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে মা ও নবজাতক শিশুদের জীবন বাঁচাতে পারলেও স্বীকৃতির দিক থেকে তারা পিছিয়ে। অনেকেই মিডওয়াইফদের নার্স বলেই মনে করেন যদিও মিডওয়াইফারি একটি স্বতন্ত্র পেশা। উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মিডওয়াইফরা অপর্যাপ্ত সংখ্যায় কাজ করছেন।
সভায় আরও বলা হয় -মা ও নবজাতক শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষা, সিজারিয়ান ডেলিভারি কমানো ও নরমাল ডেলিভারি বাড়ানোর জন্য সরকারি এবং বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে অনতিবিলম্বে আরো মিডওয়াইফ নিয়োগ প্রয়োজন।
মিডওয়াইফ পেশাটিকে সাধারন মানুষের কাছে আরো বেশী পরিচিত করা প্রয়োজন যাতে তারা সেবা নিতে পারে । সরকার কর্তৃক মিডওয়াইফদের নির্ধারিত কর্ম বিবরণী অনুযায়ী কাজের অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। যৌক্তিক এবং বাস্তবসম্মত উপায়ে মিডওয়াইফদের পাশে থাকার আশ^াস দেন অতিথিবৃন্দ। বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ মিডওয়াইফারি সোসাইটির সভাপতি আছমা খাতুন্, সংগীতা সাহা প্রেমা- সাধারণ সম্পাদক, সৈয়দা মাহফুজা ঝুমু- মিডওয়াইফ, জেরিন তাসনিম- নির্বাহী সদস্য, শারমিন শবনম জয়া, প্রজেক্ট ম্যানের্জা । অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোঃ রশিদুল মান্নাফ কবীর (উপসচিব),পরিচালক (শিক্ষা ও শৃংখলা), নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর এবং রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব)বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল ,স্বনামধন্য টেলিভিশন উপস্থাপক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ফেরদৌস বাপ্পি এবং সেইসাথে ছিলেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, প্রো-নার্স প্রজেক্ট, এঅঈ প্রমুখের প্রতিনিধিরা। পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন উন্নয়ন কর্মী সাকিলা মতিন মৃদুলা