মেহেরপুর-১ (মুজিবনগর, সদর উপজেলা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক দুই মেয়াদের সংসদ সদস্য (এমপি) প্রফেসর আব্দুল মান্নান বলেছেন, ‘আমি শেখ হাসিনার প্রার্থী, আমি ভারতের প্রার্থী। আমি এখানে হারার জন্য আসিনি।’ জেলার সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অলোক কুমার দাসের সঙ্গে ফোনালাপকালে তিনি এমনটি বলেন। এদিকে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীম হাসান অডিওটি মেহেরপুরের দায়রা জজ আদালতের যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান মো. কবির হোসেনকে দিয়েছেন। প্রফেসর আব্দুল মান্নান দুবারের সংসদ সদস্য। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুর-১ (মুজিবনগর, সদর উপজেলা) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তিনি ট্রাক মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সম্প্রতি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে হুমকির এক মিনিট দুই সেকেন্ডের একটি অডিও ক্লিপ ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সমালোচনা ঝড় উঠেছে। অডিওতে প্রফেসর আব্দুল মান্নানকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি প্রফেসর মান্নান বলছি। তুমিতো ডা. অলোক কুমার দাস। বাইরে থেকে মেহেরপুরে এসে ভালোই আছ। খুব আরাম আয়েশে জীবন যাবন করছো। বাড়িঘর সবই বানিয়েছ। টাকা পয়সা অনেক কামাই করেছ। আমি কিন্তু যেমন ভালো লোক তেমন খারাপও। তোমাকে প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন প্রমোশন দেয়নি। সরকার তোমার প্রমোশন দিয়েছে। যদি মন্ত্রীকে ভোট দেয়ার ব্যাপারে আর একটা কথা শুনি, আমি এমপি হই আর না হই, তোমার মেহেরপুরের বাসা আমি উঠিয়ে দেবো। আর তুমি যদি সাবধান হয়ে যাও তাহলে আমার স্নেহভাজন তোমার ওপর থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটুকু আমি তোমাকে বললাম, তুমি পারলে তোমার মন্ত্রীকে বলো। আমি শেখ হাসিনার প্রার্থী, ভারতের প্রার্থী এটি তোমাকে মনে রাখতে হবে। আমি এখানে হারার জন্য আসিনি। সাবধান হয়ে যাও তুমি। আমি তোমার কোনো কথা শুনবো না। যে রিপোর্ট পেয়েছি, আমি খুব অসন্তুষ্ট তোমার প্রতি, তুমি সাবধান হয়ে যাও।’ এ বিষয়ে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অলোক কুমার দাশ বলেন, ১৭ ডিসেম্বর আমার মোবাইল নম্বরে একটি কল আসে। যেখানে তিনি প্রফেসর আব্দুল মান্নান নাম বলে পরিচয় দেন। ফোনে আমাকে হুমকি দেয়া হয়। আমার মোবাইলে অটো কল রেকর্ড অপশন চালু থাকায় ফোনালাপটি রেকর্ড হয়ে যায়। কোনো এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। আমি শান্তিপ্রিয় মানুষ, শান্তিতে থাকতে চাই।
অডিও ফাঁস হওয়ার বিষয়ে প্রফেসর আব্দুল মান্নান বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে কেউ নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন না। অথচ ডা. অলোক কুমার দাস সব সময় প্রতিমন্ত্রীর বাসায় থাকছেন। এ কারণে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি মোবাইল ফোনে। আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করতে কেউ এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে।
নৌকার প্রার্থী ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, প্রফেসর আব্দুল মান্নান যে কাজটি করেছেন তা নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন। উনি সুশীল সমাজের প্রতিনিধি হয়ে এটি বলতে পারেন না। আর উনি যে প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের প্রার্থী হিসেবে দাবি করেছেন তা মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই নয়। আমি বিষয়টি নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করবো।