সু-উচ্চ দ্বিতল ভবনের বারান্দায় ছোট বড় ১৪/১৫ মৌচাক। হাজার হাজার উড়ন্ত মৌমাছির ভোঁ ভোঁ শব্দ। আর এই মৌচাকের নিচেই বাড়ীর শিশু কিশোর ও বয়স্কদের নির্ভয়ে অবাধ চলাচল। বাড়ির মহিলারা করছেন রান্না বান্নার কাজও। এতে কোন ক্ষতিও করছে না তাদের। বরং চলাফেরা করার সময় পরিবারের সদস্যদের মৌচাকে মাথা বা হাত লাগলেও মৌমাছিগুলো কামড় বা হুল ফোটায় না। এমনি একটি বাড়ী পাঁচবিবি উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের পাঁচগাছি গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ হাবিবুর রহমানের (হবু হাজি)। বাড়ির দ্বিতীয়তলার বারান্দায় হাজার হাজার মৌমাছি ১৪ টি দল (চাক) বেঁধে বাস করছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চাকগুলো আস্তে আস্তে লম্বা হয়ে নিচের দিকে ঝুলে পড়েছে। মৌ চাকের মৌমাছি গুলো ভোঁ ভোঁ শব্দে উড়ে বেড়ালেও কাউকে কামড় বা হুল ফোটাচ্ছে না। এ যেন মৌমাছি আর মানুষের অন্য রকম এক ভালবাসা। এদিকে মৌমাছি আর মানুষের একই বসবাসের খবর শুনে মৌমাছির এই চাকগুলো দেখতে প্রতিদিনই ছুটে আসেন এলাকাবাসী। মৌচাক দেখতে আসা প্রতিবেশী কয়েকজন বলেন, চেয়ারম্যান সাহেবের বাড়ীতে মানুষ আর মৌমাছি একই সঙ্গে বসবাস করছে শুনেছিলাম। আজ তা নিজ চোখে দেখলাম। সত্যিই এ এক অন্য রকম ভালবাসা। তারা বলেন, মৌছামাছি উড়ে আমাদের গায়ে এসে পড়লেও কাউকে হুল ফোটাচ্ছে না। এরকম ঘটনা আমরা আর আগে কখনও দেখিনি। চেয়ারম্যানের ছেলে মোঃ ইদ্রিস আলী বলেন, মৌমাছিগুলো চাক বাঁধার পর থেকে বারান্দায় চলাফেরা, কাপড় শুকানো ও রান্না বান্নার কাজ করা হয়। এসময় চাকে কাপড় ও হাত লাগলেও মৌমাছিগুলো কামড়ায় না। বাড়ির মালিক উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান হবু হাজি বলেন, বছরের পর বছর মাছিগুলো চাক বেঁধে আছে। এখন পর্যন্ত কাউকে কামড়ায়নি। অনেক মানুষ মধু চাক থেকে মধু সংগ্রহ করার জন্য এসেছিল। আমি মধু সংগ্রহ করতে দেয়নি। যেহেতু মৌমাছিগুলো আমার বাড়ী নিরাপদ মনে করে বাসা বেঁধেছে এবং এরা যেহেতু আমাদের কোন ক্ষতি করে না সে কারনে মৌমাছিগুলোকে আমরা পরিবারের সদস্যের মতোই মনে করি। উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ নিয়ায কাযমির বলেন, মৌমাছিগুলো যেখানে নিরাপত্তা, বাঁচার পরিবেশ ও খাবাবের ভালো সু-ব্যবস্থা পায় সেখানেই তারা বাসা বাঁধে। মৌমাছিকে বিরক্ত বা আঘাত করলে আত্মরক্ষার্থে তারা হুল ফোটায়। মৌমাছির হুলে মানুষের মারা যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। মৌমাছি থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করা।