জেলার নানিয়ারচরে হানিকুইন জাতের আগাম আনারসের ব্যাপক ফলন হয়েছে। মৌসুমের আগে উৎপাদিত আগাম এ জাতের হানিকুইন আনারস চাষ লাভজনক হওয়ায় এ জাতের আনারস চাষে ঝুঁকছেন এখানকার কৃষক। এবারো মৌসুম শুরুর বেশ আগেই বাজারে আসতে শুরু করেছে পাহাড়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সর্বাধিক উৎপাদিত আগাম জাতের হানিক্ইুন জাতের আনারস। ‘হানিকুইন’ জাতের আনারস নানিয়ারচর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চাষ হচ্ছে। নানিয়ারচরে পাইকারদের হাত হয়ে এ আনারস ছড়িয়ে পড়ছে সারাদেশে।
পাহাড়ি টিলা ভূমিতে চাষ করা এ হানিকুইন জাতের আনারস অত্যন্ত রসালো ও সুমিষ্ট হওয়ায় এর চাহিদাও রয়েছে বেশী। চাহিদা বেশী থাকায় দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকাররা এ আনারস সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন জেলায় তা সরবরাহ করছে।
জেলার ১০টি উপজেলার মধ্যে নানিয়ারচর উপজেলাতেই এ আনারস চাষ বেশী হয়ে থাকে। বর্তমানে জেলার নানিয়ারচর উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ে পাহাড়ে শোভা পাচ্ছে হানিকুইন জাতের আগাম আনারসের সমাহার। এবার এ জাতের আনারসের ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখেও আনন্দের হাসি দেখা যাচ্ছে।
নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট এলাকার আনারস চাষী মো: কাদের বাসসকে জানান, মৌসুমের আনারসের চেয়ে হানিকুইন জাতের আগাম আনারস চাষের মাধ্যমে আমরা বেশী লাভবান হচ্ছি, প্রতিটি আনারস বাগানেই বিক্রি করেছেন বাগানেই ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে। এতে মৌসুমে উৎপাদিত আনারসের চেয়ে বেশী লাভবান হচ্ছেন তারা। কারণ মৌসুমি আনারস চাষ করে অনেক কৃষককেই লোকসানে গুনতে হয় বলে জানান তিনি।
পাইকারি মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী জসীম উদ্দিন বাসসকে জানান, ‘বাজারে ফলের সরবরাহ কম থাকায় আনারসের দামও বেশি। আগাম আনারস হওয়ায় মৌসুমের চেয়ে এখন বেশী দামে কিনতে হচ্ছে। মৌসুমে প্রতি পিস ১০-১৫ টাকা কিনলেও এখন কিনতে হচ্ছে ২০-২৫ টাকা দরে। আমরা এগুলো ৩০-৪০ টাকা দরে বিক্রি করছি।
নানিয়ারচর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো: আহসান হাবিব এ বিষয়ে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে(বাসস) বলেন, এ বছরে উপজেলার প্রায় ১১০০ হেক্টর জমিতে আনারস চাষ হয়েছে, আধুনিক পদ্ধতি ও পরিমিত হরমোন ব্যবহারের মাধ্যমে মৌসুমের আগেই হানিকুইন জাতের আনারসের ব্যাপক ফলন হওয়ার অনেকে বাড়তি লাভের আশায় কয়েক বছর ধরে এ আনারস চাষে আগ্রহী হয়েছেন কৃষক।
তিনি বাসসকে আরো জানান, হানিকুইন জাতের এ আনারসের আগাম চাষে এক প্রকার হরমোন ব্যবহার করা হয়। এ হরমোন সঠিক সময়ে পরিমিত ব্যবহার করলে মানবদেহের কোনও ক্ষতি হয়না। মৌসুমে উৎপাদিত আনারস চাষে যেখানে চাষীদের অনেক সময় লোকসান গুনতে হতো, সেখানে মৌসুমের বাইরে আগাম উৎপাদিত এ হানিকুইন জাতের আনারস চাষে কৃষক বর্তমানে বাড়তি লাভের মুখ দেখছেন বলে জানান তিনি। তবে পাহাড়ের পরিত্যক্ত এলাকাগুলো এ আগাম জাতের আনারস চাষের আওতায় আনতে পারলে আনারস চাষে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে বলে জানান তিনি।
সরকারের সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে পাহাড়ে হানিকুইন জাতের আগাম আনারস চাষের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে তা দেশের চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি দেশের বাইরেও রপ্তানি করা সম্ভব বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।