বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ০৪:১১ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
শোককে শক্তিতে পরিণত করে এগিয়ে যেতে হবে আজ বাজারে আসছে নওগাঁর আম ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অধিকাংশ কেন্দ্রই ছিল ফাঁকা! মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় নতুন একটি মুক্তিযুদ্ধের দরকার জামালপুরে সভায় বক্তারা কালীগঞ্জে এমপি আনারের সন্ধ্যান ও সুস্থতা কামনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে দোয়ার আয়োজন গলাচিপা উপজেলায় অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট তারাকান্দা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে নিরন্তর কাজ করছেন জোবায়ের হোসেন বাগেরহাটে বিতর্ক, রচনা, চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ বগুড়ার শেরপুরে দুর্নীতি বিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী ফরিদগঞ্জে ভোট বর্জনের আহব্বানে মতিনের নেতৃত্বে লিফলেট বিতরণ ও মিছিল

তাপপ্রবাহে যেসব কঠিন রোগের ঝুঁকি বাড়ে

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন এখন অতীষ্ট হয়ে উঠেছে। এখন হিটওয়েভ, লু কিংবা হিট স্ট্রোক এই শব্দগুলো কমবেশি সবাই শুনেছেন। বৈশাখ আসতেই তাপমাত্রা বেড়েছে দ্বিগুণ, ফলে অসহ্য গরমে সবাই বিপর্যস্ত। তবে ঠিক কতটা তাপমাত্রা পার হলে তাপপ্রবাহ বলা যায়? আবহাওয়াবিদদের মতে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁলে ও সেটি যদি স্বাভাবিকের তুলনায় ৫ ডিগ্রি বেশি হয়, তাহলে তাকে তাপপ্রবাহ বলা হয়। আসলে তাপপ্রবাহের কোনো নির্দিষ্ট মাপকাঠি নেই। আসলে এটি অ লভেদে ভিন্ন।
তাপপ্রবাহ ঘোষণার মানদ- কী? যখন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সমতলের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৪০ ডিগ্রি বা তার বেশি ও পার্বত্য অ লের জন্য কমপক্ষে ৩০ ডিগ্রি বা তার বেশি হয়, তখন তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি বলা হয়। স্বাভাবিকের থেকে তাপমাত্রা সাড়ে ৪ ডিগ্রি থেকে ৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি হলে তা তাপপ্রবাহ বলে ধরা হয়। আর তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি ছাড়ালে, তা তীব্র তাপপ্রবাহের আওতায় পড়বে। যখন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৭ ডিগ্রিও ছাড়িয়ে যাবে, তখন তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহের আওতায় পড়বে।
এই তাপপ্রবাহ কাদের জন্য বিপজ্জনক? ভারতের ইন্টারনাল মেডিসিনের সিনিয়র কনসাল্ট্যান্ট ডা. সুমন মিত্র বলছেন, তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি ছোটদের ও বাড়ির বয়স্কদের। এছাড়া যারা বিভিন্ন কারণে শারীরিকভাবে দুর্বল তাদেরও হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি। আবার যারা সরাসরি রোদে অনেক্ষণ থাকেন কিংবা যাদের বাড়ির ভেতরেও তীব্র গরম অনুভত হয়, তাদেরও হতে পারে হিট স্ট্রোক। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত ঘাম যাদের হয়, তাদের বেশি করে পানি পান করতে হবে। সব সময় ঠান্ডা স্থানে থাকার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, হিট স্ট্রোকের ক্ষেত্রে তাৎক্ষনিখ চিকিৎসার আওতায় না গেলে ত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। তাই সরাসরি রোদে থাকাটা এড়াতেই হবে।
তাপপ্রবাহ থেকে কোন কোন রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে? তাপপ্রবাহের তীব্রতার উপর নির্ভর করছে কতটা সাবধানী হবেন। প্রতিদিন আবহাওয়া দফতর একটি করে আবহাওয়ার সতর্কবার্তা জারি করে। সেই সতর্কবার্তা সংবাদ মাধ্যম মারফত পেয়ে যান সেই এলাকার মানুষ। কখনো আবহাওয়া দফতর তাপপ্রবাহের হলুদ সতর্কতা জারি করে, কখনো আবার কমলা সতর্কতা, কখনো আবার লাল সতর্কতা। হলুদ সতর্কতা জারি হলে পরিস্থিতি নজরে রাখতে হবে। এই পরিস্থিতিতে বাড়ির কচিকাঁচা ও বৃদ্ধদের একটু সাবধানে রাখুন। কিন্তু অতিরিক্ত কড়া পদক্ষেপ জরুরি নয়। এই তাপ সাধারণ মানুষের জন্য সহনীয় কিন্তু দুর্বল মানুষের জন্য উদ্বেগজনক হতে পারে।
শিশু, বয়স্ক, দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সরাসরি রোদে বেরনো থেকে আটকাতে হবে। ফুরফুরে, হালকা রঙের, ঢিলেঢালা, সুতির কাপড় পরুন। মাথা ঢেকে রাখুন কাপড় বা টুপিতে। ছাতা ব্যবহার করুন। তবে তাপপ্রবাহের কমলা সতর্কতা জারি হলে পরিস্থিতি উদ্বেগের। তীব্র তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি ২ দিন ধরে চলার পূর্বাভাস থাকলেও অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করা হয়। আবার তাপপ্রবাহ ৪ দিন ধরেও চলতে পারে।
গরমে কোন রঙের পোশাকে বেশি আরাম মিলবে?
এই সময় শিশু ও বয়স্কদের একেবারেই রোদে বেরোতে দেওয়া যাবে না। শরীর ঠান্ডা রাখতে হবে। প্রচুর পানি পান করতে হবে ডিহাইড্রেশন এড়াতে। পানি পিপাসা না পেলেও পানি পান করতে হবে। ওআরএস, ঘরে তৈরি পানীয়, লেবুর পানি, বাটারমিল্ক ইত্যাদি পান করতে পারে।
আর লাল সতর্কতা দেখা দিলে শারীরিকভাবে যারা একটু দুর্বল বা বয়স বেশি বা শিশুরা, তাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে গর্ভবতী সন্তানসম্ভবাদেরও।
হিটওয়েভে আরও কী কী রোগের ঝুঁকি বাড়ে? এক্ষেত্রে হঠাৎ করেই প্রচন্ড পেশিতে টান লাগা, নিজের অনিচ্ছাতেই হাত, পা কাঁপতে থাকা, প্রচ- ঘাম, একই সঙ্গে প্রবল জ্বর হিট ক্র্যাম্পের লক্ষণ। পানির মতো ঘাম বের হতে থাকে হিট ক্র্যাম্প হলে। শরীরের তাপমাত্রা অনেকটাই বেড়ে যায়। এমনটি হলে প্রথমেই অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা জায়গায় যেতে হবে। ব্যথা হচ্ছে এমন পেশীতে আস্তে আস্তে ম্যাসাজ করতে হবে। আর অল্প করে বারবার পানি পান করতে হবে।
হিট এক্সহসন: অতি ক্লান্তি, দুর্বলতা, ঝিমিয়ে পড়া মাথা যন্ত্রণা, বমি, মাসল ক্র্যাম্প ইত্যাদি হতে পারে এর লক্ষণ হিসেবে। এক্ষেত্রে তাড়াতাড়ি রোগীকে ঠান্ডা জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। অতিরিক্ত জামা কাপড় ছাড়িয়ে হালকা কিছু পরাতে হবে। ঠান্ডা পানি পান করা হবে।
হিট স্ট্রোক: যাঁরা বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে কোনো কারণে রোদে বের হচ্ছেন কিংবা যাদের বয়স ৫৫ বছরের বেশি বা ১০-১৫বছরের কম, তারাই মূলত হিটস্ট্রোকের শিকার হন বেশি। শরীর তার ভেতরের তাপের ভারসাম্য বজায় রাখে নিজস্ব শারীরবৃত্তীয় কৌশলে। তবে এখন রোদের তাপ এতটাই বেশি যে শরীর থেকে প্রচুর পানি বেরিয়ে যাচ্ছে। শরীর তখন সেই ব্যালেন্সটা দরে রাখতে পারছে না। ফলে পথে-ঘাটে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অনেক সময়ই অজ্ঞান হয়ে পড়ার মতোপরিস্থিতি হচ্ছে। এটিই হিট স্ট্রোক।
হিট স্ট্রোক হলে কী হয়? >> রোদের তাপে একেবারে নুইয়ে পড়েন আক্রান্ত ব্যক্তি।
>> অতিরিক্ত ডিহাইড্রেটেড হয়ে যান মানুষ। >> গায়ের তাপমাত্রা অত্যন্ত বেশি হয়ে যায় অর্থাৎ প্রবল জ্বর হতে পারে। >> এক্ষেত্রে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে বা ডাক্তার দেখাতে হবে। দেরি করলে বিপদ নিশ্চিত। >> ঠান্ডা জলে স্পঞ্জ করাতে পারেন শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে।
হার্টের স্বাস্থ্য ও তাপপ্রবাহ: উচ্চ তাপমাত্রায় এক্সপোজার শুধুমাত্র হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় তাই নয়, হার্টের স্বাস্থ্যের উপরও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। বলছে হাভার্ড মেডিক্যাল স্কুল থেকে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র। অতিরিক্ত গরমে কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের উপর যে চাপ পড়ে তাতে, হার্টের অসুখের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এর ফলে হার্ট অ্যাটাক, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন ও হার্ট ফেইলিওরের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি অনুসারে, উচ্চমাত্রায় তাপ ও কার্ডিওভাসকুলার রোগের ফলে মৃত্যু বাড়ছে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, তাপজনিত মৃত্যুর প্রায় এক চতুর্থাংশ হার্টের অসুখে। তাপমাত্রা যত বেশি হবে, হার্টের অসুখের ঝুঁকি তত বেশি। তাই হার্টের অসুখ যাদের আছে, তাদের ডাক্তারের পরামর্শে থাকতে হবে। সূত্র: হেলথ.হার্ভার্ড.এডু/ এবিপি লাইভ




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com