যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এমআইটি) পদার্থবিজ্ঞানের ভিজিটিং প্রফেসর পদে যোগ দিচ্ছেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী এম. জাহিদ হাসান। নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জানিয়েছেন, চলতি বছর মে মাস থেকে তিনি এমআইটিতে ক্লাস নেবেন। কোয়ান্টাম ম্যাটার ও কোয়ান্টাম টপোলজি নিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াবেন তিনি। তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত। সেখানেই একদল বিজ্ঞানীকে সঙ্গে নিয়ে খুঁজে পেয়েছিলেন ভাইল ফার্মিয়ন কণা। তাঁর নেতৃত্বে এই আবিষ্কার ছিল সাম্প্রতিক সময়ে পদার্থবিজ্ঞানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ১৯২৯ সালে প্রথম এ কণার কথা জানিয়েছিলেন জার্মান পদার্থবিদ হারম্যান ভাইল। এর ৮৫ বছর পর বাংলাদেশি বিজ্ঞানী জাহিদ হাসান সেই কণা গবেষণাগারে শনাক্ত করেন। পদার্থবিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ এ অবদানের জন্য ২০২১ সালে তিনি পেয়েছেন আর্নেস্ট অরল্যান্ডো লরেন্স অ্যাওয়ার্ড। যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব এনার্জি (উঙঊ) তাদের জাতীয়, অর্থনীতি ও শক্তি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বিজ্ঞানীদের এই পুরস্কার দেয়। ২০২৪ সালে তিনি কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানের এক নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছেন। একদল বিজ্ঞানীকে সঙ্গে নিয়ে তুলনামূলক উচ্চ তাপমাত্রায় আরোনোভ-বোম ইন্টারফিয়ারেন্স ব্যবহার করে কোয়ান্টাম প্রভাব পর্যবেক্ষণ করেছেন তাঁরা। জাহিদ হাসানের বেড়ে ওঠা বাংলাদেশে, রাজধানীর ধানমন্ডিতে। ১৯৮৬ সালে ধানমন্ডি সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ১৯৮৮ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন তিনি। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। ভর্তি হন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে নোবেলজয়ী পদার্থবিদ স্টিফেন ওয়াইনবার্গের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পান। এরপর স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে করেন পিএইচডি। এ সময় তিনি কঠিন বস্তুর মধ্যে ইলেকট্রনের চারটি কোয়ান্টাম সংখ্যা বের করার কৌশল খুঁজে পান। পরে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমন্ত্রণ পান পড়ানোর। সেখানে এখন পর্যন্ত ২০-এর বেশি শিক্ষার্থী তাঁর তত্ত্বাবধানে পিএইচডি করেছে।
২০২৪ সালে তিনি কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানের এক নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছেন। একদল বিজ্ঞানীকে সঙ্গে নিয়ে তুলনামূলক উচ্চ তাপমাত্রায় আরোনোভ-বোম ইন্টারফিয়ারেন্স ব্যবহার করে কোয়ান্টাম প্রভাব পর্যবেক্ষণ করেছেন তাঁরা। এটি ভবিষ্যতের বিভিন্ন প্রযুক্তি, যেমন উচ্চ গতির দ্রুততর কম্পিউটার ও অতি সুরক্ষিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বড় ভূমিকা রাখবে। তিনি একাধারে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের ইউজিন হিগিনস অধ্যাপক, রবার্ট এইচ ডিক ফেলো, ইউসি বার্কলির ভিজিটিং মিলার প্রফেসর এবং লরেন্স বার্কলি ন্যাশনাল ল্যাবের ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি সায়েন্টিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন। বাংলাদেশি এই গবেষক এবার এমআইটিতে যোগ দিলেন। এখন কোয়ান্টাম ম্যাটার ও কোয়ান্টাম টপোলজিতে নতুন ধরনের গবেষণার নেতৃত্ব দেবেন তিনি।